ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেশা যাদের পেশা ছাড়তে বাধ্য করে


গো নিউজ২৪ | বিনোদন প্রতিবেদক: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮, ০৯:৪০ পিএম
নেশা যাদের পেশা ছাড়তে বাধ্য করে

নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে পৌছে ছিলেন সফলতা শিখরে। তবে ভালবাসা-নেশা শুধু অভিনয়ের প্রতি। এমন অনেক তারকা আছেন যারা কিনা অভিনয়ের নেশায় নিজেদের ভালো পেশা ছেড়ে এসেছেন। তেমন কয়েকজন তারকার গল্প তুলে ধরা হলো...

হুমায়ূন আহমেদ: 
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রথম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী তোমাদের জন্য ভালোবাসা রচনা করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। লেখালেখিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় একসময় তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন৷ শিক্ষক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন এই অধ্যাপক৷ বাংলা সাহিত্যের এ বরপুত্র একটা সময়ে নাটক সিনেমাতেও ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়। 

বুলবুল আহমেদ: 
পড়াশোনা করেছেন ঢাকার কলেজিয়েট স্কুল, নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রজীবনে তিনি জড়িত ছিলেন মঞ্চাভিনয়ে। পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি চাকরি জীবন শুরু করেন তৎকালীন ইউবিএল ব্যাংক টিএসসি শাখার ম্যানেজার হিসেবে। অভিনয়ের চাপে একটা সময় সে চাকরি ছেড়ে দেন। ৪৪ বছরের শিল্পী জীবনে বুলবুল আহমেদ প্রায় ৩০০ নাটক আর দুই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেন। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে চার বার তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

আবুল হায়াত: 
পেশায় অভিনেতা হলেও তিনি কিন্তু একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার(পুরকৌশলী)। বুয়েট থেকে ১৯৬৭ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ১৯৬৮ সালেই ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী পদে যোগ দেন। 

১৯৬৯ সালে ‘ইডিপাস’ নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো টিভি স্ক্রিনে তার অভিনয়ের অভিষেক ঘটে। তারপর থেকে টিভি নাটকে, সিনেমায় আর বিজ্ঞাপনে সফলতার সাথে অভিনয় করে আসছেন। জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ রচিত প্রচুর নাটকে তিনি অংশ নিয়েছেন। ‘মিসির আলি’ চরিত্রে অভিনয়টি তার বিশেষ কাজ। তিনি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন একটা সময়। প্রথম আলো পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন তিনি । নাম, ‘এসো নীপবনে’। ১৯৯১ সালে বইমেলায় তার প্রথম বই ‘আপ্লুত মরু’ প্রকাশিত হয়। এরপর আরো বেশ কিছু বই তিনি রচনা করেছেন। এবারের বইমেলাতেও তার বই প্রকাশ হয়েছে।

খলিল উল্লাহ খান খলিল : 
১৯৫১ সালে আর্মি কমিশনে যোগ দিয়ে কোয়েটাতে চলে যান। ১৯৫২ সালে ফিরে এসে আনসার এডজুট্যান্ট হিসেবে যোগ দেন। দীর্ঘদিন সাসপেন্ড থাকার পর তা উইড্র হয় ১৯৭৭ সালে। ১৯৯২ সালে বয়সের কারণে রিটায়ার করেন আনসার ডিপার্টমেন্ট থেকে।

১৯৫৯ সালে ‘সোনার কাজল’ ছবিতে প্রথম অভিনয় শুরু করেন। সিনেমায় আসার আগে বেশ কয়েকটি নাটকেও অভিনয় করেন। ‘সোনার কাজল’ ছবির পরিচালক ছিলেন জহির রায়হান ও কলিম শরাফি। নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। নায়িকা ছিলেন সুমিতা দেবী ও সুলতানা জামান।

দিলারা জামান: 
টিভি পর্দায় মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি পেয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন তিনি শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চট্টগ্রাম ও ঢাকার অনেক স্কুলে তিনি শিক্ষকতা করেছেন। সর্বশেষ তিনি অধ্যক্ষ ছিলেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের। সেখান থেকে অবসর নেন। অভিনয়ে নিয়মিত হন। 

ইডেন কলেজে পড়ার সময়ে তিনি ছিলেন ছাত্রী সংসদের সাহিত্য সম্পাদিকা, ভিপি ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। তিনি বেশ কিছু আন্দোলনেও সক্রিয় সদস্য ছিলেন। ১৯৬৫ থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশী দিলারা জামানের অভিনয় জীবনের বয়স। দিলারা জামানের স্বামী ফখরুজ্জামান চৌধুরী একজন সাবেক সরকারি আমলা, সুপরিচিত কলামিস্ট ছিলেন।

হানিফ সংকেত: 
আশির দশক থেকে শুরু করে প্রায় দুই যুগ ধরে তিনি বাংলাদেশের জনগনকে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন। একাধারে তিনি উপস্থাপক, পরিচালক, লেখক ও প্রযোজক। তিনি একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। অন্যত্র কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে শোবিজের টানে চাকরি ছেড়ে দেন। 

ফজলুর রহমান বাবু: 
মঞ্চ নাটকের সঙ্গে অনেকদিন আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৩ সালে অগ্রণী ব্যাংকে যোগদান করেন এবং তার কর্মস্থল ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়। ঢাকায় চলে আসার পর তিনি মামুনুর রশীদের ‘আরণ্যক নাট্যদল’ মঞ্চ দলে যোগ দেন। ১৯৯১ সালে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। তার প্রথম সিনেমা দ্বারুচীনি দ্বীপ।

রিয়াজ: 
ঢাকায় এসেছিলেন বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার কোচিং করতে, বিমানবাহিনীর জুনিয়র কমিশন অফিসারের পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পেয়ে গেলেন সেখানে। বিমানবাহিনীতে শুরুটা হয়েছিল দারুণ। তুরস্কে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, দেশে ফিরে পেয়েছিলেন কমিশন। সেটা নব্বই দশকের গোড়ার দিকের কথা। 

কিন্ত মন টিকলো না সেখানে, ছেড়ে এলেন ইউনিফর্ম আর ক্যান্টনমেন্টের জীবন। এরমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি(অনার্স) ডিগ্রি নেয়া হয়ে গেছে তার। চাকুরী ছাড়ার পরে কি করবেন ভাবছিলেন, এমনই সময়ে একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে নতুন একটা দিগন্ত উন্মোচিত হয়ে গেল তার সামনে।

রিয়াজের চাচাতো বোন ছিলেন বিখ্যাত অভিনেত্রী ববিতা। বোনের সঙ্গে একদিন এফডিসিতে গিয়েছিলেন, ববিতা তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন চিত্রনায়ক (প্রয়াত) জসিমের সঙ্গে। জসিমের খুব পছন্দ হলো, তিনি তখন ‘বাংলার নায়ক’ নামে একটা সিনেমার কাজ শুরু করতে যাচ্ছিলেন, সেটাতেই নিয়ে নিলেন রিয়াজকে।

হাসান মাসুদ: 
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯২ সালে অধিনায়ক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।  তিনি নিউ নেশনম এবং পরবর্তীতে ডেইলি স্টারে ক্রীড়া প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। বিবিসির বাংলাদেশের প্রতিবেদক হিসেবে কমর্রত ছিলেন কিছুদিন। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পচিালিত ব্যাচেলর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে তার পথচলা শুরু হয়। পরবর্তীতে তিনি মেড ইন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র এবং অনেক নাটকে অভিনয় করেন। তার প্রথম সঙ্গীত অ্যালবাম হৃদয়ঘটিত ২০০৬ সালে প্রকাশ পায়।

মাহফুজ আহমেদ:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনাকালীন বিনোদন পাতায় লিখতেন, সেই সুবাদে ইমদাদুল হক মিলনের পরামর্শে জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘কোন কাননের ফুল’ এ ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করার মধ্য দিয়ে টিভি নাটকে নাম লিখান। এরপর হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত ধারাবাহিক ‘কোথাও কেউ নেই’ -এ বাকের ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়া মতি চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান। 

নব্বই দশকে অনেক জনপ্রিয় অভিনেতার ভিড়ে তিনি মূলত পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করতেন,তবে শেষের দিকে ‘সবুজ ছায়া’ ধারাবাহিকে অভিনয় করে বেশ আলোচিত হন, ততদিনে তিনি হয়ে উঠেন হুমায়ূন আহমেদের আস্থাভাজন অভিনেতা।

গো নিউজ২৪/জাবু

বিনোদন বিভাগের আরো খবর
বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী