প্রিয় শিক্ষার্থীরা আজ থাকছে তোমাদের জন্য উৎপাদন ব্যয় বিবরণী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
শুরুতেই জেনে নেওয়া যাক উৎপাদন ব্যয় বিবরণী কি বা কাকে বলে?
যে বিবরণীর মাধ্যমে কোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্যের মোট ব্যয় নির্ণয় করে তার সাথে প্রত্যাশিত মুনাফা যোগ করে বিক্রয় মূল্য নির্ধারন করে তাকে উৎপাদন ব্যয় বিবরণী বলে।
মনে রাখতে হবে শুধু মাত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উৎপাদন ব্যয় বিবরণী তৈরি করে।
উৎপাদনের সাথে জড়িত ব্যয় সমূহকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় ।
যথা ১) কাঁচামাল ২) শ্রম ৩) আরোপনযোগ্য খরচ ।
কাঁচামাল : পন্য উৎপাদন করার জন্য যে দ্রব্য টি আবশ্যক তাকে কাঁচামাল বলে। যেমন জুতা তৈরির জন্য চামড়া, সুতা, কালি। জামা তৈরির জন্য কাপড়, সুতা, বোতাম ইত্যাদি।
কাঁচামাল ২ প্রকার যথা
১) প্রত্যক্ষ কাঁচামাল: যে সকল কাঁচামাল তৈরি কৃত পন্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয় তাকে প্রত্যক্ষ কাঁচামাল বলে। যেমন জুতা তৈরির জন্য চামড়া।কাপড় তৈরির জন্য সুতা ইত্যাদি।
২) পরোক্ষ কাঁচামাল: যে সকল কাঁচামাল তৈরি কৃত পন্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত না তাকে পরোক্ষ কাঁচামাল বলে। যেমন জুতা তৈরির জন্য ফিতা ।
শ্রম ২ প্রকার যথাঃ
১) প্রত্যক্ষ শ্রম : কোন দ্রব্য উৎপাদন করতে সরাসরি যে শ্রম জড়িত থাকে তাকে প্রত্যক্ষ শ্রম বলে। যেমন কাপড় বয়নের মজুরি। আসবাবপত্র তৈরির মিস্ত্রি খরচ।
২) পরোক্ষ শ্রম : কোন দ্রব্য উৎপাদন করতে সরাসরি যে শ্রম জড়িত থাকে না তাকে পরোক্ষ শ্রম বলে। যেমন আসবাবপত্র তৈরির কারখানার দারোয়ানের বেতন ।
আরোপনযোগ্য খরচ ২ প্রকারঃ
১) প্রত্যক্ষ খরচ : যে খরচগুলো পন্যের সাথে সরাসরি চিহ্নিত করা যায় তাকে প্রত্যক্ষ খরচ বলে।যেমন দালান নির্মানের কংক্রিট মিক্সারের ভাড়া । জুতা তৈরির জন্য ফর্মা ।
২) পরোক্ষ খরচ : যে খরচ গুলো পন্যের সাথে সরাসরি চিহ্নিত করা যায় না তাকে পরোক্ষ খরচ বলে।
পরোক্ষ খরচ ৩ প্রকারঃ
ক) কারখানা উপরিব্যয় : কারখানায় প্রত্যক্ষ কাঁচামাল ও প্রত্যক্ষ মজুরি ছাড়া যাবতীয় পরোক্ষ খরচকে কারখানা উপরিব্যয় বলে। যেমন :কারখানা ভাড়া ,কারখানা বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি ।
খ) প্রশাসনিক উপরিব্যয় : অফিস ও প্রশাসন সংক্রান্ত খরচকে প্রশাসনিক উপরিব্যয় বলে। যেমন অফিস ভাড়া , টেলিফোন বিল।
গ) বিক্রয় উপরিব্যয় : তৈরি কৃত পন্য বিক্রয়ের জন্য যে খরচ হয় তাকে বিক্রয় ও বিতরন খরচ বলে । যেমন -বিক্রয় ম্যনেজারের বেতন, শোরুমের ভাড়া, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি।
প্রয়োজনীয় সূত্রাবলী :
১) মূখ্য ব্যয় = প্রত্যক্ষ কাঁচামাল + প্রত্যক্ষ মজুরি + প্রত্যক্ষ খরচ।
২) উৎপাদন ব্যয় = মূখ্য ব্যয় + কারখানা উপরিব্যয়।
৩) রুপান্তর ব্যয় = প্রত্যক্ষ শ্রম + কারখানা উপরিব্যয়।
৪) মোট ব্যয় = উৎপাদন ব্যয় + প্রশাসনিক উপরিব্যয় + বিক্রয় উপরি ব্যয়।
৫) বিক্রয় মূল্য = মোট ব্যয় + প্রত্যাশিত মুনাফা।
গোনিউজ২৪/এমএএস