ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বেগুনের কেজি ২ টাকা, কাঁকরোল ৩ টাকা


গো নিউজ২৪ | বানিজ্য প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২১, ১০:১২ এএম আপডেট: জুলাই ২৭, ২০২১, ১০:১৫ এএম
বেগুনের কেজি ২ টাকা, কাঁকরোল ৩ টাকা

ঈদের চার দিন পর রংপুরে পাইকারি ও খুচরা বাজারে সবজির দামে ধস নেমেছে। বিক্রেতা আছে, কিন্তু ক্রেতা কম। বলদিপুকুরে সবজির পাইকারি বাজারে বেগুন ২ টাকা কেজি, কাঁকরোল ৩ টাকা, বরবটি ৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এমন দরপতনে সবজিচাষিদের মাথায় হাত।

দেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। বিধিনিষেধের তৃতীয় দিন গতকাল রোববার সকালে সবজিখ্যাত রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বলদিপুকুর ও শহরের সিটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বলদিপুকুরে সবজির পাইকারি বাজারে ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। চাষিরা সবজি নিয়ে বসে আছেন। হাতে গোনা দু-চারজন পাইকারি ব্যবসায়ীকে সবজি কিনতে দেখা যায়। ঈদের পর সবজিসহ নিত্যপণ্য কিনতে বাজারে ক্রেতাদের ভিড় নেই।

গতকাল সকালে বলদিপুকুর সবজির পাইকারি বাজার ঘুরে প্রতি কেজি বেগুন ২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। অথচ ঈদের আগেও বেগুন প্রতি কেজি ১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছিল ৩ টাকা কেজিতে। অথচ ১০ দিন আগেও কাঁকরোল ১০ থেকে ১২ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। বরবটির কেজি গতকাল ছিল ৭ টাকা। ঈদের আগে একই বরবটি বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকা কেজি দরে। নগরের কামালকাছনা, মুলাটোল ও ধাপ বাজার ঘুরেও সবজির দামের একই চিত্র দেখা গেল।

বলদিপুকুর এলাকার সবজিচাষি শফিয়ার রহমান এ বছর প্রায় দেড় একর জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করেছেন। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে তিনি এই পাইকারি বাজারে সবজি বিক্রি করে কিছুটা লাভবান হয়েছেন। কিন্তু ঈদের পরে এসে তাঁর মাথায় হাত। তিনি বলেন, ‘খেতের বেগুন ১০ দিন আগোত বেচানু (বিক্রি) ১০ টাকা কেজি করি। সেই বেগুন এলা কাওয়ো (কেউ) নেয় না। পাইকারেরা বেগুন থাকি মুখ ফিরি নেয়। উপায় না পায়া আইজ (আজ) ২ টাকা কেজি করি ৫ মণ বেগুন বেচে দিনু।’

একই এলাকার নজরুল ইসলাম কাঁকরোল ও বরবটি চাষ করেছেন এক একরের বেশি জমিতে। তাঁর নিজের সামান্য ২০ শতাংশ জমি থাকলেও পুরোটাই বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেছেন। ঈদের কয়েক দিন আগে জমি থেকে সবজি তুলে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে আয় করেছেন। কিন্তু এখন এসে এ অবস্থা হবে, তা ভাবতেও পারেননি।

নজরুল ইসলাম বললেন, ‘কয়েক দিন আগোত (আগে) কাঁকরোলের কেজি বিক্রি করছি ১০-১২ টাকা। এলা পাইকারেরা দামে কয় না। খালি কয় সবজি নাকি রংপুরের বাজারোত বিক্রি হইতোছে না। এই কাঁকরোল বেচানো ৩ টাকা কেজি দরে। বরবটি আগোত বিক্রি করছি ১৫ টাকা কেজি, সেটা এলা বিক্রি করনো ৭ টাকা কেজি।’

এদিকে সবজিচাষি ও এলাকাবাসী জানান, এ সময় এখানে সবজির পাইকারি বাজারে ক্রেতাদের ভিড় থাকত। চাষিদের মুখে হাসি থাকত। ঈদের আগে বেচা–বিক্রিতে দাম ভালো পাওয়ায় চাষিদের মন ভালো ছিল। কিন্তু চাষিদের মুখের হাসি ঈদের চার দিন পরে এসে ম্লান হয়ে গেছে।
বলদিপুকুর বাজারে কথা হয় পাইকারি ব্যবসায়ী রাশেদুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রংপুরের সিটি বাজারের পাইকারি আড়তে সবজির দাম নেই। সেখানেও ক্রেতা অনেক কমে গেছে। তাই সবজি কিনে কোথায় বিক্রি করব। দামও পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে আমরাও বেকায়দায় পড়েছি। তাই কম দামে কিনে অল্প কিছু লাভে শহরের সিটি বাজারে বিক্রি করছি।’

গতকাল দুপুরে রংপুর শহরের সিটি বাজার ঘুরে প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা কম দেখা গেছে। সবজির দাম কমার বিষয়ে সিটি বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিটি মানুষের ঘরে কোরবানির মাংস রয়েছে। আর সবজি ঈদের আগে ক্রেতারা যা কিনেছেন, তা এখনো তাঁদের ঘরে রয়ে গেছে। ফলে বাজারে সবজির চাহিদা কম। এ ছাড়া ঈদের দুদিন দোকান বন্ধ থাকার পর এখন একই সঙ্গে সব দোকান খুলে গেছে এবং বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়ে গেছে। এ কারণে সবজির দাম কমেছে। শুধু বেগুন, কাঁকরোল, বরবটি, করলা নয়; কচু, পেঁপে, মিষ্টিকুমড়া, ঝিঙে, পটোলের দামও কেজিতে ১০ টাকা কমে গেছে।

তবে মাছের বাজার চড়া বলে সিটি বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। কদিন আগে কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা কেজিতে। গতকাল কাতলা ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ২৩০ টাকা কেজির রুই ২৪০ থেকে ২৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১৮০ টাকা কেজির মৃগেল ২০০ টাকায়, ১২০ টাকা কেজির সিলভার কার্প ১৪০ টাকা, ১৩০ টাকা কেজির তেলাপিয়া ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

-প্রথম আলো

অর্থনীতি বিভাগের আরো খবর
৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?