ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরার আম রফতানি হচ্ছে ইউরোপের বাজারে


গো নিউজ২৪ | এম শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ১৯, ২০১৮, ০৭:৩৪ পিএম
সাতক্ষীরার আম রফতানি হচ্ছে ইউরোপের বাজারে

চতুর্থবারের মতো ইউরোপের বাজারে সাতক্ষীরার আম রফতানি শুরু হয়েছে। শনিবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ধুলিহর গ্রামের আমচাষি জাহাঙ্গীরের বাগান থেকে হিমসাগর আম রফতানির মধ্যদিয়ে রফতানি মৌসুম শুরু হয়।

দুপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন প্রধান অতিথি হিসেবে আম রফতানি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

সাতক্ষীরায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহযোগ্য বালাইমুক্ত নিরাপদ আম উৎপাদন ও বিপণন শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে সদর উপজেলা পরিষদে এ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক ইফতেখার হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকাস্থ খামারববাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিবিদ ড. মো আজহার আলী, খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক নিত্য রঞ্জন বিশ্বাস, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান,  সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু প্রমুখ।

চলতি মৌসুমে আমচাষি জাহাঙ্গীরের বাগান থেকে চার মেট্রিক টন আম রফতানির মধ্য দিয়ে জেলার আম রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়। এসব আম যাবে ফ্রান্স, ইতালি, যুক্তরাজ্য ও স্পেনে। তাই রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জকে পেছনে ফেলে রফতানির বাজারে বিশেষ গুরুত্ব পায় সাতক্ষীরার ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালি আম।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় সাতটি উপজেলায় চলতি বছরে প্রাায় চার হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১১৯৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়া উপজেলায় ৬০২ হেক্টর, তালা উপজেলায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটা উপজেলায় ৩৬৮ হেক্টর, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনি উপজেলায় ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।

এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে আমের বাগন রয়েছে ১৫৩০টি, কলারোয়ায় ১৩১০টি, তালায় ১৪৫০টি, দেবহাটায় ৪৭৫টি, কালিগঞ্জে ১৪২টি, আশাশুনিতে ১৯০টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০টি আমের বাগান রয়েছে।

এ জেলায় গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাইসহ নানা জাতের আম বাগান রয়েছে। আমের পরিচর্যার জন্য নানামুখী কর্মযজ্ঞে মেতে উঠেছে জেলার শত শত মৌসুমী শ্রমিক। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ১০০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রফতানি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বছর যার পরিমাণ ছিল ৭০০ মেট্রিক টন।

কলারোয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মনিরুল ইসলাম জানান, গত বছর কলারোয়া উপজেলা থেকে ৪০ মেট্রিকটন আম বিদেশে রপ্তানী হয়েছিল। যা অন্যান্য উপজেলার চেয়ে বেশী। এবার এ উপজেলা থেকে ৮০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানী করা হবে তিনি আরো জানান। এ উপজেলায় আমের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজার বাউড়ি বেলতলা ও সিংগা বাজার।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, কলারোয়ার সিংগা আমবাজারে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম বাজারজাত করণের লক্ষে আমের পাইকারী বাজার বসেছে। এই বাজারের আমে কোন কেমিক্যাল মেশানো হয় না বলে তারা জানিয়েছেন।

উপজেলার সিংড়া বাজার আম ব্যবমসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কেরালকাতা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ জানান, এখানকার পাইকারী বাজার থেকে আম কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীরা এখানে অবস্থান করছেন। তিনি আরো জানান, চাপাইনবাবগঞ্জের কানসাট, রাজশাহী, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আম ব্যবসায়ীরা বর্তমানে এখানে অবস্থান করছেন। এখানকার আম ইউরোপেও রপ্তানি হচ্ছে।

কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন জানান, কলারোয়া উপজেলায় এবার আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এই আমে যাতে কোন কেমিক্যাল মেশানো হয় না হয় সেজন্য আম চাষীদের নিয়ে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফায় হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, আম ব্যবসায়ী ও আম চাষিদের আরও বেশি প্রশিক্ষণ ও ব্যাংক ঋণের সুবিধা দিলে তারা আরও ভালোভাবে আম চাষ ও আমের ব্যবসার প্রসার বাড়িয়ে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচারক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, গত চার বছর ধরে এ জেলার আম ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলায় ৪ হাজার ১ ’শ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার মেট্রিকটন আম এবারও ইউরোপের বাজারে রপ্তানী হবে।

 

গো নিউজ২৪/আই

অর্থনীতি বিভাগের আরো খবর
৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?