ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোজার আগেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম


গো নিউজ২৪ | মিজানুর রহমান প্রকাশিত: মে ৯, ২০১৮, ১১:২৭ এএম
রোজার আগেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

রমজানের বাকি আরও এক সপ্তাহ কিন্তু তার আগেই বাড়তে শুরু করছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়বে না ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এমন আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। সরকারের পক্ষ থেকেও ভোক্তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। কিন্তু রমজান শুরুর আগে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম।

সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবেই গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, রসুন ও শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে। আর গত দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি চিনির দাম বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা। অথচ রমজান উপলক্ষে এবার চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি নিত্যপণ্যের মজুদ রয়েছে। পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার আগে যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় হতাশ ভোক্তারা।

এদিকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি রোধে মাঠে নামছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি মনিটর করবে তারা। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ১৪টি টিম বাজারে নজরদারি করবে। রমজানে কারসাজি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ালে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

 বুধবার রাজধানীর কাওরানবাজারসহ বিভিন্ন বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ, রসুন, চিনি ও শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে। মিল থেকে চাহিদামতো চিনির সরবরাহ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এজন্য চিনির দাম বাড়তির দিকে। গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, পাইকারি বাজারে চিনির দাম বেড়েছে। দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি বস্তা চিনিতে ২৫০ টাকা বেড়েছে । দুই দিন আগে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চিনির দাম ছিল ২ হাজার ৫৫০ টাকা। আর এখন ২ হাজার ৮শ’ টাকা।

গতকাল টিসিবির হিসাবে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে দেশি ও আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম ছিল যথাক্রমে ৩৮ থেকে ৪৫ টাকা ও ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। গত এক মাস ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম বাড়ছে। এছাড়া প্রতি কেজি শুকনা মরিচের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৭০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। দেশি রসুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও আমদানিকৃত রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রমজানে মূলত ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রতি বছর রমজানে ভোজ্যতেলের চাহিদা থাকে আড়াই লাখ টন, চিনি ৩ লাখ টন, ছোলা ৮০ হাজার টন, খেজুর ১৮ হাজার টন এবং পেঁয়াজ ৪ লাখ টন। কিন্তু বর্তমানে দেশে ভোজ্যতেলের মজুদ রয়েছে ২২ দশমিক ৫৯ লাখ টন, চিনি ৪ দশমিক ৩৫ লাখ টন, ছোলা ৭ লাখ ৪৬ হাজার টন, খেজুর ৬৪ হাজার টন ও পেঁয়াজ ১৭ দশমিক ৯১ লাখ টন। গত মার্চ পর্যন্ত এলসি খোলা ও নিষ্পত্তির হিসাব ধরে মজুতের এ হিসাব দেওয়া হয়েছে। এ হিসাবে দেশে চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি নিত্যপণ্যের মজুত রয়েছে।

এছাড়া বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারেও এসব পণ্যের দাম নিম্নমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম কেজিপ্রতি ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, ছোলা ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, খেজুর প্রতি কেজি ৭০ টাকা, চিনি ৩৮ থেকে ৪১ দশমিক ৭৬ টাকা ও পেঁয়াজের দাম ১৮ টাকা ৬৫ পয়সা থেকে ২০ টাকার মধ্যে উঠানামা করছে। পেঁয়াজ আমদানির প্রধান উত্স ভারতের বাজারে কোনো অস্থিরতা নেই। দেশে উত্পাদনও হয়েছে পর্যাপ্ত। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

এই প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সভাপতি গোলাম রহমান বলছেন, রমজানে পণ্য কেনার ব্যাপারে ক্রেতাদের আরও সহনশীল হওয়া জরুরি।

এদিকে, আসছে রমজানে অনৈতিকভাবে দাম বাড়ানোর চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

গো নিউজ২৪/এমআর

অর্থনীতি বিভাগের আরো খবর
৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

বাজারে এখন টাকা ও ডলার উভয় মুদ্রার সংকট, অদল-বদল নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

বাজারে এখন টাকা ও ডলার উভয় মুদ্রার সংকট, অদল-বদল নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

ইসলামী ব্যাংকসহ ৮টি ব্যাংকের কারণে ঘাটতিতে পুরো ব্যাংক খাত

ইসলামী ব্যাংকসহ ৮টি ব্যাংকের কারণে ঘাটতিতে পুরো ব্যাংক খাত

হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিয়ে বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে জনপ্রতি ৫০ টাকা আয়করের প্রস্তাব

হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিয়ে বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে জনপ্রতি ৫০ টাকা আয়করের প্রস্তাব

ব্যাংক পরিচালকদের সভায় অংশগ্রহণকারীদের সম্মানী মাসে ৫০ হাজার টাকা

ব্যাংক পরিচালকদের সভায় অংশগ্রহণকারীদের সম্মানী মাসে ৫০ হাজার টাকা