গেলো কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীর চালবাজারে নেই স্বস্তি। সপ্তাহ ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে কেজিতে এক থেকে দুই টাকা। প্রায় সব ধরনের চালই এখন বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। খুব শিগগির বাজারে স্বস্তি ফেরারও কোনো সুখবর নেই পাইকারদের কাছে।
তবে বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি মিল পর্যায়ে মনিটরিং করলেই বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে বলে মনে করেন পাইকারা।
আড়তদারদের অতি মুনাফা আর বাড়তি মজুতদারির কারণেই চালের দাম কমছে না বলে দাবি পাইকারদের।
পাইকারদের তথ্য মতে, যে মিনিকেট গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার টাকা বস্তা (৫০ কেজি)।আজ সেটা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬৫ টাকা। যেটা ২৫০০ টাকা বিক্রি হয়েছে গত সপ্তাহে, চলতি সপ্তাহে তা ২৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তারা বলছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে অটোরাইস মিলের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ফলে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে মালিকদের। এতে ধানের দাম বেশি পড়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে চালের বাজারেও।
অবশ্য, সরকার বলছে কৃষকদের সুবিধার জন্য বাজারে চালের দাম কিছুটা বাড়তি রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে তা আরও একবার স্পষ্ট করেছেন।
চালের দাম কমানোর ক্ষেত্রে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কৃষকদের সুবিধা দিতে চালের দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। যাতে কৃষকরা তাদের খরচ উঠাতে পারেন।তবে দাম বাড়াতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটও কাজ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
হঠাৎ বন্যায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ২০১৭ সালে দেশের বাজারে কয়েক দফা চালের দাম বৃদ্ধি পায়। মাঝে কিছুটা স্থিতিশীল ছিল।
সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, বাজারে এখন চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৭০ টাকায়। গেলো সপ্তাহে যা ছিল ৫৮ থেকে ৬৮ টাকা।
সাধারণ মানের নাজির ও মিনিকেট চালে কোনো পরিবর্তন না হলেও এ ধরণের ভালো মানের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। গেলো সপ্তাহে এ ধরনের ভালো মানের চাল ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।
মাঝারি ও পাইজাম শ্রেণির চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে এ সপ্তাহে বেড়েছে মোটা চালের দামও। গতকাল শুক্রবার মোটা চালের দাম কেজিতে এক টাকা বেড়ে ৪৭ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা।
এদিকে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, আগামী মার্চ মাস থেকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচি আবার শুরু হচ্ছে। এই কর্মসূচির আওতায় অতি দরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়।
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল এই পাঁচ মাস ১০ টাকা কেজিতে চাল পান দরিদ্ররা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ায় গত বছরের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। সেই অবস্থা থেকে বের হয়ে এসেছি। চলতি বছরের মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এ কার্যক্রম আবার শুরু হবে এবং ভবিষ্যতেও তা চলবে।
গো নিউজ২৪/এমআর