ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থমন্ত্রীর অবসর ঘোষণার কারণ কী?


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮, ১১:২৩ এএম
অর্থমন্ত্রীর অবসর ঘোষণার কারণ কী?

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান আবুল মাল আবদুল মুহিত। এই দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের ব্যাংক খাতে নানা কেলেঙ্কারি হয়েছে। ব্যাংক খাতের কেলেঙ্কারি ও অর্থমন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্যের জেরে তাকে ওই মন্ত্রণালয় থেকে সরে যাওয়ার দাবি উঠেছে একাধিকবার।

সর্বশেষ সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী গত শুক্রবার অর্থমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাজের সমালোচনা করে তাঁদের নিরাপদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

অর্থমন্ত্রী দেশের অর্থনীতিকে ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছেন অভিযোগ করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘উনি মনে করেন, ব্যাংকের দায়িত্ব ব্যাংকারদের, চুরি করলে চোরের দায়িত্ব। আপনি ফিন্যান্স মিনিস্টার, একদিন যদি আপনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়...অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি হয়ে যায়।’ অর্থমন্ত্রীর স্টুপিড ও রাবিশের মতো ভাষা ব্যবহারের সমালোচনা করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘এক সময় ব্রাইট স্টুডেন্ট ছিলেন। যে কোনো কারণে হোক তিনি প্রশাসন চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন। একটা ব্যাংকও ঠিকমতো চলে না, দেখতে পারেন নাই, ধরতে পারেন নাই, শাস্তি দিতে পারেন নাই, কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন নাই।’

তবে গতকাল শনিবার অগ্রণী ব্যাংকের বাৎসরিক ব্যবসা সম্মেলনের অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, বহুদিন এক জায়গায় থাকলে পচন আসে, সত্যিকার অর্থে জানি, আমি অবসরে যাচ্ছি। এ বছরের ডিসেম্বরেই অবসরে যাব। বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মনে হয় অবসর নিয়ে কোনো ধারণা নেই। তাকে উপদেশ দিতে চেয়েছিলাম, জীবনে একটা সময় আসে, তখন অবসরে যাওয়াই আমাদের জন্য ভালো। অবসরে যেভাবে থাকা যায়, সেভাবেই থাকা উচিত।’

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলোতে তুলনামূলক খেলাপি ঋণ বেশি। এটা কমানোর জন্য গ্রাহককে চিনতে হবে। তার ব্যবসা সম্পর্কে আগে জানতে হবে। যারা ব্যাংকের কর্মকর্তা আছেন তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট গ্রাহক ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন কি না।

কয়েক বছর ধরে অবসরে যাবেন নাকি আবার আরেক দফা দল থেকে নির্বাচন করবেন তা নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজেই বিভিন্ন রকম মন্তব্য করে যাচ্ছেন। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে আবার নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর জবাব দেবেন। এর আগে বলেছিলেন, তার আর প্রার্থী হওয়া বা রাজনীতিতে থাকার আগ্রহ নেই। তবে দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা যদি নির্বাচন করতে বলেন সে ক্ষেত্রে তিনি বিষয়টি নিয়ে ভাববেন।

২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের ৩০টিরও বেশি ব্যাংক এখন আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এসব কারণে দেশের ব্যাংক খাত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। ৪৮টি ব্যাংকের মধ্যে ১৩টির আর্থিক অবস্থা অতি ঝুঁকিপূর্ণ। ব্যাংকগুলোতে নামে-বেনামে ঋণের নামে অর্থ লোপাট করা হয়েছে।

জানা যায়, দেশে সরকারি-বেসরকারি-বিদেশি মিলে মোট ৫৭টি ব্যাংক রয়েছে। আর্থিক অবস্থার অবনতি হওয়া ১৩টি ব্যাংকের মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ব্যাংক আটটি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে- বাংলাদেশ কমার্স, ন্যাশনাল, ফারমার্স ও এনআরবি কমার্শিয়ালের পরিস্থিতি কয়েক বছর ধরে খারাপ। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের একাধিক ব্যাংকের মালিকানা বদল নিয়েও নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এবি ব্যাংক ইত্যাদি। ব্যাংক খাতে চলমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে আমানতকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সেগুলো চালু রাখতে হচ্ছে। অন্যদিকে বিদ্যমান বেসরকারি চালু ব্যাংকগুলো যেখানে ভালো চলছে না, সেখানে নতুন ব্যাংক অনুমোদনের তোড়জোড় চলছে।

গো নিউজ২৪/এমআর

অর্থনীতি বিভাগের আরো খবর
৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?