ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াশায় কোটি টাকার ক্ষতি পানচাষিদের


গো নিউজ২৪ | ইলিয়াস আরাফাত প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০১৮, ০৬:১১ পিএম আপডেট: জানুয়ারি ১৩, ২০১৮, ০৮:২২ এএম
কুয়াশায় কোটি টাকার ক্ষতি পানচাষিদের

গত কয়েকদিন থেকে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে পানের বাজারে ধ্বস নেমেছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে দেখা দিয়েছে পানে কালো দাগ ও পচন রোগ। এ কারণে  কয়েকদিনের ব্যবধানেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পান চাষিদের কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। পাশাপাশি লোকসানের মুখে পড়েছে স্থানীয় পান ব্যবসায়ীরা।

পানের পাতাই যেন সোনা। জেলায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে পান অতি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। রাজশাহীর সুস্বাদু পানের কদর সবসময়ই বেশি। কিন্তু ঠান্ডা ও খরা সহিষ্ণু নতুন জাতের উদ্ভাবন না হওয়ায় প্রতিবছরই আবহাওয়া জনিত কারণে গাছসহ পানে নানা রোগে আক্রমন করে থাকে। তবে চাষিদের পান গবেষণাগারের দাবির বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। প্রেক্ষিতে কান্ড পচা ও পাতা মরা রোগে চাষিদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।

বর্তমানে রাজশাহীর পানচাষিদের পোয়া ভারিই ছিল। কিন্তু হঠাৎ ঠান্ডার কালো মেঘ আঘাৎ করায় চারদিনের ব্যবধানে প্রকার ভেদে এক পোয়া (৩২ বিড়াই এক পোয়া এবং ৬৪ পানে এক বিড়া) বড় পানের দাম তিন হাজার থেকে থেকে নেমে ৮শ’ টাকা, মধ্যম পান প্রতি পোয়া ১৬শ’ থেকে নেমে ৫শ’ টাকা এবং ছোট পান প্রতি পোয়া ৫শ’ থেকে নেমে ৩ শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আবার বিভিন্ন মোকামে বাজার কমে যাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও সর্বশান্ত হয়েছে। মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি পানহাটের বড় ব্যবসায়ী ইসলাম আলী। তিনি গত রোববার ১২ লাখ টাকার পান ক্রয় করেন। মৌগাছি হাট থেকে সেদিনই তিনি দেশের ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, ঠাকুরগাঁ, নীলফামারীসহ বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করেন। তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে প্রচন্ড ঠান্ডায় পানের ওপর কালো দাগ পড়া ও পচে নস্ট হওয়ায় মাত্র ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তার মত আরো পান ব্যবসায়ী আতকার হোসেন ও আলতাব হোসেন জানান- রোববার হাটে দুজন মিলে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার পান কিনেছিলেন। নিলফামারী ও পীরগঞ্জে পাঠিয়ে মাত্র ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বছরে কোন মতেই এই লোকসান উঠানো সম্ভব নয়। ব্যবসায়ী ইসলাম আলী বলেন, ভাগ্য টলে গেছে। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে ১২ বছরের সাধনা ও রোজগার চোখের সামনে হারিয়ে গেল। ১২ লাখ টাকার পানে লোকসান হয়েছে সাড়ে ৮ লাখ টাকা।

২০০০ সালের পর থেকে মিষ্টি সুস্বাদু পানের জন্য খ্যাত পবা-মোহনপুরে-বাগমারা উপজেলায় পানের বরজে দেখা দেয় গোড়া পচা, শিকড় পচা ও পাতা ঝরা রোগ। এই তিন রোগের কারণে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন স্থানীয় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। দাগ ও পচা রোগ এখনো অব্যহতভাবেই ছড়াচ্ছে। ফলে লোকসান চাষিদের ভাবিয়ে তুলেছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে- জেলার পবা, মোহনপুর, বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর, চারঘাট এই ছয়টি উপজেলায় এবার ২ হাজার ১৯৬ হেক্টর (১৬ হাজার ৩৪০ বিঘা) জমিতে পানের আবাদ রয়েছে। যারমধ্যে পবায় ১০৫ হেক্টর, মোহনপুরে ৮৯০ হেক্টর, বাগমারায় ৬৬০ হেক্টর, দুর্গাপুরে ৪৭০ হেক্টর এবং পুঠিয়ায় ৭০ হেক্টর।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) দেব দুলাল ঢালী পানের রোগ-বালাই এবং একটি গবেষণাগার স্থাপন প্রশ্নে বলেন, এ ব্যাপারে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে। পানের রোগ-বালাই সম্পর্কে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, জীব মানেই পরিবেশের পরিবর্তনের সাথে সাথে রোগ বালায়ও আক্রমন করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক যত্ন নিলে আশানুরুপ ফল পাবেন চাষিরা। তিনি বলেন, পরিবেশের সাথে খাপখাওয়ানো যায় এমন নতুন জাত উদ্ভাবন হলে চাষিদের ভাল হতো। শেষে বলেন এখনো গবেষণাগার স্থাপনের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলেও জানান তিনি।

গোনিউজ২৪/কেআর

 

অর্থনীতি বিভাগের আরো খবর
৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?