ঢাকা শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪, ১৬ চৈত্র ১৪৩০

ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে তৃতীয় বিয়ে করলেন ৬৪ বছরের বর


গো নিউজ২৪ | বরিশাল প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২১, ০৮:০৩ এএম
ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে তৃতীয় বিয়ে করলেন ৬৪ বছরের বর

প্রথম স্ত্রীকে তালাক আর দ্বিতীয় স্ত্রী ট্রাকচাপায় নিহতের পর নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন ৬৪ বছরের বজলু খান। ১০ বছর আগে বকুল বেগমের স্বামী মারা যান। অবশেষে ধুমধামে বিয়ে করলেন তারা।

দীর্ঘদিন নিঃসঙ্গ বকুল বেগম আর বজলু খানকে এক করার চেষ্টা করছিলেন এলাকাবাসী। অবশেষে স্থানীয় তরুণদের উদ্যোগে তাদের চার হাত এক হলো। শনিবার (১৩ মার্চ) বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা এলাকার কালুখান সড়কে কনের বাসায় তাদের বিয়ে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বজলু খান কাঠমিস্ত্রির কাজ করেন। বরিশালের উজিরপুরের কালিহাতা গ্রামের বাসিন্দা। ৩০ বছর আগে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। প্রথম ঘরে দুই ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। পা‌রি‌বা‌রিক কলহে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে বরিশাল নগ‌রের সাগরদী দরগাহ বাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। ২০২০ সালে নগরীর ১ নম্বর সিঅ্যান্ডবি পুল এলাকায় ট্রাকচাপায় দ্বিতীয় স্ত্রী নিহত হন। দ্বিতীয় ঘরে তার কোনো সন্তান নেই। এরপর থেকে একা বসবাস করছিলেন।

অপরদিকে বকুল বেগমের (৫৮) বাবার নাম ইসমাইল আলী খান। ১০ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। তার ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর তারা মায়ের খোঁজখবর রাখেন না। কালুখান সড়ক এলাকায় বসবাস করেন তিনি। বিভিন্ন বাড়িতে কাজের পাশাপাশি ডিম বিক্রি করে জীবন চলছিল বকুল বেগমের।

তাদের নিঃসঙ্গ দেখে বিয়ে দেওয়ার প্রাথমিক আলোচনা করেন একই এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান মুন্না। তাদের সঙ্গে যোগ দেন এলাকার আরও কয়েকজন তরুণ।

উভয়ের সম্মতিতে বিয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করেন তরুণরা। পরে চাঁদা তুলে ৩০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। বর ও কনের নতুন পোশাক কেনা, অতিথি আপ্যায়নের জন্য বাজার সদাই, ঘোড়ার গাড়ি ও মাইক ভাড়া করাসহ বিয়ের যাবতীয় খরচ চাঁদার টাকায় মেটান তারা।

অনুষ্ঠানে বরসহ ৬০ জনকে আপ্যায়ন করা হয়। খাবারের মধ্যে ছিল পোলাও, রোস্ট, মাংস, ইলিশ মাছ এবং দই ও মিষ্টি। খাওয়া-দাওয়া শেষে বর ও কনেকে উপহার দিয়েছেন অতিথিরা।

সকালে কনেকে বিয়ের পোশাক পরিয়ে পারলারে সাজানো হয়। দুপুরে বরকে বহনকারী ঘোড়ার গাড়ি আসে কনের বাড়ি। সেখানে তাদের বিয়ে হয়। ওই এলাকার আব্দুল মান্নানের বাসায় বরপক্ষকে আপ্যায়ন করা হয়। শেষে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে কনেকে নিয়ে বাড়ি যান বর।

একই এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, তরুণ সমাজ একটি ভালো কাজ করেছেন। বৃদ্ধ বয়সে সবাই একটু সহযোগিতা চায় স্বজনদের। ওই বুড়োবুড়ির স্বজন থাকলেও কেউ পাশে নেই। শেষ জীবনে একটা গতি হলো। মরার আগে এক গ্লাস পানি মুখে তুলে দেওয়ার লোক হলো দুজনের। 

বর বজলু খান বলেন, বকুল আর আমার একই অবস্থা। একাকি বাস করতে হয়। এজন্য আমি ঘটক পাঠিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিই। সে রাজি হলে খান সড়কের তরুণরা চাঁদা তুলে বিয়ের আয়োজন করেন। আমি এবং বকুল ভীষণ খুশি। একসঙ্গে বাকি জীবনটা কাটাতে চাই।

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর
মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা