নড়াইলের লোহাগড়া থানা হেফাজতে শিহাব মল্লিক (২৮) নামে এক যুবককে চোখ বেঁধে ও পেছনে হাতকড়া পরিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে উপ পরিদর্শক (এসআই) নুরুস সালাম সিদ্দিকের বিরুদ্ধে।
নির্যাতনের শিকার শিহাব মল্লিককে ৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি লোহাগড়া পৌর এলাকার গোপীনাথপুর গ্রামের এনামুল মল্লিকের ছেলে।
এর আগে পারিবারিক বিরোধের জেরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ নভেম্বর (রোববার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিহাব মল্লিককে আটক করে থানা হেফাজতে আনা হয়। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টা থেকে পরের দিন (সোমবার) সকাল পর্যন্ত তার ওপর কয়েক দফা নির্যাতন চালানো হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় লোহাগড়া থানা পুলিশ।
চিকিৎসাধীন শিহাব মল্লিক সাংবাদিকদের জানান, ২ নভেম্বর (শনিবার) সকালে পারিবারিক বিরোধের জেরে ফুফাতো ভাই মনিরুল এবং খাইরুল মল্লিক যৌথভাবে তার বাবা এনামুল মল্লিকের ওপর চড়াও হয়। বিষয়টি নিয়ে তাদের বড় ভাই বদরুল মল্লিকের সঙ্গে শিহাব মল্লিকের বাকবিতণ্ডার এক পর্যায় শিহাব বদরুল মল্লিককে মারপিট করেন। এ ঘটনায় বদরুল মল্লিকের ছোট ভাই মনিরুল মল্লিক বাদী হয়ে শিহাব ও তার মা বিউটি বেগমকে আসামি করে শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে লোহাগড়া থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে এসআই নুরুস সালাম সিদ্দিকের ওপর। এ ঘটনায় পরদিন (রোববার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিহাব মল্লিককে গ্রেফতার করে থানায় নেওয়া হয়। খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন ছুটে যান সেখানে। তবে তাদের দেখা করা ও রাতের খাবার দিতে দেয়নি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
শিহাব মল্লিকের অভিযোগ, রোববার রাত সাড়ে এগারোটা ও সোমবার সকালে এসআই সিদ্দিক তাকে পেছনে হাতকড়া পরিয়ে চোখ বেঁধে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করেছেন। নির্যাতনের কারণে তিনি কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে শিহাবকে কিছুটা সুস্থ্য করে সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আদালত চত্বরে তার পরিবারের কাছে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন শিহাব। বৃহস্পতিবার শিহাব জামিনে মুক্ত হলে ওই দিন সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক কামরুল ইসলাম জানান, শিহাব মল্লিকের হাঁটুর উপর থেকে কোমর পর্যন্ত বেশ কালছে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া পিঠেও দাগ রয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অভিযুক্ত এসআই সিদ্দিক নির্য়াতনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তাকে গ্রেফতারের পরের দিনই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাররম হোসেনও নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সূত্র-বাংলানিউজ
গো নিউজ২৪/আই
