ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইনে নাম না থাকায় ভাতা বঞ্চিত মির্জাপুরের ৫ মুক্তিযোদ্ধা


গো নিউজ২৪ | শামসুল ইসলাম সহিদ, মির্জাপুর প্রতিনিধি: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ০৬:১৭ পিএম আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯, ১২:১৭ পিএম
অনলাইনে নাম না থাকায় ভাতা বঞ্চিত মির্জাপুরের ৫ মুক্তিযোদ্ধা

কল্যাণ ট্রাস্ট ও ইবি (ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট) নম্বর থাকা সত্ত্বেও অনলাইনে নাম না আসায় সম্মানী ভাতাসহ সকল প্রকার সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মির্জাপুর উপজেলার ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা। গত ৩ বছর ধরে ভাতার জন্য তারা আবেদন করলেও এখনো তাদের ভাগ্যে সম্মানী ভাতা মেলেনি।

মির্জাপুরের এই হতভাগ্য ৫ মুক্তিযোদ্ধা হলেন- উপজেলার কদিম দেওহাটা গ্রামের যোগেশ চন্দ্র সরকর (কল্যাণ ট্রাস্ট নং- ৫০১৫৭), নুতন কহেলা গ্রামের মো. দেলোয়ার হোসেন (কল্যাণ ট্রাস্ট নং-৫২২৫, ইবি নং- ৬৯৯), আটিয়া মামুদপুর গ্রামের মো নজরুল ইসলাম (কল্যাণ ট্রাস্ট নং ১৭৩৮, ইবি নং-১৩১৯/২০৬৩), জগত ভাররা গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক ( কল্যাণ ট্রাস্ট নং-১৭৪৬, ইবি নং- ১৬১৩) এবং কালামজানি গ্রামের প্রয়াত হাসান আলী (কল্যাণ ট্রাস্ট নং ৫১৭৭, ইবি নং ৭৪৭)।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সারা দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তোড়া ১ ও ২ নং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শেষে ১১ নং সেক্টরের ৪৫ এবং ৭ নং কোম্পানির অধীনে বিভিন্ন রণাঙ্গনে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন বীর এই মুক্তিযোদ্ধারা। যুদ্ধকালীন তাদের কোম্পানি কমান্ডার ও সহকারি কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন যথাক্রমে মঞ্জুর কাদের শাজাহান, টাঙ্গাইল-৭ আসনের বর্তমান সাংসদ মো. একাব্বর হোসেন, আজমত আলী ও আবুল হোসেন।

মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র সরকার জানান, স্বাধীনতার পরই সংসারের পুরো দায়িত্ব তার ওপর অর্পিত হয়। যে কারণে লাল মুক্তি বার্তা এবং গেজেটে নাম অন্তর্ভুক্ত হবার কোন খোঁজ রাখা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন জানান, স্বাধীনতার পর সংসারের অভাব-অনটন দূর করতে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। চাকরির সময় বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করার কারণে কখন লাল মুক্তি বার্তা কখন গেজেট হয়েছে তার কোন খোঁজ রাখা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

আটিয়া মামুদপুর গ্রামের হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম জানান, যুদ্ধ থেকে ফিরে যে এক খন্ড জমি ছিল তাই চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এছাড়া সমাজের কিছু দুষ্ট শ্রেণির লোকের ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় অনেকদিন গা ঢাকা দিয়েও থাকতে হয়েছে। সেজন্য কখন মুক্তিযোদ্ধাদের গেজেট হয়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।

একই কথা জানিয়েছেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকের স্ত্রী সাজেদা বেগম ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলীর ছেলে সালাম মিয়া।

হতভাগ্য এই মুক্তিযোদ্ধারা আরো জানান, তারা গত ২০১৫ সাল থেকে সম্মানী ভাতার জন্য আবেদন করে আসছেন। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন টেবিলেও তারা ঘোরফেরা করেছেন। কিন্তু অনলাইনে নাম না আসায় তাদের ভাগ্যে এখন পর্যন্ত সম্মানী ভাতা জোটেনি। 

মির্জাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক বিশ্বাস দুর্লভ চন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার ব্যাপারে টাঙ্গাইলের আগের জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু অনলাইনে নাম না আসায় তাদের নামে সম্মানী ভাতা বরাদ্দ সম্ভব হয়নি।

সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান আরজুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভারতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরই কেবল কল্যাণ ট্রাস্ট এবং ইবি নম্বর থাকে। 

একই কথা জানান টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক বীর প্রতীক।

এব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা ভাতা প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনলাইনে নাম না আসায় ৫ মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা না দেয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কল্যাণ ট্রাস্ট অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন।

গো নিউজ২৪/আই
 

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর
মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা