মির্জাপুর পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দু’তলা ভবনের সিঁড়ি ও সানসেটে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া সিঁড়ি ও দু’তলার ফ্লোরের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে।
সোমবার বিদ্যালয়টিতে সরেজমিন গিয়ে নির্মাণকাজের এই ত্রুটি দেখা যায়।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্র জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মির্জাপুর পৌরসভার ২৬নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’তলা ভবন নির্মাণ কাজের বরাদ্ধ দেয়া হয়। ভবনটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৫ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মির্জাপুরের মেসার্স হাজী ট্রেডার্স ভবনটি নির্মাণের কাজ পায়। গত বছর ২০ আগস্ট ঠিকাদার ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে।
অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নজরদারি না থাকায় ঠিকাদার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ভবনটিতে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার এবং সন্ধার পর ছাঁদ ঢালাইয়ের কাজ করেছেন। ভবনটির কাজ শেষ করা হলেও হস্তান্তর করার আগেই নবনির্মিত ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও সিঁড়ির পলেস্তারা খসে পড়ছে। এছাড়া জানালার পলেস্তারা খসে জানালা ধসে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী ফিরোজ মিয়া বলেন, নির্মাণ কাজের শ্রমিক স্থানীয় না হওয়ায় ঠিকাদারের ইচ্ছেমত কাজ করেছেন। সামান্য পতাকা স্ট্যান্ড সঠিক জায়গায় স্থাপনের কথা বললেও শ্রমিকরা তা করেননি।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তানিয়া রহমান ও রোকসানা আক্তার বলেন, নবনির্মিত ভবনটি হস্তান্তরের আগেই পলেস্তারা ও সিঁড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভবন ধসের ঘটনা ঘটায় বিদ্যালয়টিতে ক্লাস নিতে ভয় করছে।
মির্জাপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, ৩১ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে গেলে জুতার সাথে পলেস্তারা উঠে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ারা বেগম ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ দুলাল বলেন, ঠিকাদার নিন্মমানের কাজ করেছেন। বিদ্যালয়ের নবনির্মিত সিঁড়ি ভেঙ্গে পড়েছে, দু’তলার জানালা খসে পড়েছে। এছাড়া দু’তলার ছাদের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে।
মেসার্স হাজী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মনিরুজ্জামান বলেন, ভবনটি নির্মাণে অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়নি। সঠিকভাবেই কাজ সমাপ্ত হয়েছে। সিঁড়ি, দু’তলার ফ্লোর ও জানালায় কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে। হস্তান্তরের আগেই সংস্কার করা হবে বলে তিনি জানান।
বিদ্যালয়ের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারি প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দিন বলেন, ভবনটি নির্মাণে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারকে দ্রুত সংস্কার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৗশলী মো. আরিফুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, অনিয়মের বিষয়টি জানা নেই। তবে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গো নিউজ২৪/আই