ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ইনজেকশন-টিনজেকশন মার, নাইলে শান্তি হইতো না (অডিও)


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৮, ০৮:০৪ পিএম
ইনজেকশন-টিনজেকশন মার, নাইলে শান্তি হইতো না (অডিও)

ঘন ঘন হেচকি দিচ্ছিল ৪০ দিন বয়সী এক শিশু। এতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন দরিদ্র মা। নিয়ে যান নবজাতক ও শিশু-কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। চিকিৎসক দেখে বুঝতে পারেন, শিশুটির অবস্থা ভালো। কিন্তু মায়ের কাছে মিথ্যা কথা বলে দাবি করেন, শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে দ্রুত পরিচিত অন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

রাতে মা তার আদরের শিশুটিকে নিয়ে যান পাশের জেলার হাসপাতালে। কথা বলিয়ে দেন, পরিচিত চিকিৎসকের। দুই চিকিৎসক হাসতে হাসতে মুঠোফোনে কথা বলেন। দুজনই জানান, শিশুটির অবস্থা ভালো। কিন্তু শিশুটিকে অহেতুক হাসপাতালে ভর্তি রেখে ইনজেকশন-টিনজেকশন মারার পরামর্শ দেন প্রথম চিকিৎসক।

এই দুই চিকিৎসকের মুঠোফোনের কথোপকথন ফাঁস হয়েছে। তাদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে পরের দিন সকালেই হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি চলে যান শিশুটির মা।

ভুক্তভোগী শিশুটির নাম ইসমত নাহার জিবা। সে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের ফুলতলী বাজার এলাকার বাসিন্দা প্রাণ কোম্পানির শ্রমিক রুবেল মিয়া ও শিরিন আক্তারের মেয়ে। 

গত মাসের শেষের দিকে ৪০ দিন বয়সী ইসমত ঘনঘন হেচকি দিচ্ছিল। কোনো সমস্যা হলো কি না জানতে গত ৩১ আগস্ট সকালে ইসমতকে নিয়ে অরবিট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এ এইচ এম খায়রুল বাশারের কাছে যান মা শিরিন আক্তার।  সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালট্যান্ট নবজাতক ও শিশু-কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এ এইচ এম খায়রুল বাশার এক যুগ ধরে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজারের অরবিট হাসপাতালে রোগী দেখেন।

শিরিন আক্তার জানান, ডা. বাশার ৫০০ টাকা ভিজিট রেখে কিছু ওষুধ লিখে দেন। সেই সঙ্গে পরের দিন শিশুর অবস্থা জানাতে যোগাযোগ করতে বলেন। পরের দিন ১ সেপ্টেম্বর শিশুটির অবস্থা পরিবর্তন না হওয়ায় ডা. বাশারকে ফোন করে জানানো হয়। এ সময় শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান চিকিৎসক। টাকার দিকে না তাকিয়ে দ্রুত শিশুকে মৌলভীবাজারের মামুন প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে সেখানকার চিকিৎসক ডা. বিশ্বজিৎ দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে ডা. বিশ্বজিৎকে কথা বলিয়ে দিতে বলেন।

মায়ের কোলে শিশু ইসমত নাহার জিবা

ডা. বিশ্বজিৎ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক। সরকারি চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও তিনিও মামুন প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখেন।

শিরিন আক্তার ১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে মেয়েকে নিয়ে যান মামুন হাসপাতালে। খুঁজতে থাকেন ডা. বিশ্বজিৎকে। তিনি আসার আগেই মেয়েকে হাসপাতালের ভিআইপি রুমে ভর্তি করান। রাত পৌনে ১২টার দিকে ডা. বিশ্বজিৎ হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

রাত ১২টার দিকে ডা. বাশারের মুঠোফোনে কল দেন শিরিন আক্তার। তিনি তার ফোন দিয়ে ডা. বাশারের সঙ্গে বিশ্বজিতের কথা বলিয়ে দেন। ডা. বিশ্বজিৎ ফোন নিয়ে একটু আড়ালে গিয়ে ডা. বাশারের সঙ্গে কথা বলেন। প্রায় এক মিনিট কথা বলেন দুই চিকিৎসক।

দুই চিকিৎসকের কথোপকথন এবং কথা বলা শেষে ডা. বিশ্বজিৎকে উৎফুল্ল দেখে খটকা লাগে শিরিন আক্তারের। শিরিনের মোবাইল ফোনে অটো কলরেকর্ড অ্যাপস ইনস্টল করা ছিল। তা জানতেন না ওই দুই চিকিৎসক। শিরিন কল রেকর্ড চালু করে দুই চিকিৎসকের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যান এবং ঘৃণায় ফেটে পড়েন। পরের দিন ২ সেপ্টেম্বর সকালে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় চলে যান। এরপর বিচারের জন্য অরবিট হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাপ করেন। এরপর বিষয়টি জানতে পারে নবীগঞ্জের সাংবাদিকরা।

গো নিউজ২৪/আই

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে