ঢাকা : ধর্ষণের হাত থেকে মা, বোন বা মেয়েকে রক্ষায় রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পুরুষরা। উপজেলার মহিপুর, সেরাজপুর, গঙ্গামতী ও কুয়াকাটার পূর্বাংশে গত দু’মাস ধরে বেশ কয়েকজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। রেহাই পাননি ৬০ বছরের বৃদ্ধা ও ১০ বছরের কম বয়সী শিশুও। লোকলজ্জার ভয়ে আইনের আশ্রয় নেননি তারা। তাই ধর্ষকদের হাত থেকে স্ত্রী, মা, বোন ও মেয়েদের বাঁচাতে বাধ্য হয়ে লাঠি হাতে রাতভর পাহারা দিচ্ছেন পুরুষরা।
সম্প্রতি এলাকার ১১ বছরের শিশু ইভা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর বেরিয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে পুলিশের দাবি, ইভার ঘটনা বাদে বাকি সব গুজব।
গত ১৪ই আগস্ট পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার সেরাজপুর গ্রামে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয় ১১ বছরের শিশু ইভা। স্বজনরা বলছেন, ইভাকে ধর্ষণের ঘটনাটি ছিলো সুপরিকল্পিত। ধর্ষণের দু’একদিন আগে থেকেই ধর্ষকরা কৌশলে ইভার কাছ থেকেই জেনে নেয়, তার বাড়িতে কে কখন থাকে। ঘটনার দিন রাতে দরজার খিল কেটে ঘরে ঢুকে ধর্ষকরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের পাপাশাশি মোবাইল ও টর্চ লাইটের ব্যাটারি খুলে ফেলে। এরপর ইভাকে দু’পা পাটাতনের সঙ্গে বেঁধে, গলায় ও মুখে ওড়না পেঁচিয়ে ধর্ষণের পর মেরে ফেলা হয়।
স্থানীয়রা জানান, এই গ্রামগুলোতে রাতে চুরি-ডাকাতি, ধর্ষণ চলে। প্রায়ই চলে। রাতে এসে জানালা ধরে টান দেয়, কপাট ধরে টান দেয়। ধরলে বলে, আমরা ট্রলারের লোক। চেয়ারম্যান, মেম্বারের ট্রলার।
পাহারার বিষয়ে তারা বলেন, প্রশাসনের লোক আসতে পারছে না আমাদের কাছে। এখন কী করবো, বাধ্য হয়ে আমাদের নিজেদেরকেই নামতে হচ্ছে।
ধর্ষণ আতঙ্কিত এসব এলাকাগুলো শিববাড়িয়া খাল সংলগ্ন। প্রতিদিন শত শত মাছ ধরার ট্রলার আসে এই খালে। ধর্ষকরা চিহ্নিত না হবার পেছনে প্রশাসনের অবহেলাকেই দায়ী করছেন এলাকাবাসী।
এদিকে শিশু ইভার ধর্ষণ বাদে অন্য সব ঘটনাকে গুজব দাবি করে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি ঘটনার কথা শোনা যায়। বাকিগুলো রিউমার। এলাকায় গেলে দেখা যায় যে এধরনের কোনো ঘটনার সত্যতা নেই।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জালাল আহাম্মেদ বলেন, ঘটনার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমরা এখনও পাইনি। এগুলো আমাদের মাথায় আছে। এগুলো নিয়েই তদন্ত এগুচ্ছে।
গো নিউজ২৪/আই