ঢাকা শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

হালখাতায় বাংলা নববর্ষ


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০১৮, ০৫:৩২ পিএম আপডেট: এপ্রিল ১৩, ২০১৮, ১১:৩২ এএম
হালখাতায় বাংলা নববর্ষ

বাংলা ক্যালেন্ডার বিদায় নিচ্ছে আরেকটি বছর, ১৪২৪। আসছে নতুন বছর ১৪২৫। এই প্রাণের উৎসবকে বাঙালি বরণ করে নেবে সম্পূর্ণ আয়োজনে। বাঙালির একমাত্র অবিভক্ত উৎসব এই বাংলা নববর্ষে বাংলার রূপ আর মুখকে পুরোপুরি দেখতে পাওয়া যায়। আয়োজনের কোনো শেষ থাকে না আমাদের। বৈশাখকে বরণ করতে আমাদের বেশকিছু অনুসঙ্গ থাকে, তার মধ্যে হালখাতা একটি।

হালখাতা যে শুধু হিসাব-নিকাশের খাতা হালনাগাদ করার আনুষ্ঠানিকতার জন্যেই করা হয়, এমনটা নয়। গ্রাম বাংলা এবং মফস্বল এলাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সখ্য আর সুসম্পর্ক গড়ে তোলার অন্যতম একটি পন্থা একটি। আভিধানিক অর্থে হালখাতা মানে হলো নতুন বছরের হিসাবনিকাশের জন্য নতুন খাতা ও নতুন খাতা আরম্ভের উৎসব। অতীতে গ্রাম বাংলার হাঁটে-বাজারে বৈশাখের প্রথম দিনে হালখাতা উৎসব পালন করা হতো। এ প্রথা এখনো প্রচলিত আছে।

পয়লা বৈশাখে কিংবা তার পরে সুবিধাজনক দিনক্ষণ বেছে নিয়ে ব্যবসায়ীরা আয়োজন করেন হালখাতা। এর দিন কয়েক আগে থেকে ক্রেতাদের বর্ণিল কার্ডের মাধ্যমে হালখাতা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার নিমন্ত্রণ করা হয়।
 
দোকানপাটে থাকে পরিপাটি সাজ। তাজা ফুল, কাগজের ফুলসহ নানা কিছু ব্যবহার হয় তাতে।

বাংলা নববর্ষের একটি প্রধান উৎসব হালখাতা। গ্রামেগঞ্জে, হাঁটবাজারে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের শুরুতে অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে পুরনো হিসাবনিকাশ চুকিয়ে দেয়, নতুন বছরের জন্য নতুন করে হিসাবের খাতা খোলে। এ উপলক্ষে তারা নিয়মিত খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানায়। তাদের মিষ্টি খাওয়ায়। খদ্দেররাও পুরনো বকেয়া পরিশোধ করে দেয়। নতুন করে খাতায় নাম লেখায়।

অতীতে হালখাতা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হতো তালপাতায় পত্র লিখে। কালক্রমে সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে। মানুষ তালপাতা ছেড়ে কাগজে লিখতে শুরু করেছে। এক সময় দেখা গেছে কাগজে হাতে-লেখা পত্র পাঠিয়ে দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে। তারপর দূরদূরান্তে দাওয়াত পৌঁছাতে পোস্টকার্ড ব্যবহার করা হতো। পোস্টকার্ডে হাতে লিখে বা লেটার প্রেসে ছেপে দাওয়াত দেওয়া হতো। হালে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মুদ্রিত দাওয়াতপত্র পাঠিয়ে দাওয়াত দেওয়া হয়।

আগে ব্যবসায়ীরা হিসাব লেখার কাজে ব্যবহার করতো খেরোখাতা। খেরোখাতা হলো লাল রঙের মোটা কাপড়ে বাঁধাই করা এক রকম খাতা। এ খাতা ঢাউস আকৃতির। তবে প্রশস্ত কম, কিন্তু লম্বাটে। তখন হালখাতার জন্য এ ধরনের খাতা ব্যবহার হতো। এখনো অনেক ব্যবসায়ী দৈনন্দিন কেনাবেচার হিসাব রাখতে এ ধরনের খাতাই ব্যবহার করে। তবে প্রযুক্তি অনেক এগিয়েছে। এখন আর হিসাব রাখতে খেরোখাতার দরকার হয় না। বড় বড় ব্যবসায়ীরা হিসাব রাখে কম্পিউটারে।

রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার, তাঁতীবাজার, শাঁখারীবাজার, বাংলাবাজার, শ্যামবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় হালখাতার আয়োজন এখনো চোখে পড়ে।

হালখাতা যেখানে পাওয়া যায়

রাজধানীতে হালখাতার খোঁজ মিলবে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারে। এ ছাড়া নিউমার্কেট, নীলক্ষেতসহ বড় বড় স্টেশনারি দোকানে  লাল মলাটের হালখাতা পাওয়া যাবে। ছোট-বড়, মোটা কিংবা চ্যাপ্টা চাহিদা অনুযায়ী সব রকমেরই খাতা পাবেন দোকানে। সাধারণত প্রতি দিস্তা কাগজ ৮০ টাকা থেকে ৯০ টাকা হিসাবে বিক্রি হয় একেকটি হালখাতা।

হালখাতা বাঙালির জীবনে আজীবন বেচে থাক হালখাতা। আর এর স্বকীয়তা, বৈশিষ্ট্য চলতে থাকুক যুগ যুগ ধরে।

গো নিউজ২৪/আই

সাহিত্য ও সংষ্কৃতি বিভাগের আরো খবর
‘ছি ছি ছি ছি’ দুয়োধ্বনি দিয়ে বইমেলা থেকে বিতাড়িত মুশতাক-তিশা!

‘ছি ছি ছি ছি’ দুয়োধ্বনি দিয়ে বইমেলা থেকে বিতাড়িত মুশতাক-তিশা!

৭৬ বছরে এসে কবি হেলাল হাফিজ বললেন, ‘একা থাকার সিদ্ধান্ত ছিলো ভুল’

৭৬ বছরে এসে কবি হেলাল হাফিজ বললেন, ‘একা থাকার সিদ্ধান্ত ছিলো ভুল’

বইমেলায় এসেছে ডিআইজি (প্রিজন্স) জাহাঙ্গীর কবিরের বিচিত্র কয়েদখানা

বইমেলায় এসেছে ডিআইজি (প্রিজন্স) জাহাঙ্গীর কবিরের বিচিত্র কয়েদখানা

বীর মুক্তিযোদ্ধা রাতুল কৃষ্ণ হালদার এর দুটি বই এবারের বই মেলায়

বীর মুক্তিযোদ্ধা রাতুল কৃষ্ণ হালদার এর দুটি বই এবারের বই মেলায়

এবার একুশে পদক পাচ্ছেন যারা

এবার একুশে পদক পাচ্ছেন যারা

যাত্রাপালার ইতিহাস

যাত্রাপালার ইতিহাস