ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বসন্ত ছুঁয়ে যায়...


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৮, ০৮:১০ এএম
বসন্ত ছুঁয়ে যায়...

নানা কারণে এখন পরিবর্তন এসেছে প্রকৃতিতে। কোনও ঋতুই এখন আর আগের মতো নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যি বহন করে না। শীতকালে শীতের দেখা নেই। বর্ষায় বৃষ্টি মেলে না। এসব দেখেই হয়তো কবি চরণ লিখেছেন এভাবে ‘ফুল ফুটক আর না-ই ফুটক আজ বসন্ত’। অথবা কবিকে স্মরণ করিয়ে দিতে হচ্ছে বসন্তের আগমনের কথা ‘হে কবি! নীবর কেন-ফাগুন যে এসেছে ধরায়, বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়?’

বাংলাদেশ বা বাঙালি সমাজে ঋতুরাজ বসন্ত আসে নানা রঙ ছড়িয়ে। প্রকৃতি খুলে দেয় তার দক্ষিণ দুয়ার। বসন্তের আগমনে কোকিল গান গায়। ভ্রমর খেলা করে। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। প্রকৃতির এই রূপে দেওয়ানা হয়ে কবিরা রচনা করেছেন অনেক চরণ। ‘আজি এ বসন্ত দিনে বাসন্তী রঙ ছুঁয়েছে মনে; মনে পড়ে তোমাকে ক্ষণে ক্ষণে চুপি চুপি নিঃশব্দে সঙ্গোপনে’- এ রকম অনেক চরণ রচিত হয়েছে বসন্তকে নিয়ে।

তারপরও বাংলায় বসন্তের আগমন চিরায়িত। বসন্তকাল বাংলাদেশের প্রকৃতিতে রমণীয় শোভা বিস্তার করে আবির্ভূত হয়। এ ঋতুতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বড়ই চমৎকার হয়ে ওঠে। তরুলতাসমূহ নতুন পত্রপুষ্পে সুশোভিত হয়। ফাগুনের প্রথম দিনে পোশাক আর অনুষ্ঠানে রঙের প্রাধান্য লক্ষণীয়। বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী আর তরুণ-তরুণীদের মাঝে পহেলা বসন্ত এক অন্যরকম দিন। তরুণীদের পরনে শোভা পায় বাসন্তী রঙের শাড়ি, খোঁপায় গাদা ফুল। শিশু কিংবা বয়োবৃদ্ধদের বসনেও বসন্তের ছোঁয়া। কবির ভাষায় ‘ফাগুনের রঙে রেঙেছো তুমি, না বলা কথা আজ বলবো আমিঃ হৃদয়ের ডাক শুনবে কি তুমি?’ অথবা ‘ মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে। মধুর মলয়-সমীরে মধুর মিলন রটাতে।’

ইট-পাথরের এই নগর জীবনে প্রকৃতি যদি নাও বলে ‘বসন্ত এসেছে ধরায়’ তাতে কিছু যায়, আসে না। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষের এই সাজগোজেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে জীবনে আসলো আরেকটি বসন্ত। কবির ভাষায় ‘বাঁশীতে বাজায় সে বিধুর পরজ বসন্তের সুর, পাণ্ডু-কপোলে জাগে রং নব অনুরাগে রাঙা হল ধূসর দিগন্ত।’

মোগল সম্রাট আকবর বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেন। নতুন বছরকে ঘিরে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে বসন্ত উৎসব। তখন অবশ্য উৎসবের ধরণ এ রকম ছিলনা।

বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। এছাড়া তরুণ-তরুণীরা বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ধানমন্ডি লেক, বলধা গার্ডেন মাতিয়ে রাখবেন সারাদিন। আজ দিনভর চলবে তাদের বসন্তের উচ্ছ্বাস প্রকাশ।

প্রকৃতি তার রঙ বদলাবে। বিদায় নেবে বসন্ত। খুব দ্রুতই যেন চলে যায় এ রাজঋতুটি। গর্জে ওঠে প্রকৃতি, বর্ষে বারিধারা। তাই কবিরও আক্ষেপ- ‘কেন রে এতই যাবার ত্বরা-বসন্ত, তোর হয়েছে কি ভোর গানের ভরা।’

 

গো নিউজ২৪/এমআর

সাহিত্য ও সংষ্কৃতি বিভাগের আরো খবর
‘ছি ছি ছি ছি’ দুয়োধ্বনি দিয়ে বইমেলা থেকে বিতাড়িত মুশতাক-তিশা!

‘ছি ছি ছি ছি’ দুয়োধ্বনি দিয়ে বইমেলা থেকে বিতাড়িত মুশতাক-তিশা!

৭৬ বছরে এসে কবি হেলাল হাফিজ বললেন, ‘একা থাকার সিদ্ধান্ত ছিলো ভুল’

৭৬ বছরে এসে কবি হেলাল হাফিজ বললেন, ‘একা থাকার সিদ্ধান্ত ছিলো ভুল’

বইমেলায় এসেছে ডিআইজি (প্রিজন্স) জাহাঙ্গীর কবিরের বিচিত্র কয়েদখানা

বইমেলায় এসেছে ডিআইজি (প্রিজন্স) জাহাঙ্গীর কবিরের বিচিত্র কয়েদখানা

বীর মুক্তিযোদ্ধা রাতুল কৃষ্ণ হালদার এর দুটি বই এবারের বই মেলায়

বীর মুক্তিযোদ্ধা রাতুল কৃষ্ণ হালদার এর দুটি বই এবারের বই মেলায়

এবার একুশে পদক পাচ্ছেন যারা

এবার একুশে পদক পাচ্ছেন যারা

যাত্রাপালার ইতিহাস

যাত্রাপালার ইতিহাস