ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৫ মাস ধরে শিকলে বাঁধা, খেতেও দেয় না ছেলে


গো নিউজ২৪ | স্টাফ করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০১৭, ০৯:০৩ পিএম
৫ মাস ধরে শিকলে বাঁধা, খেতেও দেয় না ছেলে

যশোর: পুকুরের এক পাড়ে দালান ঘরে শান্তিতে ঘুমান ছেলে, পুত্রবধূ ও স্ত্রী। অন্য পাড়ে কাঁঠাল গাছের নিচে শিকলে বাঁধা রয়েছেন ইউনুস আলী। যশোরের মনিরামপুরের মাছনা গ্রামে এই ব্যক্তিকে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ৫ মাস ধরে এভাবেই দিনরাত পার করতে হচ্ছে। ছেলে ইয়াকুব বিল্লাহের দাবি তার বাবা মানসিক রোগী। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে গাছে সঙ্গে বেঁধে রেখেছেন।

তাবে ইউনুস আলীর ভাষ্য, ছেলে ইয়াকুব ও স্ত্রী আকলিমা তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিয়েছে। তার লাগানো গাছ বিক্রি করে দিয়েছে। অথচ তার চিকিৎসা না করিয়ে এভাবে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে বেঁধে রেখেছে।

প্রতিবেশীরা বিষয়টিকে নিদারুণ অমানবিক বলছেন।  ইউনুস আলীকে চিকিৎসা করালে তিনি সুস্থ হয়ে উঠতেন বলে তাদের ধারণা।

সরেজমিনে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পুকুরপাড়ের কাঁঠাল গাছের নিচে সিমেন্টের কাগজের উপর শুয়ে আছেন ইউনুস আলী। কাছে যেতেই উঠে বসেন তিনি। নাম জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, তিনি ইউনুস আলী। তার বাবার নাম মৃত ফজলুর রহমান। তাকে ৫ মাস ধরে এখানে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে তার ছেলে ইয়াকুব বিল্লাহ ও তার (ইউনুস) স্ত্রী আকলিমা। তাকে খেতেও দেয় না। মাঝে মধ্যে বৃদ্ধা মা রোকেয়া বেগম তাকে খাবার দিয়ে যায়। ছেলে ইয়াকুব ও তার স্ত্রী আকলিমা তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিয়েছে।  তার লাগানো গাছ বিক্রি করে দিয়েছে। অথচ তার চিকিৎসা না করিয়ে এভাবে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে বেঁধে রাখা হয়েছে বলে ইউনুস আলী এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন। ইউনুস আলীর কথা শুনে মনেই হচ্ছিল না তিনি মানসিক রোগী।

এসময় সেখানে উপস্থিত ইউনুসের প্রতিবেশী কওছার আলী জানান, আট বছর আগে হঠাৎ ইউনুস আলী মানসিক ভারসাম্যহীন হলে তাকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। কিন্তু ইউনুসের তেমন কিছু হয়নি জানিয়ে চিকিৎসকরা ওষুধ দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। তারপর মাঝেমধ্যে অসুস্থ হন আবার চিকিৎসা দিলে সুস্থ হয়ে যায় ইউনুস আলী।

প্রতিবেশী আব্দুল গনি জানান, গেল বড় বৃষ্টি-কাঁদার মধ্যে ওই পুকুর পাড়েই শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় খেয়ে না-খেয়ে দিন-রাত কেটেছে ইউনুস আলীর। অথচ কোনো চিকিৎসাই করাচ্ছে না তার ছেলে ইয়াকুব।

কথা হয় ইউনুস আলীর বৃদ্ধা মা রোকেয়া বেগমের সাথে। তিনি জানান, ছেলেকে এভাবে মাসের পর মাস গাছে বেঁধে রেখে খেতে দেয় না ইউনুসের ছেলে ও তার ছেলের বউ। তিনি মাঝেমধ্যে খাবার দিয়ে আসেন।

এসময় ইয়াকুবের বাড়ি গেলে পুত্রবধূ আসমা ছাড়া কেউ বাড়িতে ছিলেন না। তিনি দাবি করেন, তার শ্বশুরকে তারা খাবার দিলেও তিনি তা খান না। এসময় মুঠোফোনে ছেলে ইয়াকুব বিল্লাহের সাথে কথা হলে তিনি দাবি করেন, টাকা পয়সার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

গোনিউজ/এমবি

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর
মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা