ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুপারির বাম্পার ফলন, রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে


গো নিউজ২৪ | জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০১৭, ১১:০৭ এএম
সুপারির বাম্পার ফলন, রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

ঝালকাঠি: কাঠালিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জমাদ্দার হাটে সুপারি কেনাবেচা জমে উঠেছে।  এছাড়া বটতলা বাজার ও তালতলা বাজারে প্রতিদিন জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ভিড় জমাচ্ছে শত শত পাইকার। বিনা খরচে ও পরিচর্যায় উৎপাদিত এ সুপারি প্রতিদিন লাখ লাখ টাকায় কেনা-বেচা চলছে।

কাঠালিয়ার ৬ ইউনিয়নেই এবার সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় বাজারগুলোতে এ বছর সুপারির দামও ভালো। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি চাষিরা। কাঠালিয়ায় উৎপাদিত সুপারি জেলার চাহিদা মিটিয়ে বস্তায় প্যাকিং করে ট্রাকে করে পাঠানো হচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। এমনকি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। সুপারি কিনতে দূর-দুরান্তের পাইকাররা এখন স্থানীয় বাজারগুলোতে ভিড় জমাচ্ছে।

সুপারি চাষিরা জানান, একবার এ গাছ লাগালে তেমন কোনো পরিচর্যা ছাড়াই ৩০-৩৫ বছর ফলন দেয়। এতে আয় হয় ধানের চেয়ে তিন-চারগুণ বেশি। তাই এ অঞ্চলের কৃষকরা সুপারি চাষের দিকে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তাছাড়া সুপারি বাগানে অনায়াশে লেবু, হলুদসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা যায়।

কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এ বছর কাঠালিয়া উপজেলার ৫৪টি গ্রামের ৩৮৫ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা সুপারির বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে। অনেকে আবার বাড়ির পাশে সুপারি গাছ লাগিয়েও ভালো ফলন পেয়েছে। গত এক যুগের মধ্যে এ বছর সবচেয়ে বেশি ফলন হয়েছে বলে দাবি করছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে স্থানীয় বাজারগুলোতে সুপারির দাম বেশ ভালো থাকায় বাগান মালিকরা লাভবান হচ্ছে।

বাজারগুলোতে স্থানীয় হিসাব মতে প্রতি কুড়ি (২১০টি সুপারিতে এককুড়ি) সুপারি ২শ থেকে ৩৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ও বাগানগুলো থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা এসে সুপারি কিনে নিচ্ছে। তাদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্নস্থানে চলে যাচ্ছে কাঠালিয়ার সুপারি। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে কাঠালিয়ার সুপারির সুখ্যাতি বেশি।  তাই পাইকারদের হাত ঘুরে বড়জাতের সুপারি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

কাঠালিয়ার দক্ষিণ চেচঁরি জমাদ্দার হাট এলাকার সুপারির বাগান মালিক (অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) রেজাউল করিম জানান, বিগত এক যুগের চেয়ে এ বছর ফলন হয়েছে তিনগুণ। আর সুপারির আকারও হয়েছে অনেক বড়। এ বছর বৃষ্টির কারণে সুপারির ফলন ভালো হয়েছে। কোনো পোকার আক্রমণও নেই।  এবার তিনি লক্ষাধিক টাকার সুপারি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। 

কাঠালিয়ার আনইলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা মুহিববুললাহ বলেন, ‘আমার বাপ দাদার আমলের সুপারির বাগান। এ বছরের মতো এত ফলন আগে দেখিনি। আমাদের বাগানের সুপারি বিক্রির জন্য বাজারে নেয়া লাগে না। পাইকাররা বাগান থেকেই সুপারি কিনে নেন।’

কাঠালিয়ার জমাদ্দার হাটে সুপারি নিয়ে আসা বিক্রেতা মো. রবিউল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, ‘৫ বস্তা সুপারি ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এগুলো পাইকাররা কিনে ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রামের বাজারে বিক্রি করেন।’

কাঠালিয়ার পশ্চিশ আউড়া থেকে সুপারি কিনতে আসা পাইকার নুরুন নবী তালুকদার বলেন, ‘আমরা এখান থেকে সুপারি কিনে আড়তে নিয়ে যাই। সেখানে গিয়ে আড়তে সুপারির আকার নির্ধারণ করে বড় সাইজগুলো বিদেশে রপ্তানির জন্য মজুদ করি। অন্যান্য সুপারিগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চালান করছি।’

কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বছর সুপারির ফলন অত্যাধিক ভালো হয়েছে। যা দেখে এলাকার মানুষ সুপারি চাষে আরও উৎসাহী হবে।  সুপারি বাগান মালিকরা প্রতি বছরই সুপারি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
 
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আবুবকর সিদ্দিক জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ৫০০ হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় এ ফসলটি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে।

গোনিউজ২৪/এমবি

অর্থনীতি বিভাগের আরো খবর
৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

৫৯৫ টাকা কেজি দরে দিনে ১ কোটি টাকার গরুর মাংস বিক্রি করেন খলিল

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

১৪ বছর আগে একীভূত হয়েও এখনো ধুঁকছে যে ব্যাংক

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

রেড জোনে থাকা ‘বেসিক ব্যাংক’ যাবে কার সঙ্গে?

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বিদেশি ঋণ, পরিশোধ হবে যেভাবে

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

৫ বছর মেয়াদি সুকুক বন্ড বাজারে ছাড়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

বেসিক ব্যাংক কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?