ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাকিবের বিশ্রাম এবং আমাদের চাওয়া-পাওয়া আর হতাশা !


গো নিউজ২৪ | ফারজানা আক্তার প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭, ০৪:২৮ পিএম আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭, ১০:২৮ এএম
সাকিবের বিশ্রাম এবং আমাদের চাওয়া-পাওয়া আর হতাশা !

বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ আমাদের সাকিব আল হাসান। তিনি বারবার এই কথাটা প্রমাণ করে আসছেন। বিশ্বের কাছে বারবার বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন। শুধুমাত্র তার কারণেই অনেক দেশ, অনেক দেশের মানুষ বাংলাদেশের নাম জানে। তিনি আসলেই বাইরের মানুষদের কাছে কতটা জনপ্রিয় তা তার ফেইসবুক আর টুইটার প্রোফাইল দেখলেই বুঝা যায়। 

আমাদের ক্রিকেটে অন্য এক ভরসার নাম সাকিব আল হাসান।  তিনি দলে থাকা মানে একাধারে একজন বোলার, ফিল্ডার, ব্যাটসম্যান এবং একজন উপযুক্ত টিপসম্যান থাকা। অনেকদিন ধরে খেলছেন তাই অভিজ্ঞতার ঝুলি পরিপূর্ণ। 

আমাদের সেই সাকিব আল হাসান আজ ক্লান্তি-শ্রান্তিতে ভরপুর। তার বিশ্রাম দরকার। কাজ করতে করতে আমাদের মাঝে একটা একগেঁয়েমি চলে আসে। নিজের ভেতরের শক্তিটা তখন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। নিজের ভেতরের ক্রিয়েটিভি কমে যায়।  শরীরের ওপর চাপ দিয়ে কাজ শেষ করা যায় কিন্ত সেই কাজের পরিপূর্ণতা আসে না।  থাকে না কোনো স্যাটিসফেকশন। 

সাকিব আল হাসানের বড় ইনজুরি হয়েছিলো স্ট্রেস থেকে। অতিরিক্ত চাপে শিন বোন ক্ষয়ের মত হয়েছিল। সতর্কতায় সেটি ওভারকাম করা গেছে। ২০১২ সালে শিনবোন ইনজুরিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলেননি। তিনটি সমস্যা একসাথে হয়েছিলো ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার সাথে ম্যাচে। সমস্যা তিনটি হলো - কাফ মাসলে ইনজুরি আর বাকি দুটিই ছিল স্টেস রিলেটেড। কাফ মাসলে অপারেশন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। বাকি দুটি ওভারকাম করা গেছে সময় নিয়ে। ২০১৫ সালে আবার শিন বোনে ব্যথা। সেটির কারণে সেবার খেলতে পারেননি জাতীয় লিগে।

একটা ব্রেকের ভাবনা সাকিব করতেই পারেন। সাকিব বলেছেন এভাবে খেলতে থাকলে তিনি ২-১ বছরের বেশি খেলতে পারবেন না। কথাটা শুনেই কেমন শিউরে উঠতে হয়। আমরা স্বপ্ন দেখছি ভারতে ২০২৩ বিশ্বকাপে শিরোপা জয়ে সাকিব আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। তাই সকিব যখন বলেন আরও ৫-৬ বছর খেলতে একটি ব্রেক তার জরুরী, তখন মেনে নিতেই হয়।

তবে আমার মনে একটা প্রশ্ন ছিলো , বিশ্রামটা কেন ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি থেকে নয় ? কেন টেস্ট থেকেই ? সাকিব এর উত্তর দিয়েছেন।  বলছেন দুটি টেস্ট ম্যাচ মানে কেবল পাঁচ-পাঁচ দশদিন নয়। প্রস্তুতি ম্যাচ, তার আগের প্রস্ততি মিলিয়ে মাসখানেকের ধাক্কা। এবারই যেমন দুটি টেস্টের আগে প্রস্তুতি ছিল দুই মাসের। উত্তরটা যুক্তিযুক্ত। 

খুব বেশি ভালো হতো যদি সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর বিশ্রাম নিতেন। খুব ভালো হতো যদি সাকিব বিপিএল না খেলতেন।  টি-টোয়েন্টি হলেও এক মাসের বেশি সময়ের ধাক্কা। অনেক অনেক ম্যাচ। সাকিব এর জবাবও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয় তিনি হলিডে মুডে থাকেন। কোনো চাপ থাকে না । 

দক্ষিণ আফ্রিকার পর কেন বিশ্রাম নয় ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, “আমার কাছে যদি মনে হতো যে পরে নিলেও চলবে, তাহলে পরেই নিতাম। আমার কাছে মনে হলো, এখনই বিশ্রামের উপযুক্ত সময়। এ কারণেই নেয়া।”  এমন উত্তর পাবার পর আর কিছু বলার থাকে না। 
সাকিব দলে না থাকা মানে দলের ভালো করার সুযোগ কমে যাওয়া। তার নিজেরও অনেক  কিছু হারানোর আছে। দারুন ফর্মে ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও ভালো কিছু করলে সেটি যেমন তার নিজের ঝুলি ভারী করতো, তেমনি দলেরও ভালো হতো। 

তিনি তার অবস্থান বাখ্যা করেছেন, প্রতিটা প্রশ্নের কাটকাট জবাব দিয়েছেন, সবাইকে বুঝিয়েছেন। আমি তার সব যুক্তির সাথে একমত নই বা হবার মতো নয়। তিনি আমাদের আশা ভরসার জায়গা বলেই তার কাছে আমাদের এক্সপেকশনও খুব বেশি। 

একটা আক্ষেপ সারাজীবন থেকে যাবে।  তিনি এবার বিপিএলটা  না খেললেও তো পারতেন! তিনি পারতেন দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের পর বিশ্রাম নিতেন। তিনি তার শরীর সম্পর্কে ভালো জানেন, বুঝেন কিন্ত তার একজন অন্ধভক্ত হিসেবে আমার এই আক্ষেপ সারাজীবন থেকে যাবে।

গোনিউজ২৪
 

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ