ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

র‍্যাম্প মডেল থেকে নারী জঙ্গিদের লিডার!


গো নিউজ২৪ | অপরাধ চিত্র প্রতিবেদক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭, ০৪:৩৪ পিএম আপডেট: সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭, ১০:৩৪ এএম
র‍্যাম্প মডেল থেকে নারী জঙ্গিদের লিডার!

ঢাকা: নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’র কমান্ডার মেহেদী হাসান। বয়স তার ২৯ বছর। তথ্য প্রযুক্তিতে সুদক্ষ। র‌্যাম্প মডেলিংয়ে দারুণ শখ ছিল। র‍্যাম্প মডেলও ছিলেন। মডেলিংয়ে মেহেদী নামেই পরিচিত ছিলেন।

একেবারে স্মার্ট তরুণদের মতো ইংরেজিতে কথা বলা আর লেখাতে ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ। ঢাকার দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করা মেহেদী হাসান গৃহসজ্জার জিনিসপত্র বিক্রির ব্যবসাও করতেন।

তবে শেষ অবধি সবকিছু ছেড়ে ছুঁড়ে জড়িয়ে পড়েন জঙ্গি কর্মকাণ্ডে। যুক্ত হন সারোয়ার-তামিম গ্রুপে। তবে তার জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার কারণ রহস্যজনক। কেন, কীভাবে জঙ্গি নেটওয়ার্কে জড়িয়ে গেছেন মেহেদী সে সম্পর্কে কিছুই জানে না পরিবারের সদস্যরা।

গেল ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার একটি বাড়ি থেকে মেহেদীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-৩-এর একটি দল। তার কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল ফোন, একটি পাসপোর্ট, উগ্রবাদী বইসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাবের দাবি, মেহেদী হাসান জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’র কমান্ডার। তার সাংগঠনিক নাম ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিল। ২০১৫ সালে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন মেহেদী। তার সঙ্গে নিবরাসসহ হোলি আর্টিজান ও কল্যাণপুরের আস্তানার জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা ছিল।

তথ্যমতে, জঙ্গি কর্মকাণ্ডের জন্য কর্মী, অর্থ সংগ্রহ, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করা, হিজরতপূর্ব প্রস্তুতিমূলক পর্ব সম্পন্ন করার কাজ করতেন মেহেদী। তা ছাড়া সাংগঠনিক বিয়ের ব্যবস্থা দেখভাল করতেন। তার মাধ্যমে হিজরত করা দুই বড় জঙ্গি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়। এ ছাড়া দেশে ও দেশের বাইরে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ, অর্থ ও অর্থের মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহের কাজও করতেন।

র‌্যাবের দাবি অনুযায়ী, জেএমবির নারী সদস্যরা মেহেদীর মাধ্যমে জঙ্গি কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। নারী জঙ্গিদের নির্দেশনা ও পরিচালনা করতেন এই মেহেদী। অনেক সময় আত্মঘাতী হওয়ারও নির্দেশনা দিতেন নারী জঙ্গিদের। মূলত, নারী জঙ্গিদের গুরুত্বপূর্ণ লিডার হিসেবেই ছিলেন সাবেক র‌্যাম্প মডেল মেহেদী। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামত থেকে বোঝা যায়, ‘আদ্-দার-ই-কুতনী’ অপারেশনাল সক্ষমতা অর্জন ও যেকোনো স্থানে নাশকতার জন্য সক্ষম।

র‌্যাবের হাতে মেহেদী হাসান

মেহেদী হাসানের বাড়ি পটুয়াখালীর রাজাপুর গ্রামে। তার বাবা খোরশেদ আলম পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ছিলেন। ১৯৯৯ সালে অবসরে যান। রাজাপুর গ্রামে নিজেদের বসতবাড়ি থাকলেও প্রায় ৩০ বছর ধরে মেহেদীর পরিবারের সদস্যরা থাকছেন ঢাকার মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকার একটি বাড়িতে। পরিবারের দাবি, গত ৪ মে থেকে মেহেদী নিখোঁজ ছিল।  তার সন্ধান পাওয়ার জন্য খিলগাঁও থানায় জিডি করা হয়েছিল।

মেহেদীর বড় ভাই ওয়ালিউর আলম সংবাদমাধ্যমকে জানান, মেহেদীর জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার বিষয়ে তারা কিছুই জানতেন না। সে ঢাকার এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। তার বউ বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। চার বোন, দুই ভাইয়ের মধ্যে মেহেদী সবার ছোট। ইন্টারমিডিয়েটে পড়ার সময় সে মডেলিংয়ের চেষ্টা করে। তবে পরিবার থেকে এ বিষয়ে তাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল।

পরিবারের সাড়া না পেয়ে মেহেদী এক সময় পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে খেলনাসামগ্রী কিনে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা শুরু করে। পাশাপাশি দেশের বাইরে থেকে চকলেট এনে বিভিন্ন দোকানে বিক্রিও করতো। মডেলিংয়ে যুক্ত থাকার সময় তোলা ছবিগুলো সে কয়েক বছরে নষ্ট করে ফেলে।

গোনিউজ/এন

অপরাধ চিত্র বিভাগের আরো খবর
মামা, মামি ও মামাতো বোনকে গলা কেটে হত্যা করলো ভাগনে

মামা, মামি ও মামাতো বোনকে গলা কেটে হত্যা করলো ভাগনে

বিএনপির সমাবেশে সংবাদকর্মীরা হামলার শিকার

বিএনপির সমাবেশে সংবাদকর্মীরা হামলার শিকার

এমটিএফই প্রতারক মাসুদকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে, নেওয়া হবে ইন্টারপোলের সহায়তা

এমটিএফই প্রতারক মাসুদকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে, নেওয়া হবে ইন্টারপোলের সহায়তা

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের চিহ্নিত করতে কমিশনের খসড়া প্রস্তুত’

‘বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের চিহ্নিত করতে কমিশনের খসড়া প্রস্তুত’

কিশোরী নির্যাতন করে যুব মহিলা লীগ নেত্রী মিশু তিন দিনের রিমান্ডে

কিশোরী নির্যাতন করে যুব মহিলা লীগ নেত্রী মিশু তিন দিনের রিমান্ডে

গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত দুই যুদ্ধাপরাধী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত দুই যুদ্ধাপরাধী গ্রেপ্তার