জার্মানির ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ‘তুরস্কের শত্রু’ বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। আসন্ন নির্বাচনে এসব নেতাকে প্রত্যাখ্যানের জন্য জার্মান বংশোদ্ভূত তুর্কিদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাধারণ নির্বাচন। এতে ভোট দেবে প্রায় ১০ লাখ তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান, যাদের বেশিরভাগই এরদোয়ানের সমর্থক। গত এপ্রিলে তুরস্কের গণভোটে এই তুর্কি প্রেসিডেন্টের পক্ষে ভোট দিয়েছেন তারা।
শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় শেষে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এরদোয়ান। জার্মান-তুর্কিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটস (সিডিইউ), সোশ্যাল ডেমোক্রেটস (এসপিডি) গ্রিন পার্টি, সবাই তুরস্কের শত্রু। যারা তুরস্কের সঙ্গে শত্রুতায় জড়িত নয়, তাদের প্রয়োজনীয় সমর্থন দিন।’
এই তুর্কি নেতা আরো বলেন, ‘তারা প্রথম অবস্থানে থাকা দল হোক, বা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দল হোক- সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটা জার্মানিতে বসবাসরত আমার নাগরিকদের সম্মানের সংগ্রাম।’ ভোটারদের উদারপন্থি দলগুলোকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
এদিকে এরদোয়ানের এই কথায় ক্ষুব্ধ প্রতিবাদ জানিয়েছেন জার্মানির মন্ত্রীরা। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল এরদোয়ানের মন্তব্যকে ‘নজিরবিহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। একে তার দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাণিজ্যে এবং সামরিক সংস্থা ন্যাটোর প্রধান অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও এর আগেও জার্মানিকে একহাত নিয়েছেন এরদোয়ান। চলতি বছরের এপ্রিলের গণভোটকে কেন্দ্র করে এরদোয়ানপন্থিদের জার্মানিতে সমাবেশ করতে বাধা দিয়েছে ক্ষমতাসীন মেরকেল সরকার। তখন একে ‘নাৎসি আচরণ’ বলে অভিহিত করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। ওই গণভোটে জয় পান তিনি।
২০১৬ সালে তুরস্কে সেনাঅভ্যুত্থান চেষ্টার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ওই ষড়যন্ত্রের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসিত তুর্কি ধর্মীয় নেতা ও ব্যবসায়ী ফেতুল্লাহ গুলেনকে অভিযুক্ত করে আসছে এরদোয়ান সরকার। জার্মানি গুলেনপন্থিদের সহায়তা করছে বলেও তুরস্কর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
বর্তমানে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের দল সিডিইউ দেশটির মধ্য বামপন্থি দল এসপিডির সঙ্গে জোট করে সরকার পরিচালনা করছে। জার্মানিতে প্রায় চার লাখ তুর্কির বাস। দেশটির সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যেমন তাদের প্রভাব আছে, তেমনি প্রভাব আছে ভোটে ও রাজনীতিতে। তাদের উদ্দেশে এরদোয়ান বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা ওইসব দলকে ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেবে।’
গো নিউজ২৪/ আরএস