ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রোহিঙ্গা নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো!


গো নিউজ২৪ | ফারজানা আক্তার প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭, ০৪:৫৭ পিএম আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭, ১০:৫৭ এএম
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রোহিঙ্গা নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো!

প্রতিটা দেশেই প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন। কোনো দেশের দুর্যোগকালীন দুর্গত এলাকায় সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা পরিদর্শনে যান। কিছু সময় থাকেন। টুকটাক খোঁজ খবর নেন। তারপর চলে আসেন। তবে আমাদের এক প্রধানমন্ত্রী আছেন যাকে আমি মানুষের সুখে হাসতে দেখেছি। আবার মানুষের দুঃখে কাঁদতে দেখেছি। তিনি আমাদের সম্মানিত মমতাময়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের মুখ্যমন্ত্রী মমতার মনে মমতা না থাকলেও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সেটা পরিপূর্ণ ভাবেই রয়েছে।

সম্প্রতি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়েছেন। তিনি তাদের মাঝে ত্রাণ দিয়েছেন। তাদের মুখে তাদের বিভীষিকাময় জীবনের কথা শুনেছেন। তাদের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনতে শুনতে নিজের অজান্তেই কেঁদে ফেলেছেন। মমতাময়ী মনে হয় তাদেরই বলে যারা অন্যের কষ্টের কথা নিজের মন দিয়ে অনুভব করেন। তিনি এই কথাও বলেছেন যে রিফিউজি হওয়া যে কত কষ্টের সে কথা আমরা জানি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরাও রিফিউজি ছিলাম। তিনি আজ একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু নিজেদের বিভীষিকাময় অতীতের কথা সবার সামনে বলতে একটুও দ্বিধাবোধ করেন না। তার জন্য রইলো অনেকগুলো বাহবা। 

তিনি একজন প্রধানমন্ত্রী। একটি দেশের প্রধান। তিনি কাজ করেন এবং কথা বলেন অনেক ভেবে চিন্তে। আর আমি একজন খুব সাধারণ খেটে খাওয়া মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে এবং বউ। আমার কি সাধ্য কোনো জাতীয় ইস্যু নিয়ে তার সাথে কথা বলার। কিন্ত যাকে এতো ভালোবাসি, এতো পছন্দ করি, যাকে অনুসরণ করে পথ চলার চেষ্টা করি, তার কাছে তো কিছু আবদার করাই যায়। আমি আমার ভালোবাসার জায়গা থেকে এই অধিকারটুকু রাখতেই পারি, তাই না?

প্রথম কথা- যুদ্ধের সময় আমরা রিফিউজি ছিলাম। ভারত আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। এই কথাটাতে কোনো ভুল নেই। কিন্ত আমরা তো ভারতে সারাজীবনের জন্য থেকে যাই নি। ভারত আমাদের খালি খালি সাহায্য করে নি। এজন্য তারা আমাদের কাছ থেকে বেনিফিটও নিয়েছে। আমরা ভারতে গিয়ে ইয়াবা ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসাও করি নি। ভারত আমাদের সাহায্য করেছে, এখন রোহিঙ্গাদের আমাদেরও সাহায্য করতে হবে এই কথাটার ভিত্তি নেই। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।

দ্বিতীয় কথা- আপনি মানবতার দিক চিন্তা করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। আপনি বলেছেন যতোদিন না মায়ানমার শান্ত হচ্ছে ততোদিন তারা এদেশে থাকবে। আপনার সঙ্গে এই জায়গায় আপনি একমত। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে থাকুক। পরিস্থিতি ঠিকঠাক হলে তারা চলে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার প্রশ্ন হচ্ছে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে আমাদের এখনকার শক্তি কতটুকু? যতটুকু শক্তি আছে সেটার কি আমরা যথাযথ ব্যবহার করতে পারবো?

মিয়ানমারের নোংরা পলিসির কারণে আমাদের দেশের বর্ডার আজ নিরাপত্তা হুমকির মুখে। আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে। এই সমস্যাটা এক দুদিনের নয়। গত ৩০ বছর ধরে চলে আসছে। এই সমস্যাটা দ্বিপক্ষীয় ভাবে সমাধান হবে না। তাই এর সমাধান করতে হবে আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে।

আমাদের দেশে এমনিতেই হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার তরুণ রয়েছে। নিরক্ষর তরুণদের কথা বললামই না।  সেই জায়গায় রোহিঙ্গারা কি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করবে এই দেশে? তারা জীবনের তাগিদে ইয়াবা ব্যবসা, খুন, ছিনতাই ইত্যাদি কাজ বেছে নেবে। সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার, টেকনাফ আমাদের বিখ্যাত টুরিস্ট এরিয়া। এই জায়গাগুলোর পরিবেশ একদম নষ্ট হয়ে যাবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার ওপর আমাদের সম্পূর্ণ ভরসা রয়েছে। আপনাকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে অনেক বেশি সোচ্চার হতে হবে। জাতিসংঘে যেতে হবে, আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। কাজটা আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই করতে হবে। নইলে মিয়ানমার প্রতি বছর অল্প-অল্প করে রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পাঠাবে। আগামী কয়েক বছরে মিয়ানমারে কোনো রোহিঙ্গা থাকবে না। তবে, বাংলাদেশের পাঠ্য বইয়ে চাকমা, মারমা, হাজং নামক জনগোষ্ঠীর সাথে যুক্ত হবে রোহিঙ্গা নামক আরেকটি গোষ্ঠীর নাম। 

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ