অদম্য মেধাবী সাইদুর রহমানের স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া এবং আলিম হোসেনের ইচ্ছে আদর্শ শিক্ষক হওয়া। কিন্তু তাদের এই স্বপ্ন পূরণ তো দূরে থাক, বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থাভাবে হতে পারছে না ভর্তি। ফলে স্বপ্ন পূরণ নিয়ে সংশয়ে পড়েছে শেরপুরের এই দুই অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী।
অদম্য মেধাবী আলিম ও সাইদুরের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী উত্তরবন্ধ গ্রামে দিনমুজুর আব্দুস সালামের ছেলে মো. আলিম হোসেন। সে মানবিক বিভাগ থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি ও ২০১৬ সালে এইচ এসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এবছর ভর্তি পরীক্ষায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃ-বিজ্ঞান বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তার ভর্তি হতে প্রয়োজন ১৩ হাজার এবং ভর্তি শেষ সময় ২৩ নভেম্বর। কিন্তু আলিমের পরিবারের পক্ষে অল্প সময়ে এতো টাকা জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
আলিমের বাবা আব্দুস সালাম বলেন, দিনমুজুরী কাম কইরা যা পাই তা দিয়ে ছয় সদস্যের কোন রহম সংসার চলে। এই অল্প সময়ে এতো ট্যাহা (টাকা) কেমনে জোগাড় করমু। ওহন কেমন ছেলেডারে ভর্তি করমু হেই চিন্তায় ঘুম ধরে না।
আলিম বলেন, স্বপ্ন ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করবো। সেই সুযোগও হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্য শাহিন ভাইয়ে আর্থিক সহযোগিতায় এইচএসসি পাশ করেছি। এখন ভর্তি হতে ১৩ হাজার টাকার প্রয়োজন। আমি ভর্তিও সুযোগ পেলে ভবিষতে লেখাপড়া করে ভালো শিক্ষক হতে চাই। গরিব মেধাবী শিক্ষাথীদের জন্য কাজ করতে চাই।
আরেক অদম্য মেধাবী সাইদুর রহমান। সে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নরের চাপাঝুড়া গ্রামের ভ্যান চালক শাহজাহান মিয়ার ছেলে। সাইদুর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৫ এসএসসিতে জিপিএ- ৪.৮৯ এবং ২০১৭ সালে এইচএইচএসসি তে জিপিএ-৪.২৫ পেয়েছে। সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গনিত বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তাঁরও ভর্তির জন্য ২৩ নভেম্বরের মধ্যে ১৪ হাজার টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এই অল্প সময়ে ভ্যান চালক বাবার পক্ষে এতো টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তাই অদম্য মেধাবী সাইদুরের বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণে সংশয় দেখা দিয়েছে।
অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ছিলাম। শুধু গনিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। ইচ্ছে আছে ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে আমার মতো গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা করার।
সাইদুরের বাবা শাহাজান মিয়া বলেন, ছয় শতাংশ বাড়ি ভিটা ছাড়া আর কোন জমি নাই। সারা দিন ভ্যান চালাইয়া যা পাই তা দিয়ে সংসার চলে। ছয় ভাই বোনের মধ্যে সাইদুর সবার ছোট। সে লেহা পড়াতেও ভালো। অহন ভর্তি অইতে মেলা টেহা লাগে। কিন্ত আমারত এত টেহা দিয়নের সামর্থ নাই। অহনর কি করমু বুঝবার পাইতাছি না।
গো নিউজ২৪/এবি