ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
দিনাজপুরে প্রধানমন্ত্রী

‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কেউ না খেয়ে মরবে না’


গো নিউজ২৪ | দিনাজপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০১৭, ০৬:৩৬ পিএম আপডেট: আগস্ট ২০, ২০১৭, ১২:৪০ পিএম
‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কেউ না খেয়ে মরবে না’

দিনাজপুর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বানভাসি মানুষদের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশে পর্যপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। আপনারা চিন্তা করবেন না। আওয়ামী লীগ, বিজিবি, সেনাবাহিনী, পুলিশবাহিনী সবাই ত্রান বিতরণ করছে। গৃহহারা মানুষের ঘরবাড়ি করে দিচ্ছি। বন্যায় যাদের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে, তাদের ঘরবাড়ি করে দেয়া হবে। একটি মানুষও যাতে না খেয়ে মারা না যায়, গৃহহীন না থাকে আমরা তার ব্যবস্থা করেছি। কৃষকের ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বন্যায় যে সকল শিক্ষার্থীর বইখাতা ভেসে গেছে, তাদের নতুন বইখাতা দেয়া হবে। 

অনেক এনজিও ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে থাকে। তাদের কাছে অনুরোধ করি, যে বানভাসি মানুষগুলো, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলি তাদের উপর যেন ঝুলুম করা না হয় সপ্তাহ তোলার জন্য। এ ব্যাপারটাই সকল এনজিওদের এটুকু নির্দেশ দিব। যাদের ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। তাদের ঋনের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে যা যা দরকার আমার সরকারের পক্ষ থেকে সবই করে দিব। আপনারা শুধু আমাদের উপর ভরসা রাখবেন। আমরা আছি আপনাদের পাশে। আপনাদের পাশেই থাকবো। আপনাদের সেবা করে যাবো। 

রোববার বেলা ১১টায় দিনাজপুর জিলা স্কুল মাঠ প্রাঙ্গনে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরনকালে সংক্ষিপ্ত ভাষনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গে ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার ছিল, মঙ্গা লেগেই থাকতো। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ২১বছর পর ক্ষমতায় আসে। এসেই সিদ্ধান্ত নেয় এ এলাকায় যেন মঙ্গা হবে না। এখানকার প্রত্যেক মানুষ যেন কাজ পায়, খাদ্য পায়। আমরা মঙ্গা দূর করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে আবার দেশে মঙ্গা দেখা দেয়। আমরা আবারও ক্ষমতায় আসার পর ৮ বছরেও এ এলাকায় কোন মঙ্গা হয় নাই। 

আবেগ আপ্লুত কন্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বাবা, মা, ভাই-বোন সব হারিয়েছি। আমার আর হারাবার কিছু নেই। আমার বাবা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। আমি দেশের মানুষের জন্য আমার জীবন উৎসর্গ করেছি। প্রয়োজনে আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমিও জীবন দেব। তিনি  বলেন, বন্যা-দুর্যোগ এসব থাকবে। এসবের সাথে মোকাবেলা করেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। সেই পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। 

১৯৯৫ সালে দিনাজপুরে ইয়াসমিন হত্যার ঘটনা স্মরণ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইয়াসমিন হত্যার ঘটনায় সারা দিনাজপুরে আগুন জ্বলছিল। তখন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি আপনাদের খবর নিতে আসেননি। আমি সেদিন আপনাদের পাশে এসেছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অতিবৃষ্টি ও প্রবল উজানের পানি নেমে আসায় নদনদীর বাধ ভেঙ্গে যাওয়া থেকে শুরু করে ঘরবাড়ী ধ্বংস হয়েছে, ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীদের বই-খাতা নষ্ট হয়েছে। আমরা এখবরগুলো সবই জানি। এবং ইতিমধ্যে সব ব্যবস্থা নিয়েছি। যাতে প্রত্যেকের কাছে ত্রান পৌছায়। তা ছাড়া আমরা আগামী তিনমাস যতক্ষন না ফসল উঠবে ততক্ষন পর্যন্ত খাদ্য সাহায্য যাতে অব্যাহত থাকে সে ব্যবস্থা আমরা করে দিব। যাদের ঘরবাড়ী নষ্ট হয়েছে। তাদের দ্রুত ঘরবাড়ী তৈরী বা মেরামত করে দিব। বই খাতা নষ্ট হয়েছে তাদের মাঝে পুনরায় বইয়ের ব্যবস্থা করে দিব। বন্যায় রাস্তাঘাট, রেল লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব বিভিন্ন মন্ত্রণালয় তৈরি হয়ে আছে। বৃষ্টি এবং পানি নেমে গেলে আমরা করে দিব। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন কৃষক ভাইয়েরা যাদের ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। তারা যেন পুনরায় কৃষি ঋণ পেতে পারেন, বীজ ও বীজতলার ব্যবস্থা, প্রায় ২কোটি কৃষক বিশেষ উপকরন কার্ড পেয়ে থাকেন, প্রায় ১কোটি কৃষক ভাই বোনেরা তারা ১০টাকা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারেন এবং ভর্তুকির টাকা তাদের কাছে পৌঁছায় যাতে এ ক্ষেত্রে যা করণীয় তা সবই করা হবে। এরপর তিনি আশ্রয়কেন্দ্রের বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেন।  

এ সময় সঙ্গে ছিলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, খাদ্যমন্ত্রী এড. কামরুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রানমন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, মনোরঞ্জনশীল গোপাল এমপি, শিবলি সাদিক এমপি প্রমুখ। 

এ ছাড়াও ছিলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী, কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবু হুসাইন বিপু, জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম, পুলিশ সুপার মো. হামিদুল আলমসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরল উপজেলার তেঘরা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ বিতরণ করেন। মধ্যাহ্ন বিরতির পর প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে দিনাজপুর ত্যাগ করেন।

গোনিউজ২৪/পিআর

দেশজুড়ে বিভাগের আরো খবর
মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে কোটি টাকা নিয়ে পালালো ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

দিনের শুরুতেই বিআরটিসি বাসের চাপায় নিহত ৪ 

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

ধারের টাকা দিতে না পারায় বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

বোমাটি বিস্ফোরিত হলে বাসের সবাই মারা যেতেন

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

রেললাইনে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা, হাতেনাতে আটক ৩

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা

হাতকড়া পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় বিএনপি নেতা