ডেস্ক: মাঝ মাঠ থেকে বল উড়ে আসতেই হেড করে বিপদমুক্ত করলেন ডিফেন্ডার। আবার কর্ণার কিকে সবার উপরে লাফিয়ে হেড দিয়ে প্রতিপক্ষের জাল কাঁপালেন স্ট্রাইকার।
কখনো কখনো ডান কিংবা বা দিক থেকে ক্রসে মাথা লাগিয়ে বল প্রতিপক্ষের বক্সে ফেলাটাই যেকোন ফুটবলারের কাজ। ফুটবল ম্যাচে মাথা দিয়ে এমন কারিকুরি চিরাচরিত।
সে ক্ষেত্রে কোনো ফুটবলার কি চিন্তা করেছেন, এই যে হেড করলেন, তার পার্শপ্রতিক্রিয়া কী। তখন হয়তো কেউ বুঝবেন না, কিংবা বুঝতে চাইবেনও না। কিন্তু এর প্রভাব পড়ে পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ করার পর। বিশেষ করে বয়স যখন ষাট স্পর্শ করে।
গোটা ক্যারিয়ারে অনেকবার হেডে করেছেন। এর ফলে মস্তিষ্কে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে। শেষ জীবনে ভুগতে পারেন ডিমেনশিয়া রোগে। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় এমন শঙ্কার কথাই উঠে এসেছে।
তবে ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, তারা এই গবেষণার ফল বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখবে।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, যারা বিনোদনের জন্য মাঝে মধ্যে ফুটবল খেলেন, তাদের ক্ষেত্রে এটা সমস্যা নয়। কেবল পেশাদার ফুটবলারদের ক্ষেত্রেই এরকম ঝুঁকির কথা বলছেন তারা।
উদাহরণ হিসাবে উঠে এসেছে ওয়েস্ট ব্রম ক্লাবের সাবেক স্ট্রাইকার জেফ অ্যাস্টেলে নাম। যিনি মাত্র ৫৯ বছর বয়সে ডিমেনশিয়ায় ভুগে মারা যান। তাঁর মেয়ে ডন অ্যাস্টেল বলেছেন, তাঁর বাবার এই রোগ যে পেশাদার ফুটবল খেলার কারণেই হয়েছিল সেটা স্পষ্ট।
২০০২ সালে যখন তাঁর মৃত্যু হয় তখন তদন্তে দেখা গিয়েছিল যেভাবে ফুটবলার জীবনে তিনি তার মাথা দিয়ে বারবার শক্ত চামড়ার বল খেলেছেন, সেটা তার মস্তিস্কের ক্ষতি করেছিল।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে পাঁচজন পেশাদার এবং একজন শৌখিন ফুটবলারের মস্তিস্ক পরীক্ষা করে দেখে। এরা গড়ে প্রায় ২৬ বছর ধরে ফুটবল খেলেছে।
দেখা গেছে তাদের ছয় জনেরই বয়স যখন ষাটের কোঠায়, তাদের সবার ডিমেনশিয়া হয়েছিল।
মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত করে বিজ্ঞানীরা এদের মস্তিস্কের ক্ষতি হয়েছিল বলে ইঙ্গিত পেয়েছে। মস্তিস্কের এরকম কন্ডিশনকে বলে ক্রনিক ট্রম্যাটিক এনসেফালোপ্যাথি। এর ফলে স্মৃতি মুছে যাওয়া, বিষন্নতা এব ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হয় মানুষ।
গোনিউজ২৪/এম