ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিকের পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল নিয়ে জটিলতা


গো নিউজ২৪ | আমানুর রহমান প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭, ১২:১১ পিএম
প্রাথমিকের পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল নিয়ে জটিলতা

প্রাথমিকের পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল নিয়ে জটিলতাপ্রাথমিকের পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল নিয়ে জটিলতা
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের উন্নীত পদ্ধতিতে বেতন নির্ধারণে গত ১৫ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা আদেশ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ওই আদেশকে ‘অস্পষ্ট’ ‘অসম্পূর্ণ’ ও ‘গোঁজামিলের’ আদেশ বলে আখ্যায়িত করেছেন পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা।

দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত এবং জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরাই শুধু লাভবান হয়েছেন। দীর্ঘ দিন শিক্ষকতা শেষে পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা বঞ্চিত হয়েছেন বলে জানান প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নেতারা। শিক্ষক নেতারা বলেন, ওই আদেশে পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।

১৫ নভেম্বরের আদেশের ফলে, পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেডেই রয়ে গেছেন। সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা তিনটি টাইম স্কেল পেয়ে অষ্টম গ্রেডে বেতন পাবেন। জাতীয়করণকৃতরাও একই সুবিধা প্রাপ্য হবেন। প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘ দিন শিক্ষকতা শেষে পদোন্নতিপ্রাপ্তরা কি সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্তদের চেয়ে ওপরের গ্রেডে বেতন পাবেন? সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে আবার ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০ ও ২০১৩ সালে নিয়োগপ্রাপ্তরা অষ্টম গ্রেড পাচ্ছেন না। বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে টাইম স্কেল পাওয়া-না-পাওয়া নিয়ে। সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীরা জানান, ৯ মার্চ ২০১৪’র পর যারা টাইস স্কেল প্রাপ্ত হয়েছেন এবং ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫’র পর যারা টাইম স্কেল প্রাপ্য হয়েছেন, তারাও ১৫ নভেম্বরের আদেশে ক্ষুব্ধ।

পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের বঞ্চনার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহা: আবদুল আউয়াল তালুকদার বলেন, ১৫ নভেম্বরের আদেশে দীর্ঘ দিন শিক্ষকতা শেষে পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকেরা উন্নীত স্কেলের বেতন নির্ধারণী সুবিধা পচ্ছেন না। তাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদার ঘোষণা দেয়া হলেও তা পাননি, বেতন স্কেলের সুবিধাও তাদের কপালে জুটল না। এটা মানতে নারাজ প্রধান শিক্ষকেরা। তিনি বলেন, বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে অর্জিত সরকারি সুবিধা শুধু যেন ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ না থাকে। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগী ভূমিকা নেয়া না হলে, হিতে বিপরীত হবে।

একাধিক প্রধান শিক্ষক বলেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি করা না হলে, বেতন নির্ধারণের সব ধরনের জটিলতা এড়ানো সম্ভব। এটিকে সরকারের নীতিনির্ধারকদের বিবেচনায় নিতে হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা হচ্ছে ৬৩ হাজার ৬০১। এসব স্কুলে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ৫০ হাজারের মতো। অন্য সব স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। এ ৫০ হাজারের মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি হচ্ছেন পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ১৫ হাজার ও জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলোয় প্রধান শিক্ষক রয়েছেন ১০ হাজারের কাছাকাছি।

২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা এবং বেতন স্কেল দুই ধাপ উন্নীত করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকদের এক ধাপ বেতন স্কেল উন্নীত করার ঘোষণা দেন; কিন্তু প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদার ভিত্তিতে বেতন স্কেল নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

এ নিয়ে প্রায় তিন বছরের দাবি-আন্দোলন, দফায় দফায় অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে চিঠি চালাচালি ও শিক্ষক নেতাদের সাথে বৈঠকের পর গত ১৫ নভেম্বর যে আদেশ জারি করা হয়েছে, তাতে সংশ্লিষ্টদের বৃহৎ অংশই বাদ পড়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ থেকে যে আদেশ জারি করা হয়েছিল তাতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদের বেতন স্কেল উন্নীতকরণের ফলে উন্নীত বেতন স্কেলে বেতন নির্ধারণের জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে সরকার নিম্নরূপ নীতিমালা অনুসরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

ক) বেতন স্কেল উন্নীত হওয়ার পূর্বে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকগণ যিনি যে সংখ্যক টাইম স্কেল পেয়েছেন/প্রাপ্য হয়েছেন, উন্নীত বেতন স্কেলের উপরে সেই সংখ্যক টাইম স্কেল গণনা করে বেতন স্কেল উন্নীত করার অব্যবহিত পূর্বে তার সর্বশেষ আহরিত/প্রাপ্য মূল বেতনের ভিত্তিতে বেতন স্কেল উন্নীতকরণের তারিখে সরাসরি নির্ণীত সর্বশেষ স্কেলের কোন ধাপে মিললে ঐ ধাপে, ধাপে না মিললে বি.এস.আর. ১ম খণ্ডের ৪২(১)(২) বিধি অনুসরণে নিম্নধাপে বেতন নির্ধারণ করে অবশিষ্ট টাকা পি.পি. হিসেবে প্রদান করতে হবে এবং উক্ত পি.পি পরবর্তী বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিতে সমন্বয়যোগ্য হবে।

খ) বেতন স্কেল উন্নীত হওয়ার পূর্বে পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকগণ প্রধান শিক্ষক পদে যিনি যে সংখ্যক টাইম স্কেল পেয়েছেন/প্রাপ্য হয়েছেন, উন্নীত বেতন স্কেলের উপরে সেই সংখ্যক টাইম স্কেল গণনা করে বেতন স্কেল উন্নীত করার অব্যবহিত পূর্বে তার সর্বশেষ আহরিত/প্রাপ্য মূল বেতনের ভিত্তিতে বেতন স্কেল উন্নীতকরণের তারিখে সরাসরি নির্ণীত সর্বশেষ স্কেলের কোন ধাপে মিললে ঐ ধাপে, ধাপে না মিললে বি.এস.আর. ১ম খণ্ডের ৪২(১)(২) বিধি অনুসরণে নিম্নধাপে বেতন নির্ধারণ করে অবশিষ্ট টাকা পি.পি হিসেবে প্রদান করতে হবে এবং উক্ত পি.পি পরবর্তী বার্ষিক বেতন বৃদ্ধিতে তা সমন্বয়যোগ্য হবে।

গ) উক্ত পদ্ধতিতে বেতন নির্ধারণকালে মাঝখানে কোনো বেতন স্কেল/গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করা যাবে না।-সূত্র: নয়াদিগন্ত

গো নিউজ২৪/এবি

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে