ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিউ ইয়র্কে অদ্ভুত ভিক্ষুকদের উৎপাত


গো নিউজ২৪ | অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭, ০৭:৫৬ পিএম
নিউ ইয়র্কে অদ্ভুত ভিক্ষুকদের উৎপাত

নিউ ইয়র্কের এই ভিক্ষুকদের মতো এমন সুখী চেহারার ভিক্ষুক মনে হয় পৃথিবীতে কোথাও মিলবে না। তদুপরি এমন সুন্দর চেহারাও। ভিক্ষুকদের চেহারায় যেমন একটা আরোপিত দুঃখী ভাব থাকে, তাদের অবয়বে তার সামান্যতম লেশ নেই। চেহারার মধ্যে কেমন বেপরোয়া, নির্লজ্জ ভাব। কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য মনে হবে চাঁদা চাইতে নেমেছে তারা। 

জ্যাকসন হাইটসের সেভেন্টি ফোর স্ট্রিটে কিছুকাল ধরে এই ধরনের ভিক্ষুকদের উৎপাত বেড়েছে। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে তারা একটা কাগজের ঠোঙ্গা জাতীয় জিনিস সামনে এনে ধরে। মানে ডলার দাও। কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে এসে তাদের দেখিয়ে ভিক্ষা চায়। ভিক্ষায় প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খায়। চিপস খায়। বেশ একটা পিকনিক ভাব!

সেদিন জ্যাকসন হাইটসের সেভেন্টি ফাইভ স্ট্রিটে এক রেস্টুরেন্টে বসে স্যুপ খাচ্ছি, দেখি একদল ভিক্ষুক এসে হাজির। তারা টেবিলে টেবিলে গিয়ে ভিক্ষা চাইছে।

নিউ ইয়র্কের সাধারণ ভিক্ষুকরা কিন্তু এমন না! ট্রেনে এসে কেউ কেউ বেশ তেজদ্বীপ্ত বক্তৃতা দেয়। তারপর ভিক্ষা চায়। বেশির ভাগ রাস্তায় ‘হোমলেস’ ‘হাংরি’ এসব লিখে উদাস-নির্লিপ্ত চেহারা নিয়ে বসে থাকে। এই ভিক্ষুকদের শিকড় কোথায় এই নিয়ে নানাজনে নানা কথা বলে! কেউ বলে, ওরা নিউজার্সি থেকে দামি গাড়ি হাঁকিয়ে আসে। মিশরীয় এসব পরিবারের একটা ব্যবসা হলো ভিক্ষা করা। অনেকে বলে, সিরিয়ান উদ্বাস্তু। একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, বাড়ি কোথায়? ও বলল, ‘বুলগেরিয়া’।

বসনিয়া, সারাইয়েভা, কসোবা, আলবেনিয়ানদের ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে বললো, সেদিন আমার এক পরিচিত জ্ঞানী মানুষ খাইরুল আনাম। তিনি জানালেন, নারী-পুরুষ ভেদে ওই অঞ্চলের সব মানুষ দেখতে খুব সুন্দর হয়। আমেরিকার মিডওয়েস্টে প্রায় সব মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় কিছু ভিক্ষুকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কয়েক বছর আগে এক মিটিং শেষ করে বের হয়ে দেখি এক সুন্দরী তরুণী ভিক্ষা চাইছে। আমাদের মধ্যে একজন ওকে বাসায় কাজের প্রস্তাব দিল। কিন্তু মেয়েটি ওর কথায় কানই দিল না। কয়েক পা সরে গিয়ে আবার সে ভিক্ষা চাইতে লাগলো। এই ভিক্ষুকদের দেখে মনে হবে না এদের ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট হয়েছে।’ আসলে এদের স্বভাবটাই এরকম। হতে পারে ওরা যেসব এলাকা থেকে এসেছে, তারা শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে, বিশেষ করে নারীশিক্ষার কোন প্রসার নেই, স্বামীরা হয়তো যুদ্ধে মারা গেছে, সেটা দেশকে ভালোবেসে হোক কিংবা গাদ্দারি করেই হোক, তারপর থেকে ওরা হয়তো উদ্বাস্তু, একটা মেয়াদ পার হওয়ার পরে ওরা হয়তো আর কোনো সাহায্য পাচ্ছে না। তাই তারা হয়তো ভিক্ষা করে। চাকরি করে না, কারণ সেটা করার যোগ্যতা কিংবা মনোবৃত্তি ওদের নেই। ওরা ভিক্ষা করাটাকে একটা চাকরি মনে করে।

পরিচয় যা-ই হোক, ওদের ভিক্ষা করার ধরণটা খুব বিরক্তিকর। যে দেশে কাজের কোনো অভাব নেই, সেখানে এমন সুখী সুখী, স্বাস্থ্যবান মানুষদের ভিক্ষা করতে দেখলে মেজাজ তো খারাপ হবেই।

আমি যখন খুব ভোরে ছোট ছেলেকে স্কুল বাসে দিতে বাড়ির নিচে নামি, একটা চীনা বয়স্ক মহিলাকে প্রায় প্রতিদিন রাস্তায় দেখি। সে ফুটপাতে রাখা ময়লার ব্যাগ থেকে পানির বোতল টোকায়। তারপর সেই বোতলে গ্লু দিয়ে স্টিকার লাগায়। কি পরম ধৈর্যের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে কাজটা করে যায় ওই বৃদ্ধা, দেখে খুব অবাক লাগে। জানি না, ওই পুরনো বোতল বিক্রি করে সে কয় সেন্ট আয় করে! কাজটা খুব নোংরা, নিম্ন প্রকৃতির… তবু কাজ তো কাজই! ভিক্ষা তো সে করে না।

 

গো নিউজ২৪/আ ফ ম 

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর
বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত সহজ করতে চালু হচ্ছে অন অ্যারাইভাল ভিসা

বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত সহজ করতে চালু হচ্ছে অন অ্যারাইভাল ভিসা

পাকিস্তানের নির্বাচনে জিতে যাচ্ছে ইমরান খান-সমর্থিত স্বতন্ত্ররা

পাকিস্তানের নির্বাচনে জিতে যাচ্ছে ইমরান খান-সমর্থিত স্বতন্ত্ররা

একসঙ্গে মরতে এসে সরে গেলেন প্রেমিকা, ট্রেনে কেটে প্রেমিকের মৃত্যু

একসঙ্গে মরতে এসে সরে গেলেন প্রেমিকা, ট্রেনে কেটে প্রেমিকের মৃত্যু

তোশাখানা কী, চাঞ্চল্যকর যে মামলায় স্ত্রীসহ ফেঁসে গেলেন ইমরান খান

তোশাখানা কী, চাঞ্চল্যকর যে মামলায় স্ত্রীসহ ফেঁসে গেলেন ইমরান খান

জাপানে ২৪ ঘণ্টায় ১৫৫টি ভূমিকম্পের আঘাত

জাপানে ২৪ ঘণ্টায় ১৫৫টি ভূমিকম্পের আঘাত

ডালিম দিয়ে তৈরি আফগানিস্তানের পানীয় বিশ্বজুড়ে আলোচনায়, কিনছে আমেরিকাও

ডালিম দিয়ে তৈরি আফগানিস্তানের পানীয় বিশ্বজুড়ে আলোচনায়, কিনছে আমেরিকাও