ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ধর্ষণের পর দুই নারীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৭, ০৯:২০ এএম
ধর্ষণের পর দুই নারীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

রাজধানীর কদমতলীতে পৃথক ঘটনায় দুই নারীকে ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে পাঁচ আসামি। এরা হল- জামাল খান পাটোয়ারী, রাজীব হাওলাদার, জাকির শিকদার, রফিকুল ইসলাম শামীম ও মফিজ উদ্দিন সাগর। 

কদমতলী থানার দুটি টিম মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে সাভার, ফতুল্লা, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর ও কদমতলীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে। দুটি ঘটনায় ঘাতকরা ছিল নিহতদের এক সময়ের কলিগ। গ্রেফতার তিনজনের দু’দিনের এবং দু’জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

১৮ জুন কদমতলীর পূর্ব জুরাইন নামা শ্যামপুর এলকার একটি বাসা থেকে গৃহবধূ পারুল বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পারুলের ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীদের আসামি করে মামলা করেন। অন্যদিকে ১০ জুলাই পূর্ব জুরাইন শিশু কবরস্থান এলাকার একটি বাসা থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় ফরিদা নামে এক গার্মেন্ট কর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিচয় না পাওয়ায় কদমতলী থানার এসআই মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দুটি ঘটনাই ছিল ক্লুলেস। পরে জানা যায়, ধর্ষণের পর তাদের হত্যা করা হয়। পাশাপাশি বাসা থেকে মালামাল লুটে নেয়া হয়। পারুল হত্যার তদন্তভার দেয়া হয় এসআই এনায়েত করিমকে। ফরিদা হত্যার ঘটনাটি তদন্ত করেন এসআই মফিজুর রহমান। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারদের মধ্যে পারুল হত্যায় জড়িত আছে জামাল ও রাজিব। আর ফরিদা হত্যায় জড়িত জাকির, শামীম ও সাইফুল।

পারুল হত্যার বর্ণনা : পারুল হত্যায় গ্রেফতার জামাল ও রাজিব একে অপরের বন্ধু। রাজিব একসময় পারুলের সঙ্গে একটি কীটনাশক ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করত। পারুলের স্বামী গাড়িচালক লিটন প্রায়ই বাসার বাইরে থাকত। বিষয়টি রাজিব জানত। জামাল ও রাজিব মিলে প্রথমে পারুলের বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র ও টাকা-পয়সা লুট করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৮ জুন ইফতারের পর পারুলকে ফোন করে রাজিব তার (পারুলের) বাসায় বেড়াতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। 

সে অনুযায়ী আম, পেয়ারা, হালিম ও দুটি (পানীয়) বোতল কিনে জামাল ও রাজিব পারুলের বাসায় যায়। বোতল ও হালিমের মধ্যে তারা ঘুমের ওষুধের গুঁড়া মিশিয়ে নেয়। এরপর পারুলের বাসায় কৌশলে গল্পের ফাঁকে পারুলকে স্প্রিড আর হালিম খাওয়ায়। কিছুক্ষণের মধ্যে পারুল ঘুমিয়ে গেলে প্রথমে রাজিব ও পরে জামাল তাকে ধর্ষণ করে। 

ঘুমের ঘোরে পারুল আওয়াজ করলে জামাল তার গলা চেপে ধরে। রাজিব মুখ চেপে ধরে। পারুল কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়লে দু’জন পারুলের মুখ ও হাত বেঁধে ফেলে। পারুলের মৃত্যু নিশ্চিত হলে জামাল ও রাজিব বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় তারা পারুলের ব্যবহৃত স্যামসং মোবাইল ফোন, একটি স্বর্ণের নাকফুল ও বাসায় থাকা টাকা নিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে পারুলের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে।

ফরিদা হত্যার বর্ণনা : গার্মেন্ট কর্মী ফরিদা হত্যার ঘটনায় গ্রেফতাররা পুলিশকে জানিয়েছে, শামীম ও সাগর একসময় ফরিদার সঙ্গে একই গার্মেন্টে (পশ্চিম জুরাইন এলএল অ্যাপারেলস) চাকরি করত। স্বামী মারা যাওয়ার কারণে ফরিদা একা থাকত। এ বিষয়টি সাগর ও শামীম জানত। তাই ফরিদার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে জাকিরকে নিয়ে সাগর এবং শামীম পরিকল্পনা করে। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৭ জুলাই রাত ১১টার দিকে সাগর, শামীম ও জাকির ফরিদার ঘরে যায়। একপর্যায়ে ফরিদাকে ধর্ষণ করে শামীম। পরে জাকির ও সাগর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর সাগর তার সঙ্গে থাকা একটি চাকু ফরিদার মুখে ঢুকিয়ে দেয়। ফরিদার ঘরে থাকা শিলপাটা দিয়ে ফরিদার মাথায় আঘাত করে শামীম। ফরিদার গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে জাকির। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তিনজন ফরিদার ঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়।

পুলিশের বক্তব্য : কদমতলী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী যুগান্তরকে জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (শ্যামপুর জোন) ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে কদমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজু মিঞা এবং এসআই এনায়েত করিম ও এসআই শেখ মফিজুর রহমানের সমন্বয়ে দুটি টিম গঠন করা হয়। আসামিদের গ্রেফতার করতে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে টিমের সদস্যরা। 

ওসি বলেন, ‘পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন দুটি টিমের কার্যক্রম তদারকি করেন। আমি নিজেও অভিযানগুলোতে ছিলাম।’ তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিরুল হায়দার চৌধুরীর আদালতে হাজির করে বৃহস্পতিবার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তারা। আদালত জামাল ও রাজিবের তিন দিন এবং জাকির, শামীম ও সাইফুলের দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।-যু.

গো নিউজ২৪/এএইচ

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে