ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ধর্ষণ করেও ক্ষান্ত হয়নি, ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন সবাই


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৭, ০৯:০৬ এএম
ধর্ষণ করেও ক্ষান্ত হয়নি, ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন সবাই

একটি নামি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহ্‌ মো. মুজাহিদ। রাজধানীর অভিজাত পরিবারের গৃহশিক্ষক ছিল। এই সুযোগে ওই পরিবারের গৃহবধূকেই ধর্ষণ করে। শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হয়নি সে। ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করেছে। নিজেই মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে ধর্ষিতার স্বামীর কাছে। এমনকি বিশ্বাস করানোর জন্য পেনড্রাইভে করে তা পাঠিয়ে দিয়েছে কৌশলে। ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন স্বজনরা। ধর্ষক মুজাহিদ ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে  

জিম্মি করে ফেলে তাদের। বিশাল চক্রের মাধ্যমে দাবি করে কোটি টাকা। একদিকে এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ তার মোবাইল থেকে এসব ভিডিও উদ্ধার করে। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু ওই গৃহবধূই নয়, একাধিক নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের ব্লাকমেইল করেছে এই যুবক। এদিকে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় ১৬৪ ধারায় আদালতে  জবানবন্দি দেন গাড়িচালক হাসান উল্লাহ। গত ২৫শে এপ্রিল সাক্ষী হিসেবে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এতে তিনি ওই দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন। এছাড়া ১৬১ ধারায় ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন গৃহবধূ নিজেও।

সূত্র জানায়, গৃহশিক্ষক মুজাহিদ গৃহবধূকে ধর্ষণের পর তার স্বামীর কাছে একটি মেসেজ পাঠায়। সেই মেসেজে লেখেছে- ভাই, আমি ভাবিকে বিদেশি ওষুধ খাইয়ে সেক্স করেছি। তিন ঘণ্টা ধরে সেক্স করেছি। দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন। না হলে তার কিডনি ড্যামেজ হয়ে যাবে। 

পরবর্তীতে সেটা বিশ্বাস করানোর জন্য আরো একটি মেসেজ পাঠিয়েছিল ওই গৃহশিক্ষক। তাতে লেখেছে- আপনার বাসার দারোয়ানের বেডের নিচেই একটি কালো রংয়ের পেনড্রাইভ রেখে আসছি। সেই পেনড্রাইভে ধর্ষণের ভিডিও আছে। পরে সেখান থেকে নির্যাতিতার স্বজনরা পেনড্রাইভটি সংগ্রহ করেন। সেই ভিডিও দেখে তারা আঁতকে ওঠেন। এরপরও মান-সম্মানের কথা ভেবে বিষয়টি চেপে যান তারা। কিন্তু ওই পর্যন্তই থেমে থাকেনি ধর্ষক মুজাহিদ। সে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে এক কোটি টাকা দাবি করে। 

পরে এ ব্যাপারে ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ধর্ষিতার স্বামী। মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়। এরমধ্যে মুশাহিদ জামিনে বেরিয়ে আসে। এদিকে ওই মামলা তুলে নিতেও হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে মুজাহিদ গ্যাং। এ ব্যাপারে বাদী ভাটারা থানায় গত ২০শে জুন একটি মামলাও দায়ের করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৮ই জুন তার মোবাইলে ফোন করে মামলা তুলে না নিলে জীবনে শেষ করে দেয়ার জন্য হুমকি দেয়। বাদী উল্লেখ করেন এই অবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ড্রাইভার তার জবানবন্দিতে বলেন, ওইদিন তিনি ডিউটি করার জন্য যান। সাহেব (ভিকটিমের স্বামী) তখন হাসপাতালে ছিলেন। বিকাল ৪টার দিকে লজিং মাস্টার মুজাহিদ সাহেবের ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাসার নিচেই পার্কিংয়ে আসে। মুজাহিদ গাড়ি বের করতে বলে। সে (মুজাহিদ) জানায়, বাচ্চাদের নিয়ে তিনশ’ ফিট রাস্তার দিকে বেড়াতে যাবে। 

জবানবন্দিতে ড্রাইভার বলেন, তিনশ’ ফিট রাস্তার দিকে যখন যাচ্ছিলাম তখন দু’জন ব্যক্তি গাড়ি থামানোর জন্য সিগন্যাল দিলে মুজাহিদ আমাকে গাড়ি থামাতে বলে। মুজাহিদ ও নজরুল তাদের ভাই সম্বোধন করে গাড়িতে উঠতে বললে তারা গাড়িতে ওঠে। আমরা ইসাপুরার দিকে যাই। ইসাপুর লোকশূন্য এলাকা। ইসাপুরায় গিয়ে দেখি, ৫-৬ জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। মুজাহিদ আমাকে সেখানে থামতে বলে। আমি দাঁড়ালে লোকগুলো দৌড়ে আসে। তারা আমাকে ও বাচ্চাদের জিম্মি করে। মুজাহিদ, ওয়ালিদ, নজরুল সেখান থেকে চলে যায়। আনুমানিক ২ ঘণ্টা পর জিম্মিকারীদের একজনের কাছে একটা ফোন কল আসে। তারা বলে, বস কাজ ওকে। তাদের কি ছেড়ে দেবো? 

ড্রাইভার জানান, এরপর তারা আমাদের ছেড়ে দিলে জলদি বাচ্চাদের নিয়ে বাসায় চলে আসি। বাসায় এসে দেখি ম্যাডাম কাঁদছে। আমি ম্যাডামকে জিম্মি হওয়ার কথা জানাই। ম্যাডাম আরো কান্নাকাটি করে। আমি সাহেবের বাচ্চাদের বাসায় রেখে এবং গাড়ির চাবি দিয়ে বাসায় চলে যাই। পরে স্যারকে বিষয়টি অবগত করি।

ওইদিনে গৃহবধূর সঙ্গে ধর্ষক গৃহশিক্ষক যে ঘটনা ঘটিয়েছে তারও জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত। ১৬১ ধারায় দেয়া নির্যাতিতা ওই গৃহবধূ জানান, মুজাহিদ আমার ছেলে-মেয়েকে পড়াতো। ঘটনার দিন আমার স্বামী এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ওইদিন মুজাহিদ আমার ছেলে-মেয়ে এবং ড্রাইভার হাসানকে নিয়ে তিনশ’ ফিট রোডে ঘুরতে যায়। যাওয়ার ৪০-৪৫ মিনিট পর মুজাহিদ বাসায় একা ফিরে আসে। তখন তার হাতে একটি কোল্ড ড্রিংকস ছিল। এটা আমার হাতে দিয়ে খেতে বললে সেটা খাই। 

খাওয়ার পর মাতালের মতো হয়ে যাই। তখন মুজাহিদ আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে ভিডিও করে। সেটা দেখিয়ে আমাকে বলে যে, টাকা না দিলে আমার ছেলে- মেয়েকে ছাড়বে না এবং ভিডিও স্বামীকে দেখানোর হুমকি দেয়। জবানবন্দিতে ভিকটিম বলেন, আমি মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে লকারের চাবি দিয়ে দিই। পরে মুজাহিদ লকার থেকে টাকা, ৫টি চেক নিয়ে নেয় যাতে আমাকে স্বাক্ষর করায়। তার কাছে থাকা তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। সে জানায়, আমি যদি আরো টাকা না দিই, তাহলে ভিডিও আমার স্বামীকে দেখিয়ে দেবে। 

এ ঘটনা স্বামীকে বলে দিই। ঘটনা শোনার পর আমার স্বামী মুজাহিদকে ফোন করে। মুজাহিদ আমার স্বামীকে বলে, যদি তাকে এক কোটি টাকা না দেয়া হয় তাহলে তার স্ত্রীর নগ্ন ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে। গৃহবধূ বলেন, আমার স্বামী মুশাহিদ ও জুবায়েরের নিকট আপসের জন্য ফোন করে। ওরাও আমার স্বামীকে ব্লাকমেইল করতে চেষ্টা করে। এরপর আমার স্বামী কোনো উপায় না পেয়ে থানায় গিয়ে মামলা করে। ভিকটিমের এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রণব কুমার হুই।মা.

গো নিউজ২৪/এএইচ

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে