আজ আবার সেই ২০ তারিখ। ঠিক ২ মাস আগে এই দিনেই কুমিল্লার সেনানিবাস এলাকায় ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছিল নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে। তদন্ত এবং ময়নাতদন্ত নিয়ে নানা নাটকের পর ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়া ছাড়া হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। বরং সিআইডির সঙ্গে ফরেনসিক কমিটির রশি টানাটানিতে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেছে। তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সিআইডির কাছে চিঠি দিয়েও ডিএনএ প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে পারেনি।
গতকাল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম আদালত থেকে ডিএনএ প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ডকে পরামর্শ দিয়ে চিঠি দেন। মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, এ পরিস্থিতিতে বোর্ডের সদস্যরা বৈঠকে বসবেন।
আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে ডিএনএ প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেবেন। কবে নাগাদ দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়া বোর্ড কিছুই করবে না। অন্যদিকে সিআইডি থেকে বলা হচ্ছে আদালতের অনুমতি ব্যাতীত ডিএনএ রিপোর্ট দেওয়া যাবে না। এভাবেই চলছে রশি টানাটানি। এদিকে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন কেন সঠিক দেওয়া হলো না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।
তবে সিআইডির তদন্ত নিয়ে এখন পর্যন্ত তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। ডিএনএ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর বলা হয়েছিল তা সন্দেভাজনদের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, ডিএনএ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলানো সময়ের ব্যাপার। এটা হুট করে করা সম্ভব নয়। একই প্রসঙ্গে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ বলেন, “তনু হত্যার সঙ্গে যাদের আমরা সন্দেহ করছি, তাদের সবার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে মেলানো হবে।
” তনুর মায়ের দাবি, সার্জেন্ট জাহিদ ও সিপাহি জাহিদ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এদের ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাহার আকন্দ বলেন, “আমরা সাসপেক্ট সবাইকেই এর আওতায় আনব।” এদিকে এই নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল সারাদেশ। এখন তা অনেকটাই ম্রিয়মান। যদিও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কিছু কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে। অনলাইনে অব্যাহতভাবে প্রতিবাদ চলছে। তনুর মা-বাবা এত বড় শোক বুকে চেপে বেঁচে আছেন মেয়ে হত্যার বিচার দেখার জন্য। তদন্তের এত দীর্ঘসূত্রীতায় অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
গো নিউজ২৪/জা আ/ এস এম
