ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে গরমিল


গো নিউজ২৪ | স্টাফ করেসপন্ডেন্ট প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০১৭, ০৩:৫৮ পিএম আপডেট: অক্টোবর ১৩, ২০১৭, ১০:০৭ এএম
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে গরমিল

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপত্র মূল্যায়নে গরমিল পাওয়া গেছে। ‘গ’ ইউনিটের উত্তরপত্র মূল্যায়নের ভুল উত্তরকে সঠিক করা হয়েছে এবং সঠিক উত্তরকে ভুল ধরা হয়েছে। সানজানা উল্লাহ তৈবা নামে এক ভর্তি পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের পর বিষয়টি ধরা পড়েছে। হাতে পুনঃনিরীক্ষণে উত্তরপত্রে প্রশ্নগুলো ধরে ধরে ‘টিক’ চিহ্ন দিয়ে সঠিক এবং ‘ক্রস’ দিয়ে ভুল চিহ্নিত করা হয়।

পুনঃনিরীক্ষণে ওই কপিতেই মোট নম্বর দিয়ে দেয়া হয়, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল এবং পুনঃনিরীক্ষণের ফল একই থাকে।

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নোত্তরের তৈবার ওই উত্তরপত্রের একটি ছবি হাতে পাওয়ার পর তা ধরে অনুসন্ধান চালালে উত্তরপত্র মূল্যায়নে গরমিল ধরা পড়ে। এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর হিসেবে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ভর্তি কমিটি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটিতে যেসব উত্তর জমা পড়েছে, তার সঙ্গেও তৈবার উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নে মিল পাওয়া যায়নি। এই পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও পুনঃমূল্যায়ন করে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল ও পুনঃনিরীক্ষণের কপিতে দেখা যায়, এই শিক্ষার্থী বাংলায় ১৪.৪০, ইংরেজিতে ১১.০৪, একাউন্টিংয়ে ৪.০৮, ম্যানেজমেন্টে ৫.৫২ এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ে ২.৬৪ নম্বর পেয়েছেন। তার মোট নম্বর হয়েছে ৩৭.৬৮।

কিন্তু কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটিতে যাওয়া সঠিক উত্তরগুলোর সঙ্গে তৈবার উত্তরপত্র মেলালে ওই শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর দাঁড়ায় বাংলায় ১৭.২৮, ইংরেজিতে ১৮.২৪, একাউন্টিংয়ে ১৮.৪৮, ম্যানেজমেন্টে ১৪.৪ এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ে ৮.৪; তার সর্বমোট নম্বর হয় ৭৬. ৮। এই নম্বর পেলে মেধাতালিকায় চলে আসতেন সানজানা উল্লাহ তৈবা।

গ ইউনিটের পরীক্ষায় ছয়টি বিষয়ের মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, অ্যাকাউন্টিং ও ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে উত্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক।এর সঙ্গে বিকল্প হিসেবে ফাইন্যান্স ও মার্কেটিংয়ের যে কোনো একটির বিষয়ের উত্তর দিতে হয়।প্রতি বিষয়ে ২০টি করে মোট ১০০টি প্রশ্ন। আর প্রতি প্রশ্নের সঠিক উত্তর জন্য ১.২০ নম্বর এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৪ নম্বর কাটা যায়।

বাংলার  ২০ নম্বর প্রশ্নে অহরহ-এর সঠিক সন্ধিবিচ্ছেদ জানতে চাওয়া হয়, তৈবা এর সঠিক উত্তর অহঃ+অহ-এ বৃত্ত ভরাট করলেও তা ভুল উত্তর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৭ নম্বর প্রশ্ন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গ্রন্থ কোনটি? উত্তরের অপশনে ছিল- পল্লী সমাজ (শরৎচন্দ্র), ছায়ানট (কাজী নজরুল ইসলাম), গৃহদাহ (শরৎচন্দ্র) ও কালান্তর।

তৈবা সঠিক উত্তর কালান্তরের বৃত্ত ভরাট করলেও পুনঃনিরীক্ষণে সেখানে ‘ক্রস’ চিহ্ন দেওয়া হয়েছে। ১৬ নম্বর প্রশ্ন: সম্বোধন পদে কোন যতিচিহ্ন বসে? সঠিক উত্তর ‘কমা’র বৃত্ত ভরাট হলেও সেখানে ক্রস চিহ্ন দিয়েছেন নিরীক্ষকরা।

১৩ নম্বর প্রশ্নে সঠিক বানান জানতে চাওয়া হয়, পরিস্কার, শ্রদ্ধাভাজনীয়াষু, স্নেহাশীষ ও সংস্রব-এর মধ্যে। এখানে শ্রদ্ধাভাজনীয়াষুতে বৃত্ত ভরাট করা হলেও সেটিকে সঠিক উত্তর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যদিও বাংলা একাডেমির বানান অভিধান অনুযায়ী তা ভুল।

ইংরেজিতে ১৬ নম্বর প্রশ্নটি Lieutenant শব্দটির সঠিক বানান জানতে চাওয়া হয়। তৈবা এর সঠিক উত্তর দিলেও তা ভুল ধরা হয়েছে।

একইভাবে ইংরেজির ১, ৬, ১১ ও ১৩ নম্বর প্রশ্ন, হিসাব বিজ্ঞানের ১, ৩, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৫ ও ২০; ম্যানেজমেন্টের ১, ২, ৪, ৬, ৭, ৯, ১৫ ও ১৮ এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিংয়ের ২, ৯, ১৩ ও ১৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর ভুল মূল্যায়ন হয়েছে। এই বিষয়গুলোতে মোট ১০০টির প্রশ্নে মধ্যে ৩৩টির মূল্যায়নেই ভুল হয়েছে।

শিক্ষার্থী সানজানা বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর ফল প্রকাশের পর সন্দেহ হওয়ায় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন বরাবর উত্তরপত্র পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করেন তিনি। পুনঃনিরীক্ষণেও ফলের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমি উত্তরগুলো সঠিক দাগালেও পুননিরীক্ষণেও সেগুলো ভুল বলে ক্রস চিহ্ন দেয়। এই শিক্ষার্থীর দাবি, তার এক বন্ধুর সঙ্গে তার উত্তর মিললেও ওই বন্ধু মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন।

উত্তরপত্র ভুল মূল্যায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক হাসিবুর রশিদ বলেন, আমরা উত্তরপত্র দেখি না, এটা ব্যবসায় অনুষদ দেখে।তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক ও অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবায়েতুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার বিকালে ফোন করলে তিনি বলেন, অভিযোগ ঠিক না। সাংবাদিকরা সব সময় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুন্ন করছে। এটা ঠিক না। দেখা করে এ বিষয়ে কথা বলতে বলেন তিনি। পরে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে গিয়ে ফোন করে দেখা করতে চাইলে তিনি আগামী রোববার যেতে বলেন।

এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর গ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। ২৮ হাজার ২৪৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন, তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হন চার হাজার ১৬৮ জন।

গোনিউজ২৪/কেআর

 

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর
রমজান মাসের কোন কোন দিন প্রাইমারিসহ স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে

রমজান মাসের কোন কোন দিন প্রাইমারিসহ স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে

‘শরীফার গল্প’ রেখেই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বইয়ে হবে সংশোধন

‘শরীফার গল্প’ রেখেই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বইয়ে হবে সংশোধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপ-উপাচার্য হলেন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপ-উপাচার্য হলেন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার

‍‍`শরিফ থেকে শরিফা‍‍` ইস্যুতে সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী

‍‍`শরিফ থেকে শরিফা‍‍` ইস্যুতে সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী

৫ জেলার স্কুল বন্ধ

৫ জেলার স্কুল বন্ধ

সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি কি বাতিল, যা জানা গেল

সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি কি বাতিল, যা জানা গেল