ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ডিভোর্স শব্দটা শুনলেই গা ছমছম করে!


গো নিউজ২৪ | ফারজানা আক্তার প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০১৭, ১২:৫০ পিএম
ডিভোর্স শব্দটা শুনলেই গা ছমছম করে!

‘ডিভোর্স’ শব্দটা কেমন জানি! শুনলেই আমার গা ছমছম করে উঠে। তারপরও দেখা যায় গা ছমছম করা এ শব্দটা দু’ধরনের মানুষের জন্য আনন্দের। এক. যারা বিয়ে নামের দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি চান। দুই. আশেপাশের ভাবিরা, মানে মর্জিনা, জরিনা, টুনির মায়ের মতো যারা বেশকিছুদিনের জন্য মুখরোচক একটা আলোচনার টপিকস পেলেন আরকি।

তবে মাঝে মাঝেই ভাবি, বিয়ে কি সত্যি কোনো দায়বদ্ধতা? অন্য কারো কথা হয়তো বলতে পারবো না, তবে নিজের কাছে এর একটা ব্যাখ্যা আছে। আমি মনে করি, বিয়ে সত্যিই কিছুটা দায়বদ্ধতা, তবে পুরোপুরি দায়বদ্ধতা বলতে পারবো না।

আমি যে দায়বদ্ধতার কথা বলছি তা দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে ধরলে বোঝা বলে মনে হবে। মন থেকে তখন সেই কাজটাকে কখনোই ভালোবাসতে পারবেন না।

ডিভোর্সে যে অভিযোগটা সব থেকে বেশি শুনতে হয় সেটা হচ্ছে, “ও আগের মতো নেই”! এ কথাটা আমি নিজেও বলি যে, তুমি ওই শুক্রবারে আমাকে ১০টা চকলেট কিনে দিলে, এই শুক্রবারে কেন ৫টা দিলে! তোমার মধ্যে অনেক পরিবর্তন চলে এসেছে... ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি শুধুমাত্র রূপক অর্থে একটা উদাহরণ দিলাম।

আমাদের ম্যাক্সিমাম সমস্যা তো এমনই হয়। অনেকের চারিত্রিক-মানসিক পরিবর্তন হয়, তখন আসলে ডিভোর্সই একমাত্র সমাধান। তবে আজকাল ডিভোর্স এতোটা পান্তাভাত হয়ে গেছে যে, চকলেটের মতো ঘটনার জন্যও আমরা ডিভোর্সের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি খুব সহজেই।

চকলেটের প্রসঙ্গ নিয়েই আরেকটু কথা বলি। গেল শুক্রবার আপনার সঙ্গীর কাছে ১০টা চকলেট কিনে দেবার টাকা ছিলো; এই শুক্রবার হয়তো ওতো টাকা নেই অথবা দোকানে মাত্র ৫টা চকলেটই ছিলো। আপনার সঙ্গী হয়তো অন্য কোনো দোকানে খুঁজে দেখেনি, হয়তো কিছুটা ক্লান্তও ছিলেন। একটা ঘটনার পেছনে হাজারটা কারণ থাকতে পারে। কাউকে অপবাদ দেবার আগে, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করার আগে সঠিক কারণটা সামনে নিয়ে আসা উচিত।

বিয়ে শব্দটাতে অনেকগুলো মানুষের দোয়া-ভালোবাসা আর দুটো মানুষের স্বপ্নের পাহাড় যুক্ত রয়েছে। তেমনি ডিভোর্স শব্দটাতে আরো বেশি মানুষের ঘৃণা, তিরস্কার, হাসি-তামশা, ঠাট্টা-মসকরা আর দুটো স্বপ্নভঙ্গ মানুষের হাহাকার রয়েছে।

দশ বছর আগে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ দুজন মানুষ যে স্বপ্ন আর পরিকল্পনা নিয়ে পথ হাঁটতে শুরু করেন, দশ বছর পর সেই একই সুর খুঁজলে তো সমস্যা। দশ বছর অনেকটা সময়, অ-নে-ক। এই দীর্ঘ সময়ে দুজনের প্রতি দুজনের আস্থা, বিশ্বাস, ভালোবাসা অনেক বেশি হয়ে যাবে। অন্যদিকে, স্বপ্ন আর জীবন সাজানোর পরিকল্পনার অনেক পরিবর্তন হবে। কেননা, সংসার মানে তো শুধু দুজনের নয়, এর সঙ্গে জড়িত আছে দুটো পরিবার, পরিবারের সদস্যরা।

যখন শুনতে হয় ১০, ১৫ বা ৩০ বছরের সংসার ভেঙে যাচ্ছে আর অভিযোগ উঠে তাদের মাঝে অবিশ্বাস বাসা বেঁধেছে, তখন সত্যিই অবাক হতে হয়। তাহলে এতো বছর তাদের মাঝে কী ছিলো? কেমন করে একসঙ্গে ছিলেন? অভ্যাসের জন্য নাকি অন্য কিছু? কী সেই অন্যকিছু?

আমার মাথায় এসব কিছুই ঢোকে না। ভালোবাসা? সেটা তো তাদের মাঝে দুর্লভ। আমার ছোট্ট মাথা বলে, দিন যতো যাবে ভালোবাসা ততো গভীর হবে। তবে আমার বড় বড় চোখ দেখে বড় বড় মানুষের দিন যতো যায়, তাদের ভালোবাসা ততো ঠুনকো হয়ে যায়!

লেখিকা: ওয়েব ডেভেলপার

মতামত বিভাগের আরো খবর
নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

নারীরা,মনের দাসত্ব থেকে আপনারা কবে বের হবেন?

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস ও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

সুচন্দার কষ্টে আমরাও সমব্যথী

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

প্রিন্টমিডিয়ার অন্তর-বাহির সংকট

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো দরকার যেসব কারণে

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সিলেটের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ