২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের আরব রাষ্ট্র কাতার। এ লক্ষ্যে ৮টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্টেডিয়ামও নির্মাণ করছে তারা। এর মধ্যে একটি বানানো হবে আরব মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী টুপি ‘গাহফিয়া’র আদলে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, রোববার দেশটির বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটি ওই স্টেডিয়ামের কথা ঘোষণা দিয়েছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে প্রতিবেশী দেশ সৌদি আরব, মিসর, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ নিয়ে চলছে সংকট। আর এই সংকটের মধ্যেই ব্যতিক্রমী নতুন ওই স্টেডিয়ামের কথা জানালো দেশটি।
বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থিত টুপির আদলে তৈরি ‘আল থুমামা’ স্টেডিয়ামটির নকশা করেছেন একজন কাতারি স্থাপত্যবিদ। এর আকৃতি হবে ঐতিহ্যবাহী আরবি টুপি ‘গাহফিয়া’র মতো। এই মাঠে বিশ্বকাপের একটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ৪০ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়ে খেলা দেখতে পারবেন এখানে।
বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির প্রধান হাসান আল-থাওয়াহাদি বলেন, এই নকশাটি আরব ও মুসলিমদের একতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হবে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য শ্রদ্ধাও জানানো হবে এই নকশার মধ্য দিয়ে। স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি একটি নতুন বন্দর ও মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে অবকাঠামো খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে কাতারি সরকার।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ মে কাতারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের কিছু তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যাওয়ার পর এ নিয়ে দেশটির সঙ্গে অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোর বিরোধ শুরু হয়। ৫ জুন ‘সন্ত্রাসবাদে সমর্থন’ দেয়ার অভিযোগ তুলে ছোট্ট এই দ্বীপ রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব এবং তার মিত্র মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন। অবরোধও দেয় তারা। পরে এই তালিকায় যুক্ত হয় মালদ্বীপ এবং লিবিয়া ও ইয়েমেনের পশ্চিমা সমর্থিত সরকার।
কাতার সরকার বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিতে চাইছে। তারা বোঝাতে চাইছে, আরব দেশগুলোর অবরোধ দিয়ে কাতারের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। তাছাড়া সন্ত্রাসবাদের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেখান থেকে নিজের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার একটি লক্ষ্যও আছে কাতারি প্রশাসনের।
মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন মতে, গত ২৩ মে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা হ্যাকিংয়ের পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। আর তার পরদিনই কাতার সরকারের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিকমাধ্যম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। হ্যাকাররা কাতারের সরকারি গণমাধ্যম কিউএনএ’র ওয়েবসাইটে একটি ভুয়া প্রতিবেদন যুক্ত করে দেয়।
এতে দেখা যায়, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলকে সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় টিকে থাকবেন কি না- তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ওই ঘটনায় আরব আমিরাত জড়িত বলে জানিয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।
গো নিউজ২৪/ আরএস