দিনাজপুর: আমেরিকান হলিবার্ড বাংলাদেশে টার্কি মুরগি নামে পরিচিত। এ টার্কি মুরগি পালনে ব্যাপক লাভবান হওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় এর প্রসার বেড়েই চলছে। আর এ টার্কি মুরগি পালন করে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য হ্যাচারীও গড়ে তুলেছেন ইকো এর্গোফার্ম-এর আরজুমান আরা।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জের গোলাপগঞ্জ ইউপির দাদন-মালিপাড়ার ব্যবসায়ী সাদনান এর স্ত্রী আরজুমান আরা নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন এ খামার। এখন তিনি প্রতি মাসে টার্কি মুরগির ১০০০ বাচ্চা বিক্রি করেন। বর্তমানে এক হাজার টার্কি মুরগী আছে। গতমাস থেকে এই টার্কি মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন। কমপক্ষে ১ লাখ টাকার অধিক টার্কি মুরগীর বাচ্চা বিক্রি করেন।
কম খরচে দ্রুত বর্ধনশীল এই পোল্ট্রি প্রজাতি পালন করে আরজুমান আরা অধিক লাভবান। শান্ত স্বভাবের টার্কি মুরগির মাংস খুব পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। অনেকে আরজুমান আরার গড়া ইকো এর্গো ফার্মটি দেখতে বা পরামর্শ নিতে যাচ্ছে। তিনিও চান বেকার যুবকেরা এ মুরগি চাষ করে সাবলম্বী হউক।
টার্কি মুরগির বাচ্চা (১ থেকে ৭ দিনের) বিক্রি ৩৫০টাকা এবং ১৫দিন বয়সের বাচ্চা ৫০০টাকায় বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন বয়সের এই মুরগির বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়।
আরজুমান আরা বলেন, “স্বামীর সাথে মালয়েশিয়ায় থাকাকালীন অবসরে ইন্টারনেটে টার্কি মুরগি পালন দেখি। পরে সেখানেও বিভিন্ন খামারে এ মুরগি পালন করতে দেখি। এরপর গেল বছরের আগস্ট মাসে নিজ বাড়িতে একশ টার্কি মুরগি কিনে পালন শুরু করি। এরপর আরও ৫শ’টি কিনে মুরগির খামার গড়ে তুলি। সেই থেকে এখন টার্কি মুরগির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজারে।”
এখন টার্কি মুরগির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর হ্যাচারি করছেন আরজুমান। তিনি খামারে প্রতিদিন ৩৫-৪০টা ডিম পান। দিন দিন ডিম পাওয়ার পরিমাণও বাড়ছে তার। ডিম থেকে ফোটানো বাচ্চা বিক্রি করেন। এছাড়া অন্যদের পালনে দিয়ে বাচ্চা বড় হলে তাদের থেকে কিনে নেন এবং সেগুলো ঢাকায় বিক্রি করেন।
তিনি আরও বলেন, “গত মাস থেকে বাচ্চা উৎপাদন এবং বিক্রি শুরু করেছি। গত মাসে চারজন কর্মচারীসহ খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। আর বাচ্চা বিক্রি করেছি ১ লাখ টাকার। তবে বিক্রির পরিমাণ দিন দিন বাড়বে। এটা অবশ্যই লাভজনক।”
শান্ত স্বভাবের টার্কি মুরগির মাংস খুব পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। একটি টার্কি মুরগির ওজন ৪ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রতিটি মোরগ ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর একটি টার্কি মুরগির বিক্রয়মূল্য ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। টার্কি মুরগি যে কেউ বাসাবাড়িতে পালন করতে পারেন। কারণ এটা লাভজনক।
টার্কি মুরগির রোগ কম হয় এবং খাবারও খুব কম খায়। এরা খাবারের মধ্যে অন্য মুরগির মতোই পোল্ট্রি ফিট খায়। তবে বাড়তি শুধু শাকসবজি খায়।
গোনিউজ২৪/পিআর