পৃথিবীর আলো বাতাসই নবজাতকটির জন্য কাল হল। জন্মে মাত্র বার ঘন্টার মধ্যেই মায়ের পরকীয়ার বলি হয়ে প্রাণ গেল শিশুটি। স্বামী বিদেশ থাকায় পরকীয়ার কারণে জন্ম নেয়া সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বামীর পরিবার অভিযোগ করেছে। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের টাকিয়া কদমা উত্তরপাড়া গ্রামে এ অমানবিক ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, তরফপুর ইউনিয়নের টাকিয়া কদমা উত্তরপাড়া গ্রামের মানিক হোসেনের স্ত্রীর নাম রিনা বেগম। মানিক দীর্ঘদিন ধরে কাতারে থাকেন। সর্বশেষ মানিক ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর বিদেশে যান।স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তার স্ত্রী রিনা বেগম একই গ্রামের শিপন মিয়া নামে এক যুবকের সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে অন্তসত্তা হয়ে পড়েন।
ঘটনা জানাজানি হলে গত রবিবার রিনা বেগম তার ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি মির্জাপুরের মুশুরিয়াঘোনা গ্রামে আসে। ঐ বাড়িতে সোমবার বাথরুমে সন্তান প্রসব হলে রিনা বেগম সন্তানকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করে। ওই সময় নবজাতকের প্রথম কান্না শুরু হয়। বাড়ির লোকজন ঘটনাটি টের পেয়ে রিনা বেগম ও শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে গৃহবধুর স্বামী মানিকের পিতা মো. বজলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে মানিক বিদেশ থাকে। পুত্রবধুর যে সন্তান হয়েছে তা অবৈধ সন্তান। এ জানাজানি হবে বিধায় তার পুত্রবধু রিনা বেগম সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে গৃহবধু রিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজের সন্তান হত্যা কথা অস্বীকার করে বলেন, বাথরুমে বাচ্চা হওয়ায় তুলতে গিয়ে চাপ লাগতে পারে।তবে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে অবৈধ সন্তান ধারনের কথা রিনা বেগম স্বীকার করে।
রিনা বেগমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়ীত টাকিয়া কদমা গ্রামের শিপন মিয়া নামের এক যুবককে পুলিশ আটক করেছে। রিনা পুলিশ পাহাড়ায় কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুল হক বলেন, রিনা বেগমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ এক যুবককে আটক করেছে।রিনার শ্বশুর বজলুর রহমান অবৈধ গর্ভপাতের মাধ্যমে শিশু হত্যার জন্য মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গোনিউজ২৪/কেআর