ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
রাজশাহী-১ আসন

চ্যালেঞ্জের মুখে ফারুক-ব্যারিস্টার আমিনুল


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০১৭, ০২:৩৮ পিএম আপডেট: আগস্ট ৭, ২০১৭, ১০:০৬ এএম
চ্যালেঞ্জের মুখে ফারুক-ব্যারিস্টার আমিনুল

জেএমবির ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত রাজশাহীর রাজনীতির চিত্রটাই অন্যরকম। এক সময় সর্বহারা নিধনের নামে জেএমবির বাংলাভাই এ অঞ্চলে নেটওয়ার্ক বিস্তার করেন। রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায় অঞ্চলটি। তৎকালীন  সরকারের একটি মহলের মদদে বাংলাভাই তার কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে আজ সে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। রাজনীতির রক্তাক্ত জনপদে এখন আগাম নির্বাচনের ডামাডোল। দলগুলোর মধ্যে সাড়া পড়ে গেছে আগামী সিটি ও একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। রাজশাহীর সংসদীয় আসনগুলোর আগামী নির্বাচনী প্রস্তুতির খবর জানাচ্ছেন গোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ও রাজশাহী অফিসের প্রধান ইলিয়াস আরাফাত। আজ পড়ুন প্রথম পর্ব রাজশাহী-১ (তানোর ও গোদাগাড়ী) আসনের খবর।

এক সময়ে দাপুটে নেতা সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আমিনুল হক মাঠে। সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী বর্তমান সংসদ সদস্য (এমপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীও মাঠে কাজ করছেন। এই আসনের দুই প্রভাবশালী নেতার পাশাপাশি মাঠে নেমেছে বড় দুই দলের নতুন কিছু মুখ। তাদের দৌড়ঝাঁপে গমগম করছে তৃণমুলের রাজনীতি। সেই সঙ্গে সম্ভব্য প্রার্থীদের নিয়ে দুই দলের মধ্যে বিভক্তির সুরও উঠেছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, জঙ্গি মদদ ও দলে সংস্কারপন্থী হিসেবে অভিযোগ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আমিনুল হকের বিরুদ্ধে। অপরদিকে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ আছে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তাই তাদের এবার মনোনয়ন পেতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে তারা। দলের তৃণমুল নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ এমন কথা জানিয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ভোটের ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে রাজশাহী-১ সংসদীয় আসনে। জেলার তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলায় গঠিত এ আসন এখন শোভা পাচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার। 

নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও ভোটের আগাম হিসেব-নিকেশ শুরু করে দিয়েছে উভয় দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির থেকে কে মনোনয়ন পাবেন এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।

রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে ১৯৯১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির মনোনয়নে পরপর তিনবার এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক। সর্বশেষ চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন তিনি। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে থাকায় এবং বিএনপির সংস্কারপন্থীদের কাতারে ভেড়ায় আমিনুল হকের পরিবর্তে তার ভাই এনামুল হককে দলীয় মনোনয়ন দেয় বিএনপি। 

ওই নির্বাচনে সাবেক পুলিশ প্রধান এনামুল হক পরাজিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছে। গত নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন।

তবে এবার বিএনপির প্রার্থী হয়ে অংশ নিতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক। তিনি ছাড়াও এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব জহুরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাবেক যুববিষয়ক সম্পাদক কেএম সাজেদুর রহমান খান মারকনি এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন শাহিন।

এদের মধ্যে জহুরুল ইসলামকে মাঠে তেমন দেখা না গেলেও সাজেদুর রহমান মারকনি ও প্রবাসী শাহাদৎ হোসেন শাহিন তাদের নির্বাচনী এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের চাঙা করার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে দলের হাইকমান্ডের ইঙ্গিতে মারকনি আর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে প্রবাসী শাহিন মাঠে রয়েছেন বলে প্রচার চালাচ্ছেন সমর্থকরা।

মুণ্ডুমালা পৌর বিএনপির এক পক্ষের কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ওপর তানোর-গোদাগাড়ীর তৃণমূল নেতাকর্মীদের ক্ষোভ আছে। তিনি দীর্ঘদিন এলাকায় আসেন না। নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর রাখেননি। বিএনপি বিভিন্ন ইউপি/ পৌরসভা নিয়ে মনগড়া কমিটি করেছেন। তাই দলীয় নেতাকর্মীরা নতুন কাউকে চাইছে।

অপরদিকে, আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ছাড়াও এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য লড়বেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মতিউর রহমান, তানোর উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুণ্ডুমালা পৌরসভার মেয়র গোলাম রাব্বানী।

ফারুক চৌধুরী ও ব্যারিস্টার আমিনুল

তাদের মধ্যে মতিউর রহমান ২০০৮ সালের আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন। তবে গত নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন চেয়েও পাননি। এবার দলের হাইকমান্ডের সবুজ সংকেতে আগে ভাগেই মাঠে নেমে পড়েছেন। পরিবারিক ঐতিহ্য ও জনপ্রিয়তা বিবেচনায় গোলাম রাব্বানি এবার মনোনয়ন পাবেন বলেই মনে করছেন তার সমর্থকরা।

সম্ভব্য প্রার্থীদের নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মত রয়েছে। তানোর উপজেলা আওয়ামী-লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের আসনে বর্তমান এমপি ফারুক চৌধুরীর কোনো বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে তিনিই দলীয় মনোনয়ন পাবেন এবং বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে আশা করছেন নেতাকর্মীরা।

আব্দুল্লাহ আল মামুন আরো বলেন, কতোজন মনোনয়ন প্রত্যাশী সেটি বড় বিষয় না। ফারুক চৌধুরী আগামী নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। তিনি তানোর গোদাগাড়ীর একজন অভিভাবক । তিনি ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়ন পাবেন এমন চিন্তা এ আসনের মানুষ ভাবতে পারছেন না।

তবে, ভিন্ন সুর মুণ্ডুমালা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমানের। তিনি বলেছেন, মুণ্ডুমালা পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বনী একজন তরুণ নেতা। তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনে তানোর-গোদাগাড়ী আসনে আওয়ামী লীগের এমপি পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তানোর-গোদাগাড়ী অঞ্চলের মানুষের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষ গোলাম রাব্বানীকে আগামী সংসদ নির্বাচনে মাঠে দেখতে চান। কেন্দ্র থেকে তাকে আগামী নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রস্তত করতে বলা হয়েছে। সে অনুয়ায়ী তিনি তৃণমুল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মতিউর রহমান বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে তানোর-গোদাগাড়ী আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন আমি পাবো। বর্তমান এমপির ওপরে তৃণমুলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তার দাবি, বছর খানেক আগেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সংকেত পেয়েছেন কেন্দ্র থেকে। সে কারণেই মাঠে কাজ শুরু করেছেন।

গোনিউজ/এন

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর
রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন