ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার বাগেরহাটে ফিরছে আলিমুন। অপারেশনের পর মাথার আকৃতি স্বাভাবিক হয়েছে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার নয় বছর বয়সী শিশু আলিমুন শেখের। সে এখন বালিশে মাথা রেখে ঘুমাতে পারছে। যে উৎকন্ঠা নিয়ে মা ছকিনা বেগমের সাথে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন আজ তার অবসান ঘটতে চলছে।
এদিকে মা ছকিনা বেগমের সাথে করে আলিমুন ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার আগে বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনে বাসায় গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাত করেছে। এসময়ে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সরদার নাহিয়া সুলতান ওশান তাদের সাথে ছিলেন।
আলিমুনকে নিয়ে কচুয়ার পল্লী চিকিৎসক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসার সহায়তা চেয়ে ছবি পোস্ট করেন। এরপর সেটি ঢাকার এক সাংবাদিক পোষ্ট করলে তা ভাইরালে পরিনত হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আলিমুনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন এবং বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগ সার্বিক সাহায্য করে।
আলিমুনের মাথার চারপাশে সাতটি বড় আকৃতির টিউমার ছিল। গত ২ আগস্ট ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়। পরে তার মাথার সেলাই কাটাও হয়েছে।
এদিকে আলিমুনের মাথার টিউমারের অপারেশন হলেও তার কান, পিঠ ও হাঁটুর টিউমারগুলোর অপারেশন এখনও হয়নি। পর্যায়ক্রমে এসব অপারেশন হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
তবে আলিমুন ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরলেও আবার একমাস পরে তার শরীরের বিশেষ করে পিঠ ও কানের টিউমার অপরেশনের জন্য আবার তাকে ঢাকায় ফিরতে হবে। একমাস পর তাকে দ্বিতীয় ধাপের চিকিৎসার জন্য প্রথমে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।
প্রসঙ্গত, বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সোনারকান্দি ইউনিয়নের মৃত সিদ্দিক শেখের নয় বছর বয়সী ছেলে আলিমুন শেখ দীর্ঘদিন ধরে বিনা চিকিৎসায় মাথায় টিউমার নিয়ে জীবনযাপন করছিল। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় হোমিও চিকিৎসা করালেও কোনো লাভ হয়নি।
দেড় বছর বয়সে আলিমুনের বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন তার মা ছকিনা বেগম। দিনমজুরি করে সংসার চালাতে এক সময় তিনিও হিমশিম খেয়ে আরেকটি বিয়ে করেন।
মায়ের বিয়ের পর আলিমুন ও তার বড় ভাই আরও অসহায় হয়ে পড়ে। ঠাঁই হয় দিনমজুর চাচার বাড়িতে। সেখানেই অভাব-অনটনে বড় হতে থাকে আলিমুন। একপর্যায়ে তার ওপর সুদৃষ্টি পড়ে এলাকার পল্লী চিকিৎসক জাহিদের।
সম্প্রতি আলিমুনের অসহায়ত্ব ও অসুস্থতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে দৃষ্টি পড়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের। এরপর তিনিই আলিমুনের চিকিৎসায় এগিয়ে আসেন এবং গত ১ আগস্ট তাকে দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে যান। সেখানে তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতাও করেন।
গো নিউজ২৪/এএইচ