ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘এতো গুলি হচ্ছে, তোমরা কী করছ?’


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০১৭, ০৭:৫২ পিএম
‘এতো গুলি হচ্ছে, তোমরা কী করছ?’

ঢাকা: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই কালরাত। তখন ভোর সাড়ে ৫টা। পুরো অপারেশন শেষ করে ঘাতকরা চলে এসেছে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধুর সেই ৬৭৭ নম্বর বাড়ির গেটে। ততক্ষণে বঙ্গবন্ধু জেনে গেছেন আবদুর রব সেরনিয়াবাতকে হত্যার খবর। বাড়ির প্রধান গেটেও চলছে হট্টগোল।

বঙ্গবন্ধুর ঘরের বাইরের বারান্দায় তখনও ঘুমিয়ে দুই গৃহকর্মী মোহাম্মদ সেলিম (আবদুল) ও আবদুর রহমান শেখ (রমা)। নিচতলায় বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী এ এফ এম মহিতুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু টেলিফোনে মহিতুলকে বললেন, ‘সেরনিয়াবাতের বাসায় দুষ্কৃতকারীরা আক্রমণ করেছে। জলদি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন লাগা...।’ কিন্তু পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে কোনো সাড়াশব্দ পেলেন না মহিতুল। চেষ্টা করতে থাকেন গণভবন (তৎকালীন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়) এক্সচেঞ্জে।

ততক্ষণে বঙ্গবন্ধু গোলাগুলির শব্দ শুনে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছেন। ঘুম থেকে জেগে উঠেছেন গৃহকর্মী রমা। বেগম মুজিবের কথায় রমা নিচে নেমে দেখেন, সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য গুলি করতে করতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির দিকে এগোচ্ছে। ভীতসন্ত্রস্ত রমা বাড়ির ভেতরে এসে দেখেন, লুঙ্গি আর গেঞ্জি পরা বঙ্গবন্ধু নিচতলায় নামছেন। রমা দোতলায় উঠে গেলেন। দেখলেন, আতঙ্কিত অবস্থায় ছোটাছুটি করছেন বেগম মুজিব।

রমা এবার চলে যান তিনতলায়। ঘুম থেকে ডেকে তোলেন বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামালকে। ঘটনা শুনে শার্ট-প্যান্ট পরে নিচতলায় নামেন শেখ কামাল। পিছু পিছু সুলতানা কামাল আসেন দোতলা পর্যন্ত। তিনতলা থেকে আবার দোতলায় নেমে আসেন রমা। ঘুম থেকে ডেকে তোলেন শেখ জামাল ও তার স্ত্রীকেও। জামা-কাপড় পরে শেখ জামাল তার স্ত্রীকে নিয়ে দোতলায় বেগম মুজিবের কক্ষে যান। বাইরে তখন গোলাগুলি। 

বঙ্গবন্ধু তখন নিচতলার অভ্যর্থনা কক্ষে। তার সামনেই বিভিন্ন জায়গায় ফোন করতে থাকেন মহিতুল। পুলিশ কন্ট্রোল রুম ও গণভবন এক্সচেঞ্জে চেষ্টার একপর্যায়ে মহিতুলের কাছ থেকে রিসিভার টেনে নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব...।’ ব্যস, এ পর্যন্তই। কথা শেষ হলো না তার। জানালার কাচ ভেঙে একঝাঁক গুলি এসে লাগে অফিসের দেয়ালে। এক টুকরো কাচে ডান হাতের কনুই জখম হয় মহিতুলের।

টেবিলের পাশে শুয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু। কাছে টেনে শুইয়ে দেন মহিতুলকেও। এর মধ্যেই আবদুলকে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে তার পাঞ্জাবি ও চশমা পাঠিয়ে দেন বেগম মুজিব। কিছুক্ষণ পর গুলির শব্দ থামলে উঠে দাঁড়ান বঙ্গবন্ধু। পাঞ্জাবি ও চশমা পরেন। অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে বের হয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ান। পাহারায় থাকা সেনা ও পুলিশ সদস্যদের বলেন, ‘এত গুলি হচ্ছে, তোমরা কী করছ?’ এ কথা বলেই উপরে চলে যান বঙ্গবন্ধু।

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলার স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এরপর ভাবতেই পারেননি তার জীবনে কী ঘটতে চলেছে।

গোনিউজ/এন

জাতীয় বিভাগের আরো খবর
টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

টয়লেটসহ একাধিক সুবিধা নিয়ে দেশে আসছে ছাদখোলা দোতলা ট্যুরিস্ট বাস

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

‘রপ্তানিযোগ্য হারবাল প্রডাক্টের উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মান উন্নয়ন’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

পাঠ্যবইয়ের সংশোধনসহ সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

শাহজালাল বিমানবন্দরে মাসুদের কাছে পাওয়া গেল ৩ কেজি সোনা

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

ইজতেমায় এক বদনা পানি ১০ টাকা!

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়

হজে যাওয়ার মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না, দফায় দফায় সময় বাড়াচ্ছে মন্ত্রণালয়