ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ১৫০ জন কিন্তু শিক্ষক নেই একজনও


গো নিউজ২৪ | অনলাইন ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০১৭, ০৯:৩৫ এএম
এক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ১৫০ জন কিন্তু শিক্ষক নেই একজনও

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার মধ্য কোদালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে ১৫০ জন। ওই বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক নেই। পাশের পাঁচকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জসীম উদ্দিন প্রেষণে বিদ্যালয়টিতে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন। শুধু ওই বিদ্যালয়েই নয়, এমন চিত্র শরীয়তপুরের বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে।

শরীয়তপুরের ২৫৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৩৪৪টি। প্রশিক্ষণে রয়েছেন ১৬০ জন, মাতৃত্বকালীন ও চিকিৎসাজনিত ছুটিতে আছেন আরও ১০০ জন শিক্ষক।

মধ্য কোদালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রেষণে থাকা সহকারী শিক্ষক জসীম উদ্দিন বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ের দুজন সহকারী শিক্ষক এ বছর মার্চে অবসরে যান। এরপরই উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় থেকে আমাকে এখানে প্রেষণে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়। অক্টোবর মাসে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফাতেমা বেগম মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যান। এখন আমি একাই পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছি। শিশুদের একটি বিদ্যালয় কি একা চালানো সম্ভব?’

ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী কাওসার আহম্মেদ জানায়, শিক্ষক না থাকায় পড়ালেখায় তাদের অনেক অসুবিধা হয়। জসীম স্যার যখন উপজেলায় যান, তখন বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দিতে হয়।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরে ৬৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই বিদ্যালয়গুলোতে ৩ হাজার ৪০৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য আছে ২৫৫টি, সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য আছে ৩৮৮টি। আর প্রশিক্ষণ ও ছুটিতে আছেন ২৬০ জন।

প্রধান শিক্ষক শাহানা আক্তার একই সঙ্গে তিনটি শ্রেণিতে পাঠদান চালাচ্ছেন। এক শ্রেণিতে লিখতে দিয়ে আরেক শ্রেণিকক্ষে ছুটে যান পড়াতে, সেই কক্ষ থেকে আরেক কক্ষে ছুটে যান খাতা জমা নিতে। এভাবেই প্রতিদিন চালাতে হয় বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। এ চিত্রটি শরীয়তপুর সদর উপজেলার গয়ঘর খলিফাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ওই বিদ্যালয়ে শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৯৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আইরিন সুলতানা ২ জুলাই মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাওয়ায় শাহানা আক্তার একা হয়ে পড়েছেন।

শাহানা আক্তার বলেন, ‘শুধু ভালোবাসার কারণে বিদ্যালয়টিতে পড়ে আছি। প্রায় ২০০ শিশুকে একা সামলানো কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। যখন ক্লাস্টার সভা ও দাপ্তরিক কোনো কাজে উপজেলায় যেতে হয়, তখন দপ্তরিই আমার বিদ্যালয়ের ভরসা। বিদ্যালয়টিতে পাঁচজন শিক্ষকের পদ রয়েছে। সারা জেলায় শিক্ষকের সংকট থাকায় এ বিদ্যালয়ে কাউকে পদায়ন করা হচ্ছে না।’

ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর ছয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৪৪৪ জন। ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী শিক্ষক ওলিউল্লাহ একাই বিদ্যালয়টি চালাতেন। গত এপ্রিল মাসে তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তখন সহকারী শিক্ষক ফকরুল আলমকে বিদ্যালয়টিতে পদায়ন করা হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনি একাই বিদ্যালয়টি চালাচ্ছেন।

শিক্ষক ফকরুল আলম বলেন, ‘এত শিশুকে একা পড়ালেখা করানো অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমি একটি ব্যাংকে চাকরি করতাম। এপ্রিলেই স্কুলটিতে যোগদান করেছি। এসেই একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছি।’

শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আগামী জানুয়ারিতে একটি নিয়োগ পরীক্ষা হবে। তখন শিক্ষকসংকট দূর হবে। এর আগে যেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক কম রয়েছে, তাঁদের একটু কষ্ট করতে হবে।-প্রথম আলো

গো নিউজ২৪/এবি

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে