ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

অ্যান্টার্কটিকা সম্পর্কে যা না জানলেই নয় !


গো নিউজ২৪ | ফারজানা আক্তার প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০১৭, ০৬:১৩ পিএম আপডেট: মার্চ ২৮, ২০১৭, ১২:১৫ পিএম
অ্যান্টার্কটিকা সম্পর্কে যা না জানলেই নয় !

অ্যান্টার্কটিকা নামটি শুনলেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে বরফে ঢাকা বিশাল একটা অঞ্চল সাথে আদুরে আদুরে পেঙ্গুইন। যুগ যুগ ধরে অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে রয়েছে জানা - অজানা অনেক রহস্য। অ্যান্টার্কটিকা বসবাসের জন্য অযোগ্য হলেও কিছু প্রাণী বসবাস করে।  তারা নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে এই ঠান্ডা রাজ্যের সাথে। অ্যান্টার্কটিকা সম্পর্কে আজ কিছু অজানা কথা জানবো আমরা।

যেহেতু অ্যান্টার্কটিকা বরফের রাজ্য তাই আমাদের মনে হতে পারে এই অঞ্চল সবসময় বরফ গলা পানিতে ভেজা থাকে। আমার আপনার সবার চিন্তা ভুল। অ্যান্টার্কটিকা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক স্থান ! এতদিন ধারণা করা হতো,অ্যান্টার্কটিকার শুষ্ক এই মরু অঞ্চলে কোন প্রাণের বাস নেই, কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই মরুভূমির পাথরে কিছু ব্যাক্টেরিয়ার বাস থাকতে পারে।

অ্যান্টার্কটিকা শব্দটা মনে আসলেই চোখে ভেসে উঠে হাজার হাজার বরফ।  আপনি শুনে অবাক হবেন যে একটি মাত্র বরফের টুকরা যা অ্যান্টার্কটিকার ৯৮% ঢেকে রেখেছে ! এই একটি মাত্র বরফের টুকরোই অ্যান্টার্কটিকাকে দিয়েছে পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশের খেতাব।এই বরফের টুকরো বিস্তৃত প্রায় ১৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং এটির পুরুত্ব প্রায় এক মাইল!

সারা পৃথিবীর প্রায় ৯০% বরফ রয়েছে অ্যান্টার্কটিকায়। অ্যান্টার্কটিকায় পৃথিবীর প্রায় ৭০% বিশুদ্ধ পানি মজুদ রয়েছে। অ্যান্টার্কটিকার বরফ যদি একবার গলে যায় তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে প্রায় ২০০ ফিট পর্যন্ত!

অ্যান্টার্কটিকায় রয়েছে শক্তিশালী গ্যামবার্টসেভ পর্বতাঞ্চল যা এখনো মানুষ চোখে দেখতে পায়নি কারণ এগুলো বিশাল বরফে ঢাকা পরে রয়েছে।  এই পর্বতগুলো  প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছরের পুরনো! মানুষ এই পর্বতাঞ্চল দেখতে পায়নি কেননা এটি প্রায় ১০,০০০ ফিট পুরুত্বের বরফে ঢেকে রয়েছে, যা পৃথিবীর অন্যতম ঠান্ডা ‘ডোম এ’ নামক অঞ্চলে অবস্থিত।

নানা কারণে অ্যান্টার্কটিকা অন্য সব মহাদেশ থেকে আলাদা । পার্থক্য রয়েছে এই মহাদেশের দিন-রাতের সাথেও।  একদিকে অ্যান্টার্কটিকা শীতকালে ২৪ ঘন্টা অন্ধকারে ঢাকা থাকে, অন্যদিকে  গ্রীষ্মকালে পুরো ২৪ ঘন্টা থাকে দিনের আলোয় আলোকিত !

প্রচুর ঠান্ডা এই দুর্গম দেশে কোনো মানুষ বাস করে না, নেই কোন স্থানীয় আদিবাসিও । দুর্গম এই অঞ্চলে শুধুমাত্র কিছু  গবেষকদের  আনাগোনা লক্ষ্য  করা যায়।  এই গবেষকদের আনাগোনাও কমে আসে শীতকালে।  গ্রীষ্মকালে চার হাজারের মতো মানুষ গবেষণার জন্যে অ্যান্টার্কটিকার মতো দুর্গম অঞ্চলে আসলেও শীতকালে এই সংখ্যা নেমে আসে মাত্র এক হাজারে।

সাদা বরফে ঢাকা অ্যান্টার্কটিকায় রয়েছে জলন্ত আগ্নেয়গিরি। রেবাস আগ্নেয়গিরিটি অ্যান্টার্কটিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি, এই মহাদেশের সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরি হলো মাউন্ট সিডলে, যদিও সেটি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে। অ্যান্টার্কটিকায়  আগ্নেয়গিরির বাসস্থল রস আইল্যান্ড ভ্রমনের জন্যে খুবই বিপজ্জনক হলেও দুঃসাহসী অনেকেই মাউন্ট ইরেবাসে গিয়েছে, প্রথম সফল অভিযানটি ছিল ১৯০৮ সালে!

১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার একদল গবেষক অবস্থান করছিল অ্যান্টার্কটিকায়, আর্জেন্টাইন আর্মির প্রধানও সেখানে রয়েছেন। সেখানেই এস্পারেঞ্জা বেজে তার স্ত্রী জন্ম দিলেন একটি শিশুর। অ্যান্টার্কটিকায় আর্জেন্টিনার অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল থাকায় শিশুটি আর্জেন্টাইন হিসেবে নথিভুক্ত হয়ে যায়, গিনেস বুকে রয়েছে যার নাম। এমিলিও মার্কোস পালমা, অ্যান্টার্কটিকায় জন্ম নেওয়া প্রথম মানব! এমিলিওর পরে অ্যান্টার্কটিকায় আরো প্রায় ১০ টি শিশু জন্মের কথা শোনা যায়, তবে এমিলিও ইতিহাসের প্রথম মানবশিশু যিনি জন্ম গ্রহন করেছেন অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে।

অ্যান্টার্কটিকায় কিছু প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গেলেও সেখানে কোনো গাছ নেই।  অ্যান্টার্কটিকার পশ্চিমে অবশ্য কিছু লিচেন ও মস দেখতে পাওয়া যায়। মানুষের প্রচেষ্টায় আরো কিছু প্রজাতির দেখা মিলছে নতুন করে, যারা নতুন পরিবেশে বেশ মানিয়ে নিচ্ছে।

পেঙ্গুইনদের জন্যে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ স্বর্গরাজ্য।  অ্যান্টার্কটিকায়  হিংস্র প্রানীর খুব একটা আনাগোনা নেই বললেই  চলে।  পেঙ্গুইনদের মূর্তিমান আতঙ্ক হলো লিওপার্ড সিল তবে এরা সাধারণ সিলদের মত দেখতে সুন্দর ও শান্ত নয়।  আকারে লিওপার্ড সিল ৭.৯ থেকে ১১.৫ ফিট পর্যন্ত হয়ে থাকে যাদের প্রধান খাদ্যই হলো পেঙ্গুইন!

 

লাইফস্টাইল বিভাগের আরো খবর
বিয়ে-বিচ্ছেদ বেড়েছে খুলনার মেয়েদের, কম বরিশালের

বিয়ে-বিচ্ছেদ বেড়েছে খুলনার মেয়েদের, কম বরিশালের

৪ মাসে একবার বিছানার চাদর কাচেন ব্যাচেলররা: গবেষণা

৪ মাসে একবার বিছানার চাদর কাচেন ব্যাচেলররা: গবেষণা

ডেঙ্গু আক্রান্তরা যে কারণে ডাবের পানি পান করবেন

ডেঙ্গু আক্রান্তরা যে কারণে ডাবের পানি পান করবেন

বাংলাদে‌শিদের জন্য ই-ভিসা চালু করেছে নেপাল

বাংলাদে‌শিদের জন্য ই-ভিসা চালু করেছে নেপাল

গর্ভাবস্থায় কী কী খাবার খেলে আপনার সন্তান হবে মেধাবী ও বুদ্ধিমান!

গর্ভাবস্থায় কী কী খাবার খেলে আপনার সন্তান হবে মেধাবী ও বুদ্ধিমান!

ডেঙ্গু সম্পর্কিত যেসব ভুল তথ্য এড়িয়ে যাবেন

ডেঙ্গু সম্পর্কিত যেসব ভুল তথ্য এড়িয়ে যাবেন