ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অদম্য মেধাবী’র গল্প


গো নিউজ২৪ | কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ২০, ২০১৬, ০৮:০১ পিএম
অদম্য মেধাবী’র গল্প

কুড়িগ্রামের ১১জন অদম্য মেধাবী জয় করেছে দারিদ্র। চলতি বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে আঁধার ঘরে আলো জ্বালিয়েছে। তাদের সবার পরিবারে অভাব অনটন নিত্য দিনের সঙ্গী। এরপরও শত প্রতিকুলতা বাঁধা হয়ে দ্বাড়াতে পারেনি তাদের মেধা বিকাশে। চিকিৎসক,প্রকৌশলী,প্রশাসনিক কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখে তারা। কিন্তু এখন স্বপ্ন পুরোনের মাঝে দেয়াল দারিদ্রতা। আকাশ ছোঁয়া এ সাফল্যেও অভিভাবকদের মনে শঙ্কার পাহাড়। দু’চোখে অন্ধকার, তারপরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার দুর্বার সাহস।

এখন প্রশ্ন-কে নেবে এদের দায়?

লিপি আক্তার
উলিপুর উপজেলার রামেশ শর্মা গ্রামের কৃষি শ্রমিক নুর ইসলামের কন্যা লিপি আক্তার চলতি এসএসসি পরীক্ষায় মন্ডলের হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। দুই ভাই বোনের মধ্যে লিপি সবার বড়। অভাবের সংসার তিন বেলা খাবারই জোটে না। পড়ালেখা খরচ জুটবে কি ভাবে। তাই বাবা চায় মেয়ের বিয়ে দিতে। কিন্তু মা রোকেয়া বেগম চায় মেয়ে লেখা পড়া করে নিজের পায়ে দাড়াবে। কারণ নিজের বাল্য বিয়ে, লেখাপড়া না জানা এবং বর্তমান কষ্টের সংসার জীবনের জন্য নিজের ভাগ্যকে মেনে নিলেও। নিজের মেয়ের ভাগ্য বদলাবার ইচ্ছা তার। লিপি পড়ালেখা করে ডাক্তার হতে চায়। কিন্তু সে ইচ্ছা পুরোন হবার প্রধান বাধা দারিদ্রতা।

সাফিয়া আক্তার
তিন ভাই বোনের মধ্যে সাফিয়া আক্তার সবার বড়। উলিপুর উপজেলার মন্ডলেরহাট এলাকার সাদী গ্রামে তাদের বাড়ি। বাবা মমিনুল ইসলাম সাভারে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর শ্রমিক। মাসিক বেতন ৭হাজার টাকা। ৩হাজার টাকা পাঠায় বাড়িতে। এ টাকায় মা আলেয়া বেগম ৪জনের সংসার টানে। ভিটেবাড়ি মিলে ১০শতক জমি। এতেই সবজি চাষ ও হাঁস-মুরগী পালেন মা।  
সাফিয়া আক্তার জানায়, পড়ালেখা চালিয়ে নিতে তার সিমাহীন কষ্ট করতে হয়েছে। এনজিও আরডিআরএস থেকে ঋণ নিয়ে করতে হয়েছে ফরমফিলাপ। এখনও সে ঋণের টাকা পরিশোধ হয়নি। নেই খাবার, নেই বই-খাতা, নেই ভাল কোন পোশাক। কেরোসিন কেনার সামর্থ না থাকায় পড়ালেখা করতে হয়েছে দিনের আলোয়। আমি দুঃখের এ জীবনের অবসান ঘটাতে চাই। আর তা উচ্চ শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে। চিকিৎসক হয়ে চাই পরিবারের ভাগ্য বদলাতে। সেই সাথে নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই গরিব-অসহায় মানুষের সেবায়।

ইমানা আক্তার ইমু
চিকিৎসক হবার স্বপ্ন দেখে ইমানা আক্তার ইমু। সে চলতি বছর দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ভালফলাফল করেও তার মনে আনন্দ নেই। কারণ বাবা নেই। আয় রোজগারের কেউ নেই। পড়াশুনা বন্ধের উপক্রম। দু’চোখে শুধু অন্ধকার ভবিষ্যৎ। মোটরসাইকেল মেকার বাবা ইউসুছ আলী প্রায় ৩বছর আগে আকস্মিক ভাবে আর্টএটাক হয়ে মারা যায়। তখন থেতে শুরু কষ্টের অনিশ্চিত জীবন। মা সামছুন নাহার বেগম ব্রাকের আয়েশা আবেদ ফাউন্ডেশনে তৈরী পোশাকে হাতের কাজ (কারচুপি) করেন। এতে মাসে আয় হয় মাত্র ২হাজার টাকা। তাই বাধ্য হয়ে মায়ের কাজে সহযোগীতা করে ইমু। এতে লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হয়।
ইমানা আক্তার ইমু জানায়, বাবার কোন জমিজমা ছিলনা। কাঁঠালবাড়ীর হরিশ^র কালোয়া গামে দাদুর বাড়িতে একটা টিনের ঘরে আশ্রিত। পড়াশুনা করতে গিয়ে কষ্টের কোন শেষ ছিল না। নাই আর নাই। বাই,খাতা, কলম,ড্রেস, কেরোসিন কোন কিছু কেনার টাকা নেই। সব কিছুর জন্য অন্যের কাছে হাতপাততে হয়। পরীক্ষার ফরমফিলাপও করেছি একই ভাবে। কিন্তুৃ আগামী দিনগুলো কি ভাবে চলবে এ দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে আমাকে।

তৌফিকুল ইসলাম তুষার
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের ভেরভেরী গ্রামের হতদরিদ্র আব্দুল বাতেনের দুই কন্যা ও এক পুত্রের মধ্যে তৌফিকুল ইসলাম তুষার মেঝো। কৃষি শ্রমিক পিতার ৫জনের সংসারে অভাব নিত্য সঙ্গি। তাই ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ওঠার পর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। লাগিয়ে দেয় শ্রমিকের কাজে। মেধাবী তুষারের কষ্টের কথা বিবেচনা করে দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রোকেয়া সিদ্দিকা নিজের বাসায় রেখেদেয়। ৭ম শ্রেণী থেকে এসএসসি টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত স্কুলে টানা প্রথম স্থান অধিকার করে আসছে তুষার। চলতি এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তুষার চিকিৎসক হবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু প্রধান বাধা অর্থাভাব।
তৌফিকুল ইসলাম তুষার বলেন, পরমফিলাপের টাকা বাবা যোগাতে পারেনি। অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পরীক্ষা দেয়া। এ অনিশ্চয়তার সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েদেন মিজানুর স্যার, নয়ন স্যার ও রিজু স্যার। বড় বোন অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আর ছোট বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। বড় বোন টিউশনি করে লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছে। অর্থের যোগান দিতে ব্যর্থ বাবার কালো মুখ দেখলেই নিজেরই কান্না বের হয়। আল্লাহ কেন আমাদের গরিব করে পাঠালো? এ জীবন খুব কষ্টের।

জাহিদ হাসান চৌধুরী
কাঠালবাড়ী’র হরিশ কালোয়া এলাকার উৎসাহীপুর গ্রামের মা হারা জাহিদ হাসান চৌধুরী ৫ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট। জাহিদের ১০ বছর বয়সে মা মিনা বেগম নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাবা জহিরুল হক স্থানীয় একটি বে-সরকারি প্রতিষ্ঠনে সল্প বেতনে পিয়নের চাকুরি করে। তার সামান্য আয়ে সংসার চলে না। বোন হামিদা বেগম ও হালিমা বেগমের বিয়ে হয়েছে। হেনা বেগম বিএ পাশ করে বসে আছে। টাকার অভাবে বিয়ে হচ্ছে না। আবার টাকার অভাবে লেখাপড়াও বন্ধ। আর এক বোন জেসমিন চৌধুরী টিউশনি করে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ছে। জমিজমা যা ছিল তা বিক্রি করে বাবা এখন নিঃস্ব। জাহিদ চলতি এসএসসি পরীক্ষায় দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে।  
জাহিদ হাসান চৌধুরী জানায়, সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশনি করে এতদিন লেখাপড়া চালিয়ে এসেছে। কেরোসিন কেনার টাকা ছিল না। এজন্য পার্শবর্তী মসজিদের বারান্দায় বৈদ্যুতিক আলোয় পড়ালেখা করতে হতো। ভাল কোন পোশাক ছিলনা। বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী এক বড় ভাইর শার্ট,প্যান্ট ও সেন্ডেল ধার নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেই। এসব কষ্টের কথা কাউকে বলতেও নিজের ভাললাগে না। আমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন এখন কচুর পাতার পানির মতো টলোমলো।  

সাথী সরকার
কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের তালুক কালোয়া এলাকার কৈয়া পাড়ার রতন সরকারে মেয়ে সাথী সরকার চলতি এসএসসি পরীক্ষায় দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাকলাগিয়ে দিয়েছে। তিন বোনের মধ্যে সাথী সরকার দ্বিতীয়। বড় বোন অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। আর ছোট বোন পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পিতা কৃষি শ্রমিক আর মা গীতা সরকার গৃহিনী। ৫জনের সংসারে নুন আনতে পান্থা ফুড়ার অবস্থা।
সাথী সরকার জানায়, প্রায় উপোস করে থাকতে হতো। ছিলনা প্রয়োজনীয় বই খাতা কলম। মা বাড়িতে হাঁস-মুরগী পালে, বড় বোন টিউশনি করে আয় করে। এ ভাবে চরম কষ্টে দিন কাটে আমাদের। পুষ্টিকর খাবার জোটেনি তাই অসুস্থ্যতা লেগেই আছে। শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও সাথী সরকার স্বপ্ন দেখে একজন প্রকৌশলী হবার।
হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগিতা ছাড়া সাথী সরকারের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

মাফিকুল ইসলাম
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের মুক্তারাম গ্রামের মৃত: নুরুল আযমের পুত্র মাফিকুল ইসলাম চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় দাশের হাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সাফল্য অর্জন করে। সে স্বপ্ন দেখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হবার। বড় বোন  আফসানা অনার্সে পড়ে। মা মুক্তা বেগম সন্তানদের নিয়ে চরম সংকটে পড়েছে। দু’ভাই বোনের টিউশনির টাকায় চলে টানাটানির সংসার। কষ্টের জীবন শুরু হয় ৫বছর আগে। শ্রমিক বাবার আকস্মিক মৃত্যু হয় হার্ট এটাকে।
মাফিকুল ইসলাম বলেন, আমার মতো কষ্টের জীবন যেন আর কারো না হয়। দিনের পর দিন না খেয়ে স্কুলে যেতে হয়েছে। কখনও কখনও খাতা-কলম কেনারও টাকা ছিল না। কেনা হতো না কেরোসিন। ফলে দিনের আলোয় পড়তে হতো আমাকে। স্কুল ড্রেস ছিড়ে যাওয়ায় অন্যের পোশাক পড়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। ৫ম শ্রেণী থেকেই ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করলেও এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে মাফিকুল। সে হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানান।

নিশাত আক্তার ঐশী
নানা প্রতিকুলতার মধ্যে অভাবকে জয় করে চলতি বছর নাগেশ্বরী দয়াময়ী বহু-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে নিশাত আক্তার ঐশী জিপিএ-৫ পেয়ে আধার ঘর আলোকিত করেছে। পরিবারে অভাব অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। এর পরেও শত প্রতিকুলতা বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি তাদের মেধা বিকাশে। নিশাত জে,এস,সি পরীক্ষাতেও জিপিএি ৫ পেয়ে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখে। নিশাত আক্তার ঐশী ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়। কিন্তু এ স্বপ্ন পুরনের মাঝে দেয়াল দারিদ্র। তার বাবা আতাউর রহমান ২০০২ সাল থেকে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে গুরুত্বর অসুস্থ্য। ফলে চার জনের সংসারের ঘানি টানছেন মা শামসুন্নাহার বেগম। তাদের মানবেতর জীবন যাপন চোখে না দেখলে বিশ^াস করা কঠিন।  ২ বোনের মধ্যে নিশাত আক্তার ঐশী বড়। ছোট বোন ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ছে। দুচোখে অন্ধকার তার পরেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার দুর্বার সাহস নিয়ে সকলের কাছে সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেছে নিশাত আক্তার ঐশী।

স্বপ্না খাতুন
দরিদ্র মুদি দোকানদার শামসুল আলমের কন্যা স্বপ্না খাতুন চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে আধার ঘর আলোকিত করেছে। স্বপ্নার রোল নং ১৮৯৮৩১। পরিবারে অভাব অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। এর পরেও শত প্রতিকুলতা বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারেনি । স্বপ্না খাতুন পিএসসি ও  জে,এস,সি পরীক্ষাতেও জিপিএ ৫ পেয়ে শিক্ষকদের দৃষ্টিকারে। স্বপ্না খাতুন  ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু এ স্বপ্ন পুরনের মাঝে দেয়াল অর্থনৈতিক সংকট।
স্বপ্না খাতুন জানায়, তার বাবা শামসুল আলম মুদি দোকান করলেও  ২০০৬ সাল থেকে চোখে ঠিকমত দেখতে পায়না। টাকার অভাবে চিকিৎসাও হয়নি। ফলে মুদি দোকান দেখভাল করেন মা জুলেখা বেগম। ২ ভাই ২ বোনের মধ্যে স্বপ্না  দ্বিতীয়। বড় বোন শেফালী খাতুন কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে  অধ্যয়নরত। দুই ভাই ছোট। টিউশনি করে বড় বোন লেখাপড়া চালিয়ে নিচ্ছে। স্বপ্নার মনে এখন শংকার পাহাড়। তার এখন একটাই প্রশ্ন চিকিৎসক হবার স্বপ্ন পুরন হবে তো?

সামিউল ইসলাম সুমন
পিতাহারা সামিউল ইসলাম সুমন নানা প্রতিকুলতার মধ্যে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে আধার ঘর আলোকিত করেছে। তার রোল নং  ১৮৯৮৩৯। সামিউল ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়। সুমনের জন্মের আগে পিতা ইসমাইল হোসেন ২০০০ সালের ২৯ নভেম্বর নিজ বাড়িতে দুস্কৃতিদের হাতে নিহত হন। এরপর মা সুফিয়া বেগম স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানে জন্ম হয় সুমনের। ২ভাই ২ বোনের মধ্যে সামিউল ইসলাম সুমন সবার ছোট। বড় ভাই সুজন ইসলাম বগুড়া আজিজুল হক  বিশ্ববিদ্যালয়ে  অধ্যয়নরত। সামিউলের পিতার জমাজমি না থাকার কারনে তারা বর্তমানেও নানার বাড়িতে আশ্রিত। নিজেরা টিউশনি করে যা আয় করে আর অন্যের সহায়তায় কোন রকমে চলে সংসার। নুন আনতে পান্থা পুড়ার অবস্থা সংসারে ভবিষ্যৎ লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় সুমন।

মনসুর আলী
মনসুর আলী দারিদ্রতাকে জয় করে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। তার রোল নং  ১৮৯৮৪৬। পরিবারে অভাব অনটন নিত্যদিনের সঙ্গী। তার বাবা দিনমজুর আব্দুল মতিন অন্যের বাড়িতে শ্রম বিক্রি করে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। মনসুর আলী  পিএসসি ও  জে,এস,সি পরীক্ষাতেও জিপিএ ৫ পেয়ে আধার ঘরে আলো ছড়িয়েছে। মনসুর   ভবিষ্যতে প্রকৌশলী  হতে চায়। কিন্তু এ স্বপ্ন পুরনের মাঝে দেয়াল দরিদ্রতা। ২ ভাই ১ বোনের মধ্যে মনসুর দ্বিতীয়। মা মোহসীনা  বেগম  একজন গৃহিনী। বড় ভাই মোস্তফা মেধাবী হওয়া সত্বেও অভাবের কারনে লেখাপড়া ছেড়ে বাবার দিনমজুরের কাজে নিযুক্ত হয়েছে। মনসুর নিজেও বিদ্যালয়ের খরচ যোগাতে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে লেখা পড়ার খরচ জোগাড় করেছে। একমাত্র বাড়ির ভিটে ছাড়া কোন সম্পদ নেই। ফলে কাজ থাকলে পেটে ভাত, না হলে উপোস।

 

গো নিউজ২৪/রাব্বানি

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর
রমজান মাসের কোন কোন দিন প্রাইমারিসহ স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে

রমজান মাসের কোন কোন দিন প্রাইমারিসহ স্কুল-কলেজ খোলা থাকবে

‘শরীফার গল্প’ রেখেই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বইয়ে হবে সংশোধন

‘শরীফার গল্প’ রেখেই ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বইয়ে হবে সংশোধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপ-উপাচার্য হলেন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপ-উপাচার্য হলেন অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার

‍‍`শরিফ থেকে শরিফা‍‍` ইস্যুতে সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী

‍‍`শরিফ থেকে শরিফা‍‍` ইস্যুতে সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী

৫ জেলার স্কুল বন্ধ

৫ জেলার স্কুল বন্ধ

সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি কি বাতিল, যা জানা গেল

সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি কি বাতিল, যা জানা গেল