অারিফুর রাজু, হোম অব ক্রিকেট মিরপুর থেকে: ত্রিদেশীয় সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে ১৬৩ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। জয়ের দিনে দারুণ খেলেছেন তামিম-মুশফিক ও মাশরাফি। এটাই ইতিহাসে টাইগারদের সবচেয়ে বড় জয়।শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি ৬ষ্ঠ ওয়ানডে জয়।
টাইগারদের এমন সাফল্যমণ্ডিত জয়ের দিনে বেশ কয়েকটি ছোট-খাট ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে আলোচিত পাঁচটি ঘটনা গোনিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।
১. টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং: টস ভাগ্য ভালো নয় বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জার। তবে ত্রিদেশীয় সিরিজের নিজেদের দুটি ম্যাচেই টস জিতেছেন তিনি। প্রথমটি ফিল্ডিং নিলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং নেন।
অনেকে বলেছিলেন, নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিং নেয়া উচিত হবে মাশরাফির। কারণ হিসেবে উল্লেখ্য করেছিলেন ‘সিমিং’ উইকেট। তবে সব ভাবনার বিপরীতে সিদ্ধান্ত নিয়ে চমক দেখালেন অধিনায়ক। টস জিতে লুফে নিলেন ব্যাটিং।
২. তামিম-এনামুলের শুভ সূচনা: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় ধরনের স্কোরের সূচনাটা হয়েছে এনামুল হক বিজয়-তামিমের হাত ধরে। ম্যাচটিতে বিজয় ভুল শট খেলে কাটা না পড়লে নিশ্চত দুই ওপেনারের পার্টনারশীপটা ৭১ না হয়ে ১৪২ ও হতে পারত। যাই হোক, তা তো আর হয়নি। তবে বিজয়ের ৩৫ রানের ইনিংসটি ছিল দেখার মতো। এই ইনিংস খেলে রীতিমত শাহরিয়ার নাফিসের পাশে দাড়িয়েছেন তিনি। তা হল দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে দ্রুততম হাজারির ঘরে পৌঁছেছেন এই টাইগার ওপেনার।
৩. মিরপুরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস: হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরে-ই-বাংলায় ১০১তম ওয়ানডে ম্যাচ চলছে। ১০১তম ম্যাচে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এর আগে লঙ্কানদের বিপক্ষে বাংলাদেশর সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ২৬০ রানের। তবে আজ প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৩২০।
৪. এগারো (১১০০০) হাজারির ঘরে তামিম: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুক্রবারের ম্যাচটিতে ৮৪ রান করেছেন তামিম ইকবাল। সেঞ্চুরির দেখা না পেলেও নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। তা হল, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১১,০০০ রান করার গৌরব অর্জন করলেন তিনি। দুর্দান্ত রেকর্ড থেকে মাত্র ৭ রানে দূরে ছিলেন তামিম। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেখা মেলল সেই কাঙ্খিত অর্জন।
৫. একই মাঠে দ্বিতীয় সবোর্চ্চ তামিমের দখলে: ১১ হাজারির ক্লাবে পৌঁছানোর দিনে আরেকটি অর্জন যোগ হয়েছে তামিমের মুকুটে। তা হল একই ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহে ইনজামামকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছেন তিনি। ইনজামামের এক ভেন্যুতে করা ২,৪৬৪ রানের বিপরীতে তামিমের সংগ্রহ এখন ২,৪৭৩ রান। আর ৪২ রান করতে পারলেই শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়সুরিয়াকে ছাপিয়ে নির্দিষ্ট কোন ভেন্যুতে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক হবেন তামিম।
৬. হাজারির ক্লাবে সাব্বির-এনামুল: বাংলাদেশের জয়ে দিনে ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও অলরাউন্ডার সাব্বির রহমান দুইজনই হাজারির ক্লাবে প্রদার্পন করেছেন। হাজারির ক্লাব থেকে ১৫ রান দূরে ছিলেন সাব্বির রহমান। তবে লঙ্কানদের বিপক্ষে অপরাজিত ২৪ রানের ইনিংস খেলে তা পূর্ণ করেন। ইনিংসে একটি ছয় ও তিনটি বাউন্ডারি ছিল।
অন্যদিকে তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে ৩৫ রানের ইনিংস খেলার সুবাধে হাজারির ঘরে পৌঁছান বিজয়। বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম হাজার রান করার রেকর্ড এখন যৌথভাবে নাফিস-এনামুলের। আর তা সংগ্রহে দুইজনের লেগেছে ২৯ ইনিংস।
২০০৬ সালের ৩০ নভেম্বর খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শাহরিয়ার এই রেকর্ডটি গড়েন। তবে সময়ের হিসেবে বাংলাদেশের দ্রুততম হাজার রান সংগ্রহকারী অবশ্য এখনও বাহাঁতি শাহরিয়ারই। অভিষেক থেকে ১ বছর ১৬২ দিনে ছুঁয়েছিলেন ওয়ানডেতে হাজার রান ।
গোনিউজ২৪/এআর