রংপুর: এবারও শ্বশুরবাড়ি এলাকার রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনেই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আশা করছেন পরীগঞ্জের সাধারণ ভোটারসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা। শেখ হাসিনার জায়গায় তার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়কেও প্রার্থী হিসেবে পেতে চায়। এ নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে।
তবে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বিএনপির দলীয় ইউনিটি এ আসনে খানিকটা দুর্বল হলেও গেল কয়েক মাসে তারা অনেক সক্রিয় হয়েছে। ভোটের মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। গেল অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে শেখ হাসিনার পরাজয়কে দৃষ্টান্ত হিসেবে সামনে রেখে তারা মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
বিগত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শ্বশুরবাড়ি এলাকার এই আসনে শেখ হাসিনা জাতীয় পাটির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হলেও নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে পরপর এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এরপর থেকে আসনটি দখলে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ি এলাকার রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। শেখ হাসিনা আসনটি ছেড়ে দেয়ার পর উপ-নির্বাচনে শিরীন শারমিন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
সূত্রমতে, পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যানের চেয়ারে শুধু বিএনপির একজন প্রতিনিধি ছাড়া এখানে ধানের শীষের আর কাউকে চোখে পড়ে না। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে পৌরসভা পর্যন্ত সর্বত্রই আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদের জয়জয়কার। বিগত কয়েক বছরে এই জয়ের সঙ্গে যোগ হয়েছে শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত উন্নয়ন ও দৃশ্যমান অগ্রগতি। তাই শেখ হাসিনা বা নৌকার বিকল্প অন্য কাউকে দেখছেন না দলীয় নেতা-কর্মীরা।
আর ভোটাররা বলছেন, উন্নয়নই শেখ হাসিনার প্রধান অস্ত্র। কথা এবং কাজে শেখ হাসিনা ও তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় পীরগঞ্জকে নতুন করে সাজিয়েছেন। তাই রংপুরের এই আসনে শেখ হাসিনা এবং জয়কে ঘিরেই স্বপ্নে বিভোর পীরগঞ্জের মানুষ।
এদিকে, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির দলীয় কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়লেও ভোটের মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। তারা নেতাকর্মীদের কাছাকাছি যেতে চেষ্টা করছেন। বিগত বছরগুলোতে তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা কমানোর চেষ্টা করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিয়মিত কর্মীদের খোঁজখবর রাখছেন। দলের বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাদের দেখা মিলছে। এসব কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সহজেই এখানে জয় পাবে বলে মনে করছেন না অনেকেই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের জেলা সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুল ইসলাম এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মণ্ডল। অষ্টম সংসদ নির্বাচনে এই নূর মোহাম্মদ মণ্ডলের কাঁধে ছিলো এরশাদের লাঙল। আর তার কাছেই পরাজিত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তবে নবম সংসদ নির্বাচনে জাপা ছেড়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থী হয়ে হয়ে যান নূর মণ্ডল। এরপর শেখ হাসিনার কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
শেখ হাসিনার এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে নূরে আলম যাদু দলীয় চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সবুজ সংকেত পেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে চলছে নির্বাচনী পরিকল্পনা। নৌকাকে ঠেকাতে নানা ইস্যু নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সরকারের উন্নয়নকে আড়াল করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎতের মূল্যবৃদ্ধি, রামপাল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, হলমার্ক, ডেসটিনি, গ্রামীণ ব্যাংক কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন সময়ের জনদুর্ভোগ ও বিতর্কিত বিষয়গুলোকে ইস্যু হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টায় সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যেতে চাইছেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
গো নিউজ২৪/এন