শুভ নববর্ষ। জানালাম আগেই। কয়েক ঘন্টা পরেই নতুন বছর ২০১৯-এ পা দিবে সমগ্র বিশ্ব। রাত ১২টা ১ মিনিটেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ মেতে উঠেবে উৎসবে। পুরনো দিনের গ্লানি ভুলে নতুন বছরে নতুন করে বিশ্বকে দেখার, দেখানোর তাগিদ নিয়ে নতুন সূর্যকে আপন করে নিবে বিশ্ব। নতুন মানেই চির তরুন, নতুন মানেই এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন।
বাংলাদেশে ইংরেজি নতুন বছর মানেই শীতের কুয়াশাভেদ করে আসা নতুন সূর্যকে বরণ করে নেওয়া। উঠোনে বসে নতুন আসা নরম রোদকে সঙ্গী করে পিঠা উৎসবে মেতে উঠা।
বাংলাদেশে ইংরেজি নতুন বছর মানেই ঘর ভর্তি নতুন বইয়ের গন্ধ। নতুন ক্লাসে ওঠার আনন্দ। নতুন বইয়ের মলাট বাঁধার আনন্দ। আর নতুন করে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখা, এবার ভালো করবই।
ওপরে যা লিখলাম এমনটা প্রায় প্রত্যেকের স্বপ্ন। সবার সাথে আমিও। তবে একটু ব্যাতিক্রমী তো হতেই হবে। আর এ ব্যাতিক্রম সবার থেকে আলাদা হওয়ার জন্য নয়। আলাদা হওয়ার কারনটা সবারই জানা। ১,৪৭,৫৭০ কি.মি প্রিয় মাতৃভূমি অতিক্রম করছে কঠিন, চরম দুঃসময়, কণ্টাকাকীর্ণ এবং গৌরভের হাতে নয়; মাটির সাথে লেলিয়ে হাঁটছে ৩০ লক্ষ্য শহীদের রক্ত এবং বীরঙ্গনাদের ইজ্জতের বিনিময়ে কেনা বাংলাদেশের পতাকা। স্বাধীনতার পর থেকে কারো হাতেই পত পত করে উড়তে পরছে না ১০:৬ ইঞ্চির এই পতাকাটি! স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও স্বাধীনতার পূর্ণ সুখ টুকু পাচ্ছেন না রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারাও! আর আমরা তো যোজন-যোজন দূরের। আজ স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আমরা যারা তরুণ প্রজম্ম তারা জড়িয়েছি স্বাধীনতা নিয়ে দ্বন্ধে। চেতনার নামে চলছে দারুণ ব্যবসা। আজ কয়েক ভাগে বিভক্ত প্রিয় বাংলাদেশ। মতের অমিল হলে রাজাকার বলতে একটুও দ্বিধা করি না রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাকেও! কপালে অসহায়ত্বের হাত দিতে দেখেছি খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাকেও! নোংড়া রাজনীতির শিকার হয়ে নিজের গ্রামে যেতে পারছেন না শেখ মুজিবের দেয়া খেতাবে ভূষিত মুক্তিযোদ্ধাও।
তাই সব শেষে বলব, বন্ধ হোক চেতনার নামে এসব নোংড়ামি। শান্তির লক্ষ্যে এই হোক মোদের পণ। নতুন বছরটি যেন সমাজ জীবন থেকে, প্রতিটি মানুষের মন থেকে সকল গ্লানি, অনিশ্চয়তা, হিংসা, লোভ ও পাপ দূর করে। রাজনৈতিক হানাহানি থেমে গিয়ে আমাদের প্রিয় স্বদেশ যেন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারে। যথাপোযুক্ত সম্মান পাক রণাঙ্গনের বীর সেনারা। অপেক্ষায় রইলাম একটি নতুন বাংলাদেশের। আর সেটা যেন হয় নতুন বছরটাতেই।
লেখক : সাংবাদিক
গো নিউজ২৪/আই