ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নারী শিক্ষা নিয়ে আহমদ শফীর মন্তব্যে সরকারের প্রতিক্রিয়া কী?


গো নিউজ২৪ | নিউজ ডেস্ক: প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০১৯, ০৯:২৮ এএম
নারী শিক্ষা নিয়ে আহমদ শফীর মন্তব্যে সরকারের প্রতিক্রিয়া কী?

হেফাজত ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর মেয়েদের শিক্ষা প্রসঙ্গে এক মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক চলছে।  

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে শুক্রবার এক মাহফিলে মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে না দিতে এবং দিলেও সর্বোচ্চ ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়ানোর জন্য উপস্থিত মানুষের কাছে 'ওয়াদা' চান আহমদ শফী।

তার নেতৃত্বে এই দলটি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনাও দিয়েছে।

গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে যখন নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে, তখন সরকারের মিত্র হিসেবে পরিচিত এরকম একজন ধর্মীয় নেতৃত্বের এধরনের বক্তব্যে সরকারের প্রতিক্রিয়া কি?

শুক্রবার চট্টগ্রামের আল জামিআতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার বার্ষিক মাহফিলে সভাপতি ছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফী।

কয়েক হাজার মানুষের সেই মাহফিলে আহমদ শফী মেয়েদের চতুর্থ বা পঞ্চম শ্রেণির বেশি পড়াশোনা না করানোর জন্য উপস্থিত মানুষদের কাছে 'ওয়াদা' বা প্রতিশ্রুতি চান।

এখানে তিনি বলেন, ক্লাশ ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়া দরকার, কারণ বিয়ে দিলে স্বামীর টাকা পয়সা হিসেব করতে হবে, তাকে চিঠি লিখতে হবে।

পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের উল্লেখ করে আহমদ শফী আরো বলেন "আর বেশি যদি পড়ান, মেয়েকে ক্লাস এইট, নাইন, টেন, এমএ, বিএ পর্যন্ত পড়ালে ওই মেয়ে আপনার মেয়ে থাকবে না। অন্য কেহ নিয়ে যাবে। পত্রপত্রিকায় এ রকম ঘটনা আছে কিনা?"

এরপর তিনি মাহফিলে উপস্থিত ব্যক্তিদের কাছে ওয়াদা চান যেন তারা মেয়েদের বেশি দূর না পড়ায়।

বিষয়টি নিয়ে গতকাল থেকেই বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে ব্যপক আলোচনা শুরু হয়।

গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে নারী শিক্ষার ব্যপক প্রসার ঘটেছে। সরকারও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের পড়াশোনা অবৈতনিক করাসহ বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচির নিয়েছে।

অন্যদিকে, মাদ্রাসাতে মেয়েদের পড়ার হারও বাড়ছে। কওমী মাদ্রাসার সবচেয়ে বড় শিক্ষা বোর্ড বেফাকের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে এমনকি কওমী মাদ্রাসাতেও মেয়েরা পড়াশোনা করে এবং এ সংখ্যা বছর বছর বাড়ছে।

হেফাজতের ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মো: ফয়জুল্লাহ অবশ্য এর একটা ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, "আমি পরিষ্কারভাবে বলছি, বাংলাদেশে মেয়েরা যে পড়াশোনা করে আমরা তা নিষেধ করতে বলি নাই। আমরা বলেছি নারীদের যেন সম্মানহানি না ঘটে, তাদের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়।"

"আমরা মনে করি তাদের জন্য স্বতন্ত্র বিদ্যালয় থাকা উচিত। এই যে আমাদের দেশে একটা সহ-শিক্ষা ব্যবস্থা আছে...আমরা চাই মেয়েদের জন্য স্বতন্ত্র ব্যবস্থা থাকবে এবং তারা সেখানেই পড়াশোনা করবে।"

কয়েক বছর আগে মেয়েদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে এক মন্তব্যের কারণে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন আহমদ শফী। এক সময়ে সরকারের বিরোধিতা করলেও গত কয়েক বছরে কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠনটি সরকারের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

নভেম্বরে আহমদ শফির নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। এখন সরকারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত একজন ধর্মীয় নেতার এধরনের বক্তব্যে সরকারের প্রতিক্রিয়া কি?

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আহমদ শফীর বক্তব্য বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

"আইনের দিক থেকে এবং আমাদের প্রচলিত ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন একটা কথা বলেছেন উনি। আমাদের সংবিধান এবং আমাদের রাষ্ট্র নারী পুরুষ প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে এবং শিক্ষার অধিকার সবার আছে। কেউ যদি মনে করে নারীদের শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে, তাহলে সেটা অবশ্যই একটা অসাংবিধানিক মন্তব্য।"

হাসান চৌধুরী মনে করেন, আহমদ শফীর বক্তব্য কোনভাবেই নারী শিক্ষা বিষয়ে সরকারের নীতিকে প্রভাবিত করবে না। তিনি বিষয়টিকে স্রেফ একজন ব্যক্তির নিজস্ব মতামত হিসেবেই মূল্যায়ন করে তার দল।

গো নিউজ২৪/জাবু

সংবাদপত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর
ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

ব্যাংকে জমানো আমানত কমে যাচ্ছে

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

কারা হবে বিরোধী দল, লাঙ্গল না স্বতন্ত্র?

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বিভিন্ন ছাড়ে ব্যাংক খাতের আসল চিত্র আড়ালের সুযোগ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

পাসপোর্ট এনআইডিসহ ১৯ কাজের অতি প্রয়োজনীয় জন্মসনদ এখন ‘সোনার হরিণ’

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় যে ব্যাংক

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে

প্রশাসনের শীর্ষ পদে পদোন্নতিপ্রত্যাশীদের হতাশা বাড়ছে