ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমার বাইকে চড়তে আপনার আপত্তি নাই তো?’


গো নিউজ২৪ | নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০১৯, ০৭:৫২ পিএম
‘আমার বাইকে চড়তে আপনার আপত্তি নাই তো?’

Uber এ কল দিলাম, ওপাশে রাইডার ফোন ধরে প্রথমেই জিজ্ঞেস করল, 'ভাইয়া আমি মহিলা ড্রাইভার, আমার বাইকে চড়তে আপনার আপত্তি নাই তো?'

আমি যখন বললাম, আপত্তি থাকবে কেন! উনি বললেন, আমি আসছি ভাইয়া।

ভেসপা চালিয়ে রাইডার আসল। রাইড শুরুর পর তিনি জানালেন, অনেক প্যাসেঞ্জার কেবল মাত্র মেয়ে হবার কারণে তার বাইকে চড়ে না। আমাকে উনি আক্ষেপ করে জানাল, মাঝে মাঝে আমি ভাইয়া, অনেক দূর থেকে পিকআপ পয়েন্টে আসি, প্যাসেঞ্জার যখন দেখে আমি মেয়ে মানুষ, ওরা বলে, মেয়েদের বাইকে উঠব না, কেন্সেল করে দেন। আমি প্রতিবাদ করি না,, আমার লস হলেও কেন্সেল করে দেই। জোর করে তো কিছু হয় না, তাই না?'

উনি বললেন, ভাইয়া প্রতিদিন এমন অনেক অভিজ্ঞতা হয়, আগে মন খারাপ হতো, ভাবতাম, ছেড়ে দিবো,। কিন্তু আমাকে তো রোজগার করতে হবে, আমার দুইটা মেয়ে, ওর বাবা অন্য জায়গায় বিয়ে করেছে, মেয়েদেরকে আমাকেই পড়াশুনা করিয়ে মানুষ করতে হবে! মেয়েরা চাইলে পাঁচ মিনিটে হাজার টাকা কামাই করতে পারে, কিন্তু আমি ঐ লাইনে যাবো না, আমি সম্মানের সাথে রোজগার করি। আপনার মতো মানুষরা যখন আমাদের প্রশংসা করে, তখন খুব ভালো লাগে। মনে সাহস পাই।

জিজ্ঞেস করলাম, পুলিশ ট্র্যাফিক সার্জেন্ট ওরা কেমন ব্যবহার করে? উনি খুশি হয়ে বললেন, ওরা খুব ভালো। আমাকে পারলে স্যালুট দেয়। আমি রুলস ব্রেক করি না।

বড় মেয়ে ক্লাশ নাইনে পড়ে ছোটটা ক্লাশ ওয়ানে। আমাকে বলল, দোয়া করবেন, বড় মেয়েটা ইন্টারপাশ করে ভালো কোথাও চাকুরী পেলে আমি নিশ্চিন্ত। আজ বাসা থেকে বের হবার সময় বড় মেয়ে বলল, আম্মু আজ শুক্রবার, আজ বাসায় থাকো। আমি বাইক নিয়ে বের হইছি। বাজার তো করা লাগবে।

শাহনাজ আপার বাইকে চড়ে আমি ফিল করলাম, একটা মেয়েকে প্রতিদিন কতশত প্রশ্নবোধক চোখের সামনে জীবন চালাতে হয়। মোহাম্মদপুর থেকে টিএসসি, যতগুলো সিগন্যালে বাইক থামল, আশেপাশের মানুষজন অবাক চোখে আমাদের বাইকের দিকে চেয়ে রইল। কয়েকজনের চোখে কৌতুক, কয়েকজনের নাক সিটকানো ভাব। পুরুষতান্ত্রিক ইগো! মেয়ে ড্রাইভারের পিছনে ছেলে বসেছে!!

'মেয়েদের স্কুল কলেজে যেতে দেবেন না' বলে যারা আমাদের মেয়েদের দমিয়ে রাখতে চায়, তারা সমাজের জন্য কোনদিন শুভ মঙ্গল কিছু বয়ে আনেনি। খুশির কথা, শাহনাজরা ওইসব রক্তচক্ষুকে গোনাতেও ধরে না।

সমাজ পরিবর্তন ঘটে শাহনাজ আপার মতো তেজী মানুষের হাত ধরে।

#স্যালুট শাহনাজ আপা।

(লেখকের ফেসবুক স্ট্যাটাস)

গো নিউজ২৪/আই

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী