ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরী অভিনেত্রী থেকে যন্ত্র মানবী


গো নিউজ২৪ | বিনোদন প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০১৮, ০৪:২৬ পিএম আপডেট: জানুয়ারি ২০, ২০১৮, ১০:২৬ এএম
সুন্দরী অভিনেত্রী থেকে যন্ত্র মানবী

সম্প্রতি সারা বিশ্বে আলোড়ন  সৃষ্টিকারী সুন্দরী রোবট সুফিয়ার কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। প্রশ্ন জাগতে পারে, একটি রোবটের নামের আগে সুন্দরী শব্দটি কেন বসলো? কারণ রোবট সুফিয়াকে তৈরি করা হয়েছে শতাব্দির সেরা সুন্দরী নারী হলিউড অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন এর চেহারার আদলে। 

হলিউডের এই অনিন্দ্য সুন্দরী অভিনেত্রী ১৯৯৩ সালের ২০ জানুয়ারি পৃথিবীকে বিদায় জানালেও যন্ত্র মানবী রুপে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পুরো পৃথিবী, ছবি হয়ে ঝুলে আছেন বিউটি পার্লারে, ফ্যাশন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে,চলচ্চিত্রের রঙিন ভুবনে আর মানব দরদী হয়ে মানুষের মনে। আজ তাঁর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। চলুন, জেনে নেই ‘রোমান হলিডে’ খ্যাত এই বিশ্ব নন্দিত অভিনেত্রী সম্পর্কে কিছু তথ্য-

অড্রে হেপবার্ন এর প্রকৃত নাম অড্রে ক্যাথলিন রুস্টন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংরেজি নাম বিপজ্জনক ছিল বলে, নাম বদলে রাখেন এডা ভন হেমেস্ট্রা। পরবর্তীতে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করে অড্রে হেপবার্ন নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত হন।

১৯২৯ সালের ৪ মে বেলজিয়ামে জন্মগ্রহণ করেন অড্রে হেপবার্ন। বাবার চাকরি সূত্রে শৈশব কেটেছে বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসে।

বহু ভাষাবিদ ছিলেন হেপবার্ন। ইংরেজি, ডাচ, ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান, স্প্যানিশ ও জার্মান এই ছয়টি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।

১৯৫৩ সালে ‘রোমান হলিডে’ ছবির মাধ্যমে তাঁর চলচ্চিত্রে প্রবেশ।

ইতিহাসে অড্রে হেপবার্নই প্রথম অভিনেত্রী যিনি রোমান হলিডে ছবির জন্য অস্কার, গোল্ডেন গ্লোব ও বাফটা পুরস্কার জিতেন।

ফ্যাশন দুনিয়ার আইকন ছিলেন হেপবার্ন। ‘ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফানিস’ ছবিতে তাঁর পরা কালো পোশাক আর চুলের স্টাইল সারা বিশ্বে নারীদের মন জয় করেছিল। সেসময় মেয়ারা তাঁর মতো করে সাজতো। তাঁর ফ্যাশন এখনো অনুকরণীয়।

‘দ্যা নান’স স্টরি’ ছবিতে একজন খ্রিষ্টান সন্ন্যাসিনীর ভুমিকায় অভিনয় করেন হেপবার্ন। সমালোচকদের মতে এই চরিত্রটি তাঁর অভিনীত সেরা চরিত্র। কারণ সন্ন্যাসিনী হওয়ার কারণে বিভিন্ন অভিব্যাক্তি সতর্কতার সাথে অত্যন্ত নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

রোম্যান্টিক ও বিষয়ভিত্তিক ছবির পাশাপাশি কমেডি চরিত্রেও অনবদ্য ছিলেন হেপবার্ন। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘হাউ টু স্টিল এ মিলিয়ন’ ছবিতে কমেডি চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসিত হয়েছেন।

সর্বকালের সেরা অভিনেত্রীদের তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করে আছেন হেপবার্ন। ক্যাথরিন হেপবার্ন ও বেটি ডেভিস এর পরেই তাঁর অবস্থান।

একা থাকতে ভালবাসতেন হেপবার্ন। তারকা হয়েও সবার আলোচনার মধ্যমণি হয়ে থাকতে পছন্দ করতেন না অন্তর্মুখী এই অভিনেত্রী। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন,‘আমাকে প্রায়ই একা থাকতে হবে। আমি খুব খুশি হবো যদি শনিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত বাড়িতে একা থাকি। এভাবেই আমি উজ্জীবিত হই।‘

ব্যালে নৃত্য পছন্দ করতেন হেপবার্ন। ব্যালে নৃত্যশিল্পী হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন কিছুদিন। কিন্তু তাঁর দৈহিক উচ্চতা বেশি থাকায় শেখা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কারণ ব্যালে নৃত্যের জন্য সর্বোচ্চ উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। কিন্তু হেপবার্নের ছিল ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি।

ফুলের নামকরণ করা হয়েছে অড্রে হেপবার্নের নামে। টিউলিপ, গোলাপ ও লিলি এই তিনটি ফুলের নাম রাখা হয় তাঁর নামে। এছাড়া তিনিই সর্বপ্রথম অভিনেত্রী যাঁর নামে ১৯৫৯ সালে লাস ভেগাসে একটি সড়কের নাম রাখা হয়েছে।

মানব সেবায় নিযুক্ত ছিলেন এই অভিনেত্রী। জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদুত হয়ে বিভিন্ন দেশে শিশুদের জন্য কাজ করেছেন তিনি। তাঁর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নিউ ইয়র্কের ইউনিসেফ-এর সদর দপ্তরে একটি প্রতিমূর্তি স্থাপন করেছে জাতিসংঘ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একজন সেবিকা হিসেবে কাজ করেছিলেন অড্রে হেপবার্ন। সেসময় টরেন্স ইয়াং নামে এক আহত ব্রিটিশ সেনাকে সুস্থ করে তোলেন তিনি। পরবর্তীতে ওই সেনা চলচ্চিত্র পরিচালক হন। তাঁর পরিচালিত ‘ওয়েইট আন্টিল ডার্ক’ ছবিতে অভিনয়ও করেছিলেন হেপবার্ন।

মা হওয়ার জন্য পাঁচ বার গর্ভপাত ঘটান হেপবার্ন। তবুও তিনি হাল ছাড়েন নি। এ জন্য নিজের ক্যারিয়ার থেকে বিরতিও নেন তিনি। এরপর শান হেপবার্ন ফেরার ও লুকা ডটি নামে তাঁর দুটি পুত্র সন্তান হয়।

রবীন্দ্রনাথের কবিতার ভক্ত ছিলেন হেপবার্ন। কবিগুরুর ‘অনন্ত প্রেম’ যার ইংরেজি অনুবাদ ‘আনএন্ডিং লাভ’ ছিল তাঁর প্রিয় কবিতা। হেপবার্নের মৃত্যুতে তাঁর বন্ধু ‘রোমান হলিডে’ ছবির নায়ক গ্রেগরি পেক কান্নাভেজা চোখে কবিতাটি আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলেন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির জন্মদিনে ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ গানটি নিজ কণ্ঠে গেয়ে শুনিয়েছিলেন হেপবার্ন। ওই বছরই মারা যান কেনেডি। তাঁর মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন হেপবার্ন। সেসময় কেনেডির সঙ্গে হেপবার্নের প্রেমের গুজব উঠেছিল।

বাংলাদেশে এসেছিলেন হেপবার্ন। ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদুত হয়ে, এক সপ্তাহের সফরে এসেছিলেন এই অভিনেত্রী। ওই সফরে বাংলাদেশের রিকশাও চালিয়েছিলেন তিনি।

গো নিউজ২৪/জাবু

বিনোদন বিভাগের আরো খবর
বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী