ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পর্দার এই মানুষগুলোকে যেমন দেখেন তেমন না


গো নিউজ২৪ | বিনোদন প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০১৮, ০৫:০৬ পিএম আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০১৮, ১১:৩৭ এএম
পর্দার এই মানুষগুলোকে যেমন দেখেন তেমন না

মানুষ তার চলনে বলনে পর্দার নায়কদের অনুসরণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কেউ কি কখনো খলনায়ক হতে চেয়েছেন? এমনটা সাধারণত হয় না। কারণ একটাই, কে হতে চাইবে মন্দ মানুষ। অনেকে হয়তো ধরেই নেই, পর্দার নিকৃষ্ট এ মানুষগুলো বাস্তবেও হয়তো এমন। কিন্ত ‍না, পর্দার ভিতর বাহির বিস্তর ফারাক রয়েছে।

মিশা সওদাগর:
আশির দশকে নতুন মুখের সন্ধানে কার্যক্রমে নায়ক হয়ে আসেন মিশা সওদাগর। ছটকু আহমেদ পরিচালিত সিনেমাটির নাম ছিল ‘চেতনা’। পরে তমিজউদ্দিন রিজভীর পরিচালনায় ‘আশা ভালোবাসা’ ছবিতে সর্বপ্রথম খল চরিত্রে অভিনয় করেন। গত ১০ বছর খলচরিত্রে ছিল তার এক আধিপত্য।

পর্দায় খারাপ হলেও বাস্তবে এই মানুষটি বেশ সাদাসিদে। এ পর্যন্ত ৮৫০ এর বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সবসময় হাসিমুখে কথা বলতে পছন্দ করেন।

তার দুই দুই সন্তানের নাম ইয়োশি ও কোয়ারনি। মিশা সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করেন। ইন্ডাস্ট্রিতে তার খুব কাছের বন্ধু ওমর সানী। যদিও শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে দুই বন্ধুর সম্পর্কটা বেজায় খারাপ হয়েছে। তবুও তিনি এখনো ওমর সানীকেই ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে কাছের বন্ধু বলে মনে করেন।

কাজ না থাকলে বাইরে কখনো আড্ডা দেন না মিশা। তার স্ত্রীর নাম মিতা। মিশার আসল নাম শাহিদ হাসান। তবে কিভাবে আসলো মিশা নামটা? সেটা কি তার ডাক নাম? নাকি বন্ধুরা তাকে আদর করে ডাকতো মিশা বলে না, ঘটনাটা ভিন্ন। ১৯৯৩ সালে বিয়ের পিড়িতে বসেন শাহিদ হাসান। তার স্ত্রীর নাম মিতা।

স্ত্রীর নামের ‘মি’ আর শাহিদ নামের ‘শা’ দুয়ে মিলে আজকের মিশা। বিয়ের আগে হয়তো কেউই ভাবতেই পারেনি শাহিদ হাসান হয়ে যাবেন আজকের নম্বর ওয়ান খলনায়ক মিশা সওদাগর। চলচিত্রে অনেক সংসার ভাঙার কারিগর হলেও বাস্তব জীবনের অনেক সুখী মিশা ও তার পরিবার। প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন তাঁরা।

এটিএম শামসুজ্জামান:
পুরো নাম আবু তাহের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। ১৯৪১ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার ভোলাকোটের বড় বাড়ি। বতর্মানে ঢাকার সূত্রাপুরের দেবেন্দ্রনাথ দাশ লেনের ৪৬ নাম্বার বাড়িতে থাকেন। ম্যাট্রিক পাস করার পর ময়মনসিংহ সিটি কলেজিয়েট হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষে জগন্নাথ কলেজ ভর্তি হন।

পিতা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতিও করতেন। মাতা নুরুন্নেসা বেগম।

পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান সবার বড়। ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রথম কাজ শুরু করেন। এছাড়া প্রয়াত পরিচালক খান আতাউর রহমান, কাজী জহির, সুভাষ দত্তের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।

প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’র জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা। এ ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচিত্রে অভিষেক।এ পর্যন্ত শতাধিক ছবির চিত্রনাট্য ও কাহিনী লিখেছেন এটিএম শামসুজ্জামান।

বাস্তব জীবনে সব সময়ই সাদা পোশাক পরতে পছন্দ করেন এ মানুষটি। নিয়মিত নামাজ পড়েন। বেশি মানুষের সঙ্গে কথা না বলে নিভৃতে একা ঘরে অবসরে বই পড়তে ভালোবাসেন তিনি। সাদামাটা কিন্তু সততার সঙ্গে জীবন কাটাতে পছন্দ করেন এই অভিনেতা।

এটিএম শামসুজ্জামান অভিনয়ের জন্য স্বীকৃতি হিসেবে এ পর্যন্ত জাতীয় চলচিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচ বার। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক।ব্যক্তিগত জীবনে খুব একটা সুখে নেই তিনি। এক ছেলের খুনের দায়ে আরেক ছেলে জেলে। স্ত্রী গত হয়েছেন অনেক বছর হলো। 

আহমেদ শরীফ:
দেশীয় চলচিত্রে খলনায়ক চরিত্রে আহমেদ শরীফ এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী নাম। তার অভিনীত প্রথম ছবির নাম ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’ সুভাষ দত্ত পরিচালিত এ ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন আহমেদ শরীফ। তবে খলনায়ক হিসেবে ১৯৭৬ সালে তিনি প্রথম অভিনয় করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর পরিচালনায় ‘বন্দুক’ ছবিতে।

এ ছবিটি সুপারডুপার হিট হয়। এরপর এ পর্যন্ত প্রায় ৮শ’রও বেশি ছবিতে খল চরিত্রে অভিনয় করেছেন এ সুঅভিনেতা।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবসরে ক্রিকেট খেলা ও খবর দেখতে বেশি পছন্দ করেন। বই পড়াটাও তার নেশার মধ্যে রয়েছে। 
টেষ্ট ম্যাচও তার মিস যায় না। একটা সময়ে তিনি পাকিস্তানে ক্রিকেটার সাপোর্টার ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশের খেলা দেখতেই বেশি পছন্দ করেন। তিনি বলেন, ‘ তামিম ইকবালের খেলা আমার খুব পছন্দের। আর লেখকদের মধ্যে সমরেশ মজুমদার ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই পড়তে পছন্দ করি।’

স্ত্রী মেহরুন আহমেদ ও একমাত্র কন্যা আফিয়া মুবেশ্বীরাকে নিয়েই আহমেদ শরীফের পরিবার। একমাত্র মেয়ে আফিয়া ও লেভেল শেষ করে সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে ‘আমেরিকান ডিগ্রি ট্রান্সফার প্রোগ্রাম’ বিষয়ে দুবছরের পড়াশোনা শেষ করেছেন। স্ত্রী মেহরুন আহমেদ নরসিংদীতে আবদুল কাদের মোল্লা ইন্টা: স্কুলে (ইংরেজি মিডিয়াম) সংগীতের ক্লাস নেন। সেখানে আহমেদ শরীফও মাঝেমধ্যে ক্লাস নিয়ে থাকেন। বর্তমানে উত্তরার চার নম্বর সেক্টরে থাকেন। আর অবসরে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় সময় কাটাতে পছন্দ করেন।

সাদেক বাচ্চু:
গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। বর্তমানে ঢাকায় রাজারবাগের মোমেনবাগে থাকেন। স্ত্রী শাহানাজ জাহান। পরিবারে সাদেক বাচ্চুর দুই মেয়ে এক ছেলে।

মেয়েদের নাম মেহজাবিন ও নওশিন, ছেলের নাম সোহালিয়িন। সাদেক বাচ্চু বাংলা চলচিত্রের অন্যতম খল অভিনেতা। মঞ্চ ও টিভি নাটক থেকে চলচিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। ১৯৭৭-৭৮ সালে বিটিভির নিয়মিত শিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করেন এ অভিনেতা।

তিনি বলেন,‘ অভিনয় ছাড়া জীবনে কিছুই শিখি নাই। আর আমার পরিবারকে দেখতে গিয়েই আমি মূলত দেরিতে বিয়ে করেছি। অভিনয় করে বাড়ি গাড়ি কিছুই করতে পারিনি।’

বাস্তব জীবনে কাজ না থাকলে বই পড়তে পছন্দ করেন। কাজী নজরুল ইসলামের গ্রড এক্ষেত্রে বেশি টানে। তার লেখা ‘আমার কৈফিয়ত’ কবিতাটি তাঁর ভীষণ প্রিয়। শুটিং না থাকলে চিন্তা হয় পরিবারের। নামাজ পড়ে, বই পড়ে সময় কাটে তখন।

গো নিউজ২৪/জাবু

বিনোদন বিভাগের আরো খবর
বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

বুকটা ফেটে যায় কষ্টে: মাহিয়া মাহি

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে মরিয়া যেসব অভিনেত্রী

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

পরকীয়া এবং ফাঁদে পড়া নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

দেড় মাসে ওজন অনেকটা কমিয়ে ফেলেছেন শাবনূর

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

এই ফিটনেসে ভক্তদের খুশি করাতে পারবেন শাবনূর?

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী

কাজ নেই অথচ ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণ, এতো টাকা কোথায় পান এই অভিনেত্রী