ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজা আসলেন, পা রাখলেন না কোথাও


গো নিউজ২৪ | ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০১৭, ১০:৫৪ পিএম
রাজা আসলেন, পা রাখলেন না কোথাও

নায়করাজের মৃত্যুতে শোকাহত চলচ্চিত্র পরিবার। রাজ্জাকের মৃত্যুতে শোকাহত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। অভিনয় জীবনে অনেক শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছেন এই অভিনেতা। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক। সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন মহানায়ক রাজ্জাক।

সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, সন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

নায়ক নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুর খবর শুনে ইউনাইটেড হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন চলচ্চিত্র অঙ্গনের তারকারা। অভিনেতা আলমগীর, পিযুষ বন্দোপাধ্যায়, ফেরদৌস, ওমর সানি, জায়েদ খান, সায়মন, মৌসুমীকে ইউনাইটেড হাসপাতালে দেখা গিয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার সময় নায়করাজ পৌঁছান তাঁর কর্মক্ষেত্র বিএফডিসিতে। ততক্ষণে তেতে উঠেছে রোদ্দুর। আলিফ মেডিকেল সার্ভিসের শীতল গাড়ি নায়ককে নিয়ে গিয়ে থামে এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে। সেখানে প্রস্তুত মঞ্চ, শোকের কালো চাদরে ঢাকা। সেই মঞ্চে নামানো হয়নি নায়ককে। আজ তিনি পা রাখেননি কোথাও। মঞ্চে রাখা হয়েছে ফুল। শীতল গাড়িটি সামনে রেখেই জানাজায় দাঁড়িয়ে পড়েছেন চলচ্চিত্রের স্বজনেরা। অনেকের চোখেই জল।

শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগরকে দেখা যায় নায়করাজকে জানানো শ্রদ্ধার ফুলগুলো সরিয়ে সরিয়ে রাখছিলেন। জায়গা করে দিচ্ছিলেন অন্য ফুলগুলোর জন্য। সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান সারি বেঁধে নায়করাজকে একপলক দেখার জায়গা করে দিচ্ছিলেন সবাইকে। বড় পর্দার শত-শত মুখ তখন সেখানে, একটি মুখ এক পলক দেখার জন্য উন্মুখ।

এফডিসিতে পড়ানো হয় নায়করাজের জানাজার নামাজ। এই প্রিয় অভিনেতাকে শেষ বারের শ্রদ্ধা জানাতে এফডিসি প্রাঙ্গনে ছুটে আসেন সর্বস্তরের লোকজন। নায়করাজের জানাজার নামাজে উপস্থিত ছিলেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, খ্যাতিমান অভিনেত্রী শাবানা, অভিনেত্রী রজিনা, অভিনেত্রী ববিতা, বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, চিত্র নায়ক শাকিব খানসহ অন্যান্য শিল্পীরা।

এফডিসি থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় নায়করাজকে। সেখানে নায়কের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ ও বিশিষ্টজনরা।

আওয়ামী লীগের পক্ষে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। বিএনপির পক্ষে আসেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। শহীদ মিনারে সংগঠনগুলোর মধ্যে আসে বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, অভিনয় শিল্পী সংঘ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, এনটিভি, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ টেলিভিশন, ওয়ার্কার্স পার্টি, দৃষ্টিপাত নাট্য সংসদ, মুক্তধারা সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, বাউল একাডেমি ফাউন্ডেশন, যুব সমিতি, সুবচন নাট্য সংসদ, দনিয়া সাংস্কৃতিক জোট, ডিরেক্টরস গিল্ড, এনটিভি, দেশ টিভি, প্রজন্ম ৭১, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিসহ আরও বেশ কিছু সংগঠন।

বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্রে খুব কমই অভিনয় করছেন নায়করাজ রাজ্জাক। শুধু নায়ক হিসেবেই নয়, পরিচালক হিসেবেও বেশ সফল। ‘আয়না কাহিনী’ ছবিটি নির্মাণ করেন রাজ্জাক। নায়ক হিসেবে নায়করাজ প্রথম অভিনয় করেন জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ ছবিতে। এতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন সুচন্দা।

ষাটের দশকের মাঝের দিকে তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ষাটের দশকের বাকি বছরগুলোতে এবং সত্তরের দশকেও তাঁকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত। রাজ্জাক চলচ্চিত্র পরিচালনায়ও সফলতা অর্জন করেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র অনন্ত প্রেম ১৯৭৭ সালে মুক্তি পায়। তার পরিচালিত সর্বশেষ চলচ্চিত্র আয়না কাহিনী মুক্তি পায় ২০১৪ সালে। তিনি সব মিলিয়ে প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন।

১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সাথেই ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন রাজ্জাক। এর মধ্য দিয়েই তিনি অর্জন করেন নায়করাজ রাজ্জাক খেতাব। অর্জন করেন একাধিক সম্মাননা। এছাড়াও, রাজ্জাক জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন।

নায়করাজ রাজ্জাক প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ‘কি যে করি’ ছবিতে অভিনয় করে। পাঁচবার তিনি জাতীয় সম্মাননা পান। ২০১৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার পেয়েছেন

এক্সক্লুসিভ বিভাগের আরো খবর
যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বিয়ে করতে চান, তাদের যে বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকার

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

নিরাপদ বিনিয়োগের অপর নাম সঞ্চয়পত্র, কোনটি কিনতে কী কাগজপত্র লাগে

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

ঢাকা শহরে সব কাজই করেন মেয়র, এমপির কাজটা কী

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

নতুন আয়কর আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

দলিলের নকলসহ মূল দলিল পেতে আর ভোগান্তি থাকবে না

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী

ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতকারীদের আয়কর রিটার্ন নিয়ে যা জানা জরুরী