ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মুফতি হান্নানের কী ক্ষতি করেছিলেন শেখ হাসিনা?


গো নিউজ২৪ | পাপলু রহমান, নিউজরুম এডিটর প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০১৭, ০৬:১৬ পিএম আপডেট: আগস্ট ২১, ২০১৭, ১২:১৯ পিএম
মুফতি হান্নানের কী ক্ষতি করেছিলেন শেখ হাসিনা?

ঢাকা: বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে অন্তত ২১ বার। এর মধ্যে অন্তত ১৭ বারের হত্যা চেষ্টার পরিকল্পনাকারী ছিলেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান।

এই মুফতি হান্নানের জন্ম শেখ হাসিনা তথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ জেলা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।

আর শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তার নিজ এলাকা কোটালিপাড়াতেই হত্যার চেষ্টা করেন মুফতি হান্নান। ২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগের সমাবেশ ছিল। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সভার শুরুর আগেই মুফতির পরিকল্পনায় সমাবেশস্থলের কাছে শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখে জঙ্গিরা। যদিও সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা।

একই কায়দায় পর পর তিনবার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে মুফতি হান্নান। সর্বশেষ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আবারো আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা করা হয়।

প্রশ্ন উঠেছে, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ভাগ্যগুণে বেঁচে যাওয়া শেখ হাসিনাকে বার বার কেন হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাও যেসব হত্যার চেষ্টার পেছনে রয়েছেন তারই এলাকার মুফতি হান্নান?

বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশে অসম্প্রদায়িক চেতনার রাজনীতির ধারক-বাহক। প্রগতিশীলতা, অগ্রসর দৃষ্টিভঙ্গি, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের সম্মিলনে সমাজ কাঠামো বিনির্মাণ- এসবই আওয়ামী লীগের রাজনীতির উপাদান। তাই পরাধীনতা মেনে শুধু ধর্মের ভিত্তিতে এক সঙ্গে থাকার পরিকল্পনা পরিহার করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর এটাই ছিল ধর্মীয় ভিত্তিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী পাকিস্তানপন্থিদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন সেসব গোষ্ঠীর কাছে সবচেয়ে বড় শত্রু। সেই ধারাবাহিকতার কারণেই সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুকে।

রাজনীতিকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ কিংবা শেখ হাসিনার সঙ্গে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। যা আছে সেটা মতাদর্শগত বিরোধ। উদার, প্রগতিশীল ও অস্প্রদায়িক রাজনীতির ধারা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয় জঙ্গিদের কাছে।

অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির ধারক-বাহক ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রাজনীতির সূচনা করেছে জামায়াতে ইসলামী। পেছন থেকে এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত বিএনপি।

মুফতি হান্নান পাকিস্তানের মাদরাসায় ফিকাহ শাস্ত্র নিয়ে পড়ালেখা করেন। সেখান থেকে তিনি মুজাহিদ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে আফগানিস্তানে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে করেন। এরপর ১৯৯৩ সালে বিএনপি জামায়াতের শাসনামলে দেশে ফিরে পাকিস্তানভিত্তিক হরকাতুল মুজাহিদীনের হয়ে তৎপরতা শুরু করেন। অবশ্য তার আগেই আফগানফেরত এদেশীয় মুজাহিদরা হুজি-বি গঠন করেন।

১৯৯৪ সালে মুফতি হান্নান হুজি-বিতে যোগ দেন। সাংগঠনিক দক্ষতায় অল্প দিনের মধ্যে তিনি হুজি-বির অন্যতম শীর্ষ নেতৃত্বে চলে আসেন। হুজিতে থাকার পাশাপাশি মুফতি হান্নান হরকাতুল মুজাহিদীনের হয়েও কার্যক্রম চালাতেন।

রাজনীতিকদের মতে, বঙ্গবন্ধুকন্যাকে শেষ করে দিতে পারলেই এদেশে প্রতিক্রয়াশীলদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা সম্ভব। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা সহজ হবে। সেই পকিস্তানের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। ভবিষ্যতে জামায়াতের নিরঙ্কুশভাবে ক্ষমতায় আসার পথ পরিষ্কার হবে।

গোনিউজ/এন

রাজনীতি বিভাগের আরো খবর
রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিজার্ভ বাড়াতে এবার ডলার ধার করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

সংরক্ষিত নারী আসনে আ.লীগের টিকিট চান তারকা, মন্ত্রী-এমপিদের স্ত্রী, হিজড়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে নিয়ে যা যা করলো ছাত্রলীগ নেতারা

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

খালেদা জিয়া ও বিএনপির জন্য দারুণ সুখবর

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ইসলামী আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন

এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর এক টাকাও আমার হাতে আসে নাই : সুমন